লিউকেমিয়া
এক ধরনের ক্যান্সার, যা অস্থিমজ্জায় তৈরি হয় / From Wikipedia, the free encyclopedia
লিউকেমিয়া বা লিউকিমিয়া রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যান্সার [8][2]। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর প্রধান লক্ষণ রক্তকণিকার, সাধারণত শ্বেত রক্তকণিকার অস্বাভাবিক সংখ্যাবৃদ্ধি। রোগটির নামই হয়েছে এর থেকে- লিউক~ অর্থাৎ সাদা, হিমো~ অর্থাৎ রক্ত। রক্তে ভ্রাম্যমাণ এই শ্বেত রক্ত কণিকাগুলি অপরিণত ও অকার্যকর। রক্ত উৎপাদনকারী অস্থিমজ্জার মধ্যে এদের সংখ্যাধিক্যের ফলে স্থানাভাবে স্বাভাবিক রক্তকণিকা উৎপাদন ব্যাহত হয়। তবে সব লিউকেমিয়াতেই যে শ্বেত কণিকার সংখ্যাধিক্যই দেখা যাবে তা নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে অ্যালিউকিমিয়া অর্থাৎ শ্বেত কণিকার স্বল্পতা বা সাব-লিউকিমিয়া অর্থাৎ প্রায় স্বাভাবিক সংখ্যার শ্বেত কণিকা দেখা যেতে পারে (যেমন "হেয়ারি সেল লিউকেমিয়া" নামের একটি লিউকেমিয়াতে বহুল ভাবে দেখা যায়)। কাজেই সংখ্যা দিয়ে নয়, রক্তকণিকার অস্বাভাবিকতার ফলেই এই রোগ হয়।
লিউকেমিয়া রক্তকণিকাসমূহ | |
---|---|
প্রতিশব্দ | Leukaemia |
বি-সেল তীব্র লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়াযুক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহিত রাইটের দাগযুক্ত অ্যাসপিরেট স্মিয়ার অস্থি মজ্জা। | |
উচ্চারণ | |
বিশেষত্ব | রক্তবিদ্যা ও ক্যান্সারবিজ্ঞান |
লক্ষণ | রক্তক্ষরণ, কালশিটে, ক্লান্তি অনুভব করা, জ্বর, সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি[2] |
রোগের সূত্রপাত | সকল বয়সের,[3] ৬০ ও ৭০ বছর বয়সীদের জন্য খুবই সাধারণ[4]। এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সার, তবে তাদের মধ্যে নিরাময়ের হারও বেশি। |
কারণ | বংশগত এবং পরিবেশগত কারণ[5] |
ঝুঁকির কারণ | ধূমপান, পারিবারিক সূত্র, আয়নকারী বিকিরণ, কিছু রাসায়নিক, পূর্ববৎ কেমোথেরাপি, ডাউন সিনড্রোম.[3][5] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | রক্ত পরীক্ষা, অস্থি মজ্জা বায়োপসি[2] |
চিকিৎসা | কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি,টার্গেটেড বা লক্ষ্যযুক্ত থেরাপি, হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল প্রতিস্থাপন, লক্ষণীয় চিকিৎসা[3] |
আরোগ্যসম্ভাবনা | পাঁচ-বছরের বেঁচে থাকার হার ৫৭% (ইউএসএ)[4] |
সংঘটনের হার | ২.৩ মিলিয়ন (২০১৫)[6] |
মৃতের সংখ্যা | ৩৫৩,৫০০ (২০১৫)[7] |
লিউকেমিয়ার প্রকৃত কারণ অজানা। বিভিন্ন লিউকেমিয়ার কারণ বিভিন্ন হতে পারে। বংশগত এবং পরিবেশগত উভয় কারণই এর সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পারে।[5] ঝুকির কারণের মধ্যে রয়েছে ধূমপান,তেজস্ক্রিয়তা,কিছু কেমিক্যাল যেমন বেনজিন ইত্যাদি। [5][3] যেসকল ব্যক্তির লিউকেমিয়ার পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে,তারাও উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।[3] লিউকেমিয়ার চারটি প্রধান প্রকারভেদ রয়েছে : অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (ALL), অ্যাকিউট মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (AML), ক্রনিক লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (CLL) এবং ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (CML)।[3][9] এটি নিওপ্লাজমের একটি অংশ।[10][11]
কেমোথেরাপি,তেজস্ক্রিয় থেরাপি,অস্থিমজ্জা স্থানান্তর ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। কিছু লিউকেমিয়া সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।[3] লিউকেমিয়ার ধরন এবং আক্রান্ত ব্যক্তির বয়সের উপর চিকিৎসার সাফল্য নির্ভর করে। যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ বছর বেঁচে থাকা রোগীর গড় ৫৭%। [4] লিউকেমিয়ার ধরনের উপর ১৫ বছরের নিচের বাচ্চাদের বেঁচে থাকার গড় ৬০-৮৫% এর বেশি। [12] যে সকল অ্যাকিউট লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি পাঁচ বছরের পর ক্যান্সার মুক্ত হয়েছেন,তাদের পুনরায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নেই। [12]
২০১২ সালে বিশ্বব্যাপী ৩,৫২,০০০ ব্যক্তি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২,৬৫,০০০।[9] শিশুদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে,যার মধ্যে তিন চতুর্থাংশের ALL হয়।[3] লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৯০% চিহ্নিত হোন যার মধ্যে AML এবং CLL প্রধান ।[3]