শ্রীলঙ্কার ইতিহাস
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের বিভিন্ন দিক / From Wikipedia, the free encyclopedia
শ্রীলঙ্কার ইতিহাস বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের এবং দক্ষিণ এশীয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহের ইতিহাসের সাথে জড়িত। শ্রীলঙ্কা দ্বীপে আাদি মানবের (বালঙ্গোদা মানব) যে দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল তা প্রায় ৩৮,০০০ বছর পূর্বেকার।
পালি ভাষায় লেখা মহাবংশ, দীপবংশ ও চোলবংশ নামক তিনটি বইয়ের ধারাবিবরণী ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এই দ্বীপের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই বংশাবলী সমূহ হতে উত্তর ভারত থেকে সিংহলিদের আগমনের সময় থেকে ঐতিহাসিক বিবরণ পাওয়া যায়। দ্বীপটির আধুনিক ইতিহাস ৩য় শতাব্দীর সময়ে শুরু হয়েছে।[1][2][3][4] এই ধারাবিবরণীগুলোতে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সিংহলিদের আদি পূর্বপুরুষদের দ্বারা তাম্বাপান্নি রাজ্যের প্রতিষ্ঠার সময়কাল থেকে শ্রীলংকার ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে অনুরাধাপুর রাজ্যের রাজা পান্ডুকাভায়াকে শ্রীলঙ্কার প্রথম শাসক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে আরহাথ মাহিন্দা (ভারতীয় সম্রাট অশোকের পুত্র) দ্বীপটিতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তন করেন।
এই দ্বীপটি শুরুতে একীভূত থাকলেও পরের শতাব্দীতে বহু রাজ্যে বিভক্ত ছিল। তবে এটি চোল শাসনের অধীনে একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য (খ্রিস্টাব্দ ৯৯৭-১০৭৭ এর মধ্যে) আবার একত্রিত হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা অনুরাধাপুরা থেকে ক্যান্ডি সময়কাল পর্যন্ত ১৮১ জন সম্রাট দ্বারা শাসিত হয়েছিল।[5][অনির্ভরযোগ্য উৎস?] ১৫৯৭-১৬৫৮ সালে দ্বীপের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পর্তুগিজ শাসনের অধীনে ছিল। তবে আশি বছরের যুদ্ধে ডাচদের হস্তক্ষেপের কারণে পর্তুগিজরা সিলনে স্থাপিত উপনিবেশ হতে সরে যায়। কান্দিয়ান যুদ্ধের পর ১৮১৫ সালে দ্বীপটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে একত্রিত হয়। তবে ঔপনিবেশিক শাসন শুরু হওয়ার সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ১৮১৮ সালে উভা বিদ্রোহ এবং ১৮৪৮ সালে মাতালে বিদ্রোহ নামক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দুটি সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। অবশেষে ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করেছিল। তবে দেশটিতে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আধিপত্য ছিল।
সিরিমাভো বন্দরনায়েকের অধীনে সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬২ সালে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল। তবে সিরিমাভো সরকার সফলতার সাথে সে বিদ্রোহ দমন করে।
১৯৭২ সালে শ্রীলঙ্কা একটি প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা গ্রহণ করে। ১৯৭৮ সালে শ্রীলঙ্কা তার নিজস্ব সংবিধান প্রবর্তন করে। সংবিধান অনুসারে, নির্বাহী রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। সংবিধান প্রণয়নের পাঁচ বছর পর ১৯৮৩ সালে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তবে ১৯৭১ এবং ১৯৮৭ সালেও শ্রীলঙ্কায় দুটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে এলটিটিই এর পরাজয়ের মাধ্যমে ২৫ বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ শেষ হয়েছিল।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কায অস্বাভাবিক় মূল্যস্ফীতি ও শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণার ফলে আন্দোলন চলমান রয়েছে। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে এবং তার মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেও পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। [6][7] বর্তমানে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা বিরাজমান রয়েছে।