রোগ সংবহন
কোনও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বা দল থেকে রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুর অন্য কোনও ব্যক্তি বা দলের / From Wikipedia, the free encyclopedia
জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের আলোচনাতে রোগ সংবহন বা সংক্ষেপে সংবহন বলতে কোনও সংক্রামক রোগ (তথা রোগ-সৃষ্টিকারী জীবাণু) দ্বারা আক্রান্ত (পোষক) ব্যক্তি বা দলের দেহ থেকে অপর একটি ব্যক্তি বা দলের দেহে রোগটির (তথা জীবাণুটির) স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনাকে বোঝায়।[1] অপর ব্যক্তিটি প্রথমবারের মতো সংক্রমিত হতে পারে, কিংবা তার দেহে আগে থেকেই রোগটির সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে; উভয় ক্ষেত্রেই সংবহন সংঘটিত হয়েছে বলা হয়।
যেসব জীবাণু বা অণুজীব মানব পোষকের দেহকোষে বংশবিস্তার করে, তাদেরকে টিকে থাকার তাগিদে অবশ্যই এক মানুষ থেকে আরেক মানুষে সংবাহিত হতে হয়। সাধারণত সংক্রামক জীবাণু একটিমাত্র বিশেষ সংবহন পদ্ধতির জন্য নিজেকে বিশেষভাবে বিবর্তিত করে প্রস্তুত করে থাকে। যেমন শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণকারী ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া যদি তার পোষকের মধ্যে কাশি ও হাঁচির মতো লক্ষণ-উপসর্গগুলি সৃষ্টি করে, তাহলে তার পরবর্তী প্রজন্মের উদ্বর্তন বা টিকে থাকার সুবিধা অনেক বেশি থাকে, কেননা কাশি-হাঁচির মধ্যে এক মানব পোষক থেকে আরেক মানব পোষকের দেহে ঐ জীবাণুটি সংবাহিত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। একই কারণে পৌষ্টিকতন্ত্রের জীবাণুগুলি উদরাময় (পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া) রোগের সৃষ্টি করে, কেননা তাহলে তারা সহজেই পানি দ্বারা বাহিত হয়ে অন্য পোষকদেহে সংবাহিত হতে পারে।
জীবাণু তার পোষক মানবদেহের বাইরে কতটুকু সময় পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে, তা জীবাণুভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এ কারণে তাদের সংবহনের পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। বায়ু, অতিক্ষুদ্র ফোঁটা (ড্রপলেট), প্রত্যক্ষ দৈহিক সংস্পর্শ, পরোক্ষ দৈহিক সংস্পর্শ, মল-থেকে-মুখ, বাহক প্রাণী, অন্তর্বর্তী পোষক প্রাণী, পশু-থেকে-মানুষ, ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতিতে সংবহন সম্পন্ন হতে পারে।