২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ
কাতারে আয়োজিত দ্বাবিংশতম ফিফা বিশ্বকাপ / From Wikipedia, the free encyclopedia
২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ (আরবি: كَأسُ اَلعَالَمِ ٢٠٢٢, প্রতিবর্ণীকৃত: কা'সু আল আলামি ২০২২; উপসাগরীয় আরবি: كَاسُ اَلعَالَمِ ٢٠٢٢, প্রতিবর্ণী. কাসু আল আলামি ২০২২) হচ্ছে ফিফা দ্বারা আয়োজিত চতুর্বার্ষিক আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা ফিফা বিশ্বকাপের ২২তম আসরের চূড়ান্ত পর্ব, যেখানে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা ফিফার অন্তর্ভুক্ত ৩২টি জাতীয় ফুটবল দল (পুরুষ) প্রতিযোগিতা হয়েছে। এই আসরের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ আরব বিশ্বের কোন দেশে অনুষ্ঠিত হয়;[1] এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে ২০০২ ফিফা বিশ্বকাপের পর এটি এশিয়ায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ফিফা বিশ্বকাপ।[lower-alpha 1] এটি ৩২ দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত ফিফা বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসর; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় অনুষ্ঠিত ২০২৬ সালের আসর হতে ৪৮ দলের সমন্বয়ে ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। কাতারের তীব্র গ্রীষ্মকালীন উত্তাপের কারণে এই আসরটি ২০২২ সালের ২০শে নভেম্বর হতে ১৮ই ডিসেম্বর পর্যন্ত কাতারের ৫টি শহরের ৮টি মাঠে অনুষ্ঠিত হয় [2] যার ফলে এটি মে, জুন অথবা জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত না হওয়া এবং উত্তর শরৎকালে অনুষ্ঠিত প্রথম আসর হয়েছে এটি প্রায় ২৯ দিনের সময়সীমায় অনুষ্ঠিত হয়।[3] এই আসরে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে আল খুরের আল বাইত স্টেডিয়ামে কাতার এবং ইকুয়েডর মুখোমুখি হয়, এই ম্যাচে ইকুয়েডর জয়লাভ করে। অন্যদিকে, ২০২২ সালের ১৮ই ডিসেম্বর তারিখে কাতার জাতীয় দিবসে ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয় বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।
বিবরণ | |
---|---|
স্বাগতিক দেশ | কাতার |
তারিখ | ২০ নভেম্বর – ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ |
দল | ৩২ (৫টি কনফেডারেশন থেকে) |
মাঠ | ৮ (৫টি আয়োজক শহরে) |
চূড়ান্ত অবস্থান | |
চ্যাম্পিয়ন | আর্জেন্টিনা (৩য় শিরোপা) |
রানার-আপ | ফ্রান্স |
তৃতীয় স্থান | ক্রোয়েশিয়া |
চতুর্থ স্থান | মরক্কো |
পরিসংখ্যান | |
ম্যাচ | ৬৪ |
গোল সংখ্যা | ১৭২ (ম্যাচ প্রতি ২.৬৯টি) |
দর্শক সংখ্যা | ৩৪,০৪,২৫২ (ম্যাচ প্রতি ৫৩,১৯১ জন) |
শীর্ষ গোলদাতা | কিলিয়ান এমবাপে (৮টি গোল) |
সেরা খেলোয়াড় | লিওনেল মেসি |
সেরা যুব খেলোয়াড় | এনসো ফের্নান্দেস |
সেরা গোলরক্ষক | এমিলিয়ানো মার্তিনেস |
ফেয়ার প্লে পুরস্কার | ইংল্যান্ড |
← ২০১৮ ২০২৬ → |
২০১১ সালের মে মাসে, কাতারের এই আসরটি আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে ফিফার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। দুর্নীতির বিষয়ে ফিফার তদন্ত প্রতিবেদনে কাতারকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে তবে প্রধান তদন্তকারী মাইকেল জে গার্সিয়া তখন থেকে তার তদন্তের বিষয়ে ফিফার প্রতিবেদনে "অসংখ্য বস্তুগতভাবে অসম্পূর্ণ এবং ভুল উপস্থাপনা" র্যেছে বলে বর্ণনা করেছেন।[4] ২০১৫ সালের ২৭শে মে তারিখে, সুইস ফেডারেল অভিশংসকরা ২০১৮ ও ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ নিলাম প্রক্রিয়া বিষয়ে দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের তদন্ত শুরু করেছিলেন।[5][6] ২০১৮ সালের ৬ই আগস্ট তারিখে, ফিফার সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটার দাবি করেছিলেন যে কাতার "ব্ল্যাক অপস" ব্যবহার করেছে, যা ইঙ্গিত করে যে নিলাম প্রক্রিয়া কমিটি আয়োজন অধিকার অর্জনের জন্য প্রতারণা করেছে।[7] উপরন্তু, কাতার বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সাথে জড়িত বিদেশি কর্মীরা তাদের আচরণের কারণে কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল "জোরপূর্বক শ্রম"-এর কথা উল্লেখ করে বলেছে যে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং অসতর্ক ও অমানবিক কাজের অবস্থার কারণে শত শত অথবা হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছে;[8] এছাড়াও অনেক অভিবাসী শ্রমিককে চাকরি পাওয়ার জন্য অধিক পরিমাণ "নিয়োগ ফি" দিতে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।[9] দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি তদন্তে দাবি করা হয়েছে যে অনেক শ্রমিককে খাদ্য ও জল থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল, তাদের পরিচয়পত্র তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাদের সময়মতো অথবা একেবারেই বেতন দেওয়া হয়নি এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনকে কার্যত ক্রীতদাস করা হয়েছিল। দ্য গার্ডিয়ানের হিসাব অনুযায়ী, এই আসরটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় পর্যন্ত নিরাপত্তা ও অন্যান্য কারণে ৪,০০০ কর্মী মৃত্যুবরণ করেছে। ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, কাতারি সরকার এই আসরের কাজের অবস্থার উন্নতির জন্য নতুন শ্রম সংস্কার গ্রহণ করেছিল, যার মধ্যে সকল শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি এবং কাফালা ব্যবস্থা অপসারণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, গত কয়েক বছরে বিদেশি শ্রমিকদের বসবাস ও কাজের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।[10]
ফ্রান্স ফিফা বিশ্বকাপের পূর্ববর্তী আসরের চ্যাম্পিয়ন,[11][12] যারা ২০১৮ আসরের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছিল।[13]