রামপাল
পালবংশের অন্যতম একজন রাজা যিনি রামপালদেব নামেও পরিচিত। / From Wikipedia, the free encyclopedia
রামপাল দেব বাংলার পালবংশের (রাজত্বকাল ৭৫০-১১৫৪ খ্রিস্টাব্দ) পতনের কালে অন্যতম উল্লিখিত নাম; রামচরিতের বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় যে দ্বিতীয় শূরপালকে কোনও উপায়ে সংহার করে তিনি পৈত্রিক রাজ্যাধিকার প্রাপ্ত হয়েছিলেন।[3] রামপালের অভিষেক কালে পালরাজাদের রাজ্যপাট বোধহয় ভাগীরথী ও পদ্মার মধ্যবর্তী বদ্বীপে সীমাবদ্ধ হয়েছিল; কারণ রামপালকে কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা দিব্বোকের রাজ্য উত্তরবঙ্গ অধিকারের জন্য ভাগীরথীর উপরে নৌকামেলক বা নৌ-সেতুবন্ধন করতে হয়েছিল।[4] রামপাল,শূরপালের মৃত্যুর পর যখন গৌড়ের সিংহাসন অধিকার করেন তখন দিব্বোকের ভ্রাতুষ্পুত্র ভীম গৌড়ের মসনদে আসীন ছিলেন। দিব্বোকের পর অনুমান করা হয় তার ভ্রাতা রূদোক গৌড়ের অধিকার প্রাপ্ত হয়েছিলেন, পরে তাঁর পুত্র ভীম উত্তরাধিকার সূত্রে উত্তরবঙ্গের সিংহাসন আরোহণ করেছিলেন। [5]
সেইসময় রামপাল অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েছিলেন । তাঁর পুত্র রাজ্যপাল ও অন্যান্য আমাত্যগণ রাজ্যের বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন । এমনকী রামপাল কিছুদিনের জন্য ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন, তাঁর বনময় রাজ্যগুলির সামন্তগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন । ভ্রমণ শেষে রামপাল বুঝতে পারেন যে তাঁর ব্যবহারে আমাত্যগণ সন্তুষ্ট হয়েছেন তাই তিনি পদাতিক, অশ্ব ও গজারোহী সৈন্য সংগ্রহ করেন ; আর এর জন্য তাঁকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল।
রামপাল | |
---|---|
পাল সম্রাট | |
রাজত্ব | ১০৮২–১১২৪ |
পূর্বসূরি | শূরপাল দ্বিতীয় |
উত্তরসূরি | কুমারপাল |
দাম্পত্য সঙ্গী | মদন দেবী[1][2] |
বংশধর | কুমারপাল |
রাজবংশ | পাল সাম্রাজ্য |
পিতা | বিগ্রহপাল তৃতীয় |
তিন প্রকার সৈন্য সংগ্রহ করে রামপালদেবের মাতুল-পুত্র রাষ্ট্রকূট-বংশীয় শিবরাজদেব রামপালের আদেশে সেনা নিয়ে গঙ্গা পার হয়েছিলেন । মহাপ্রতিহার শিবরাজদেব কৈবর্ত রাজ্যে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রামগুলি আক্রমণ করলে কৈবর্ত নায়ক ভীমের প্রজাগণ বিপন্ন হয়ে পড়ে । শিবরাজ বরেন্দ্রী হতে ভীমের রক্ষকগণকে বিতাড়িত করেছিলেন । শিবরাজের এই বরেন্দ্রী অধিকার দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়নি, কেননা কিছুদিন পরেই আবার রামপালকে বহু সেনা নিয়ে বরেন্দ্রী আক্রমণ করতে হয়েছিল । বারেন্দ্র-অভিযানে মগধ ও পিঠীর অধিপতি ভীমযশঃ, কোটাটবীর বীরগুণ, দণ্ডভুক্তি-রাজ জয়সিংহ, দেবগ্রাম-প্রতিবদ্ধ বালবলভীর বিক্রমরাজ, অপরমন্দারের অধিপতি এবং আটবিক সামন্তচক্রের প্রধান লক্ষ্মীশূর, কুজবটীর শূরপাল, তৈলকম্পের রুদ্রশেখর, উচ্ছালের অধিপতি ময়গলসিংহ, ঢেক্করীয়-রাজ প্রতাপসিংহ , কৌশাম্বীপতি দ্বোরপবর্ধন প্রমুখ সামন্তগণ এবং রাজ্যপাল সহ রামপালের অন্যান্য পুত্রগণ পিতার সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা করেছিলেন ।[6]
বরেন্দ্র অঞ্চলে রামাবতী নগরে রামপালের রাজধানী স্থাপিত হয়।