সেকেন্ড
সময়ের একক / From Wikipedia, the free encyclopedia
সেকেন্ড (প্রতীক: s, সংক্ষেপে: sec) হল আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি (এসআই)তে সময়ের মূল একক, সাধারণভাবে এবং ঐতিহাসিক সংজ্ঞা হিসেবে এক দিনের ১⁄৮৬৪০০০ ভাগ – প্রথমে দিনকে ২৪ ঘণ্টায়, তারপরে ৬০ মিনিটে এবং অবশেষে ৬০ সেকেন্ডে ভাগ করে এই ভগ্নাংশটি আসে। সাধারণত অ্যানালগ ঘড়ি এবং হাতঘড়িতে ষাটটি ভাগ করা থাকে, যেগুলি সেকেন্ড (এবং মিনিট) উপস্থাপন করে, এবং একটি "সেকেন্ড হাত" সেকেন্ড সময়ের উত্তরণ চিহ্নিত করে। ডিজিটাল ঘড়ি এবং হাতঘড়িতে সাধারণত দুই-অঙ্কের সেকেন্ড গণক থাকে। সেকেন্ড এককটি পরিমাপের অন্যান্য কয়েকটি এককেরও একটি অংশ, যেমন গতিবেগ মাপার জন্য মিটার প্রতি সেকেন্ড, ত্বরণ মাপার জন্য মিটার প্রতি সেকেন্ড প্রতি সেকেন্ড, এবং কম্পাঙ্ক মাপার জন্য প্রতি সেকেন্ড একক। যদিও এককের ঐতিহাসিক সংজ্ঞাটি পৃথিবীর আবর্তনচক্রের বিভাগের ভিত্তিতে ছিল, আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতিতে (এসআই) আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা অনেক বেশি স্থির সময়মাপক: এটি সিজিয়াম কম্পাঙ্ক ∆νসিএস এর নির্দিষ্ট সংখ্যাসূচক মান গ্রহণ করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সিজিয়াম-১৩৩ পরমাণুর অবিচ্ছিন্ন গ্রাউন্ড স্টেটের (সর্বনিম্ন-শক্তি অবস্থা) উচ্চমাত্রায় সূক্ষ্ণ কাঠামোর কম্পাঙ্ক, এটির মান ৯,১৯২,৬৩১,৭৭০, যখন হার্জ এককে প্রকাশিত হয়, এটি s−১ এর সমান।[1][2] এর অর্থ, সোজা ভাষায়, শূন্য কেলভিন তাপমাত্রায় একটি অনুত্তেজিত সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর ৯,১৯২,৬৩১,৭৭০ টি স্পন্দন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে তাকে ১ সেকেন্ড বলে। পৃথিবীর আবর্তন পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এটি সামান্য ধীর হয়ে যাচ্ছে। তাই একটি লিপ সেকেন্ড পর্যায়ক্রমে ঘড়ির সময়ে যুক্ত হয়[টীকা 1], পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাথে ঘড়িকে তাল মিলিয়ে রাখার জন্য।
সেকেন্ডের গুণকগুলি সাধারণত ঘণ্টা এবং মিনিটে গণনা করা হয়। সেকেন্ডের ভগ্নাংশকে সাধারণত এক দশমাংশ বা এক শতাংশ গণনা করা হয়। বৈজ্ঞানিক কাজে, এক সেকেন্ডের ছোট ছোট ভগ্নাংশকে মিলিসেকেন্ড (হাজারতম), মাইক্রোসেকেন্ড (মিলিয়নতম), বা ন্যানোসেকেন্ডে (বিলিয়নতম) গণনা করা হয়, এবং কখনও কখনও এর থেকেও ছোট এককে মাপা হয়। এক সেকেন্ডের খুব ছোট ভগ্নাংশের উদাহরণ হল ১-গিগা হার্জ মাইক্রোপ্রসেসর, যার সময়কাল ১ ন্যানোসেকেন্ড। ক্যামেরার শাটার গতি প্রায়শই এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশে প্রকাশিত হয়, যেমন ১⁄৩০ সেকেন্ড বা ১⁄১০০০ সেকেন্ড।
জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ক্যালেন্ডার থেকে দিনের ষষ্ঠিক পদ্ধতিতে বিভাজন খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকেই চলত, যদিও সেগুলি আজ আমরা যে সেকেন্ড জানি তা ছিলনা। সময়ের ছোট ছোট বিভাগগুলি তখন মাপা যেতনা, সুতরাং এই জাতীয় বিভাগগুলি গাণিতিকভাবে করা হত। প্রথম যে ঘড়ি নির্ভুলভাবে সেকেন্ড গণনা করতে পারত সেটি ছিল ১৭ শতাব্দীতে উদ্ভাবিত দোলক ঘড়ি। ১৯৫০ এর দশকে শুরু করে, পারমাণবিক ঘড়ি গুলি পৃথিবীর আবর্তনের চেয়ে ভাল ঘড়ি হয়ে ওঠে, এবং তারা আজও সঠিক মান নির্ধারণ করে চলেছে। পল ডিরাক। কোয়ান্টাম মেকানিক্স।