বোয়িং ৭৭৭
From Wikipedia, the free encyclopedia
বোয়িং ৭৭৭ হল বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন কোম্পানির দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট, দূরপাল্লার, সুপরিসর বিমান। এটি পৃথিবীর সববৃহৎ দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমান যা প্রকারভেদে ৫২৩৫ নটিক্যাল মাইল থেকে ৯৩৮০ নটিক্যাল মাইল পাল্লার মধ্যে ৩১৪ থেকে ৪১১ জন পর্যন্ত যাত্রী বহন করতে সক্ষম। এই বিমানকে সচরাচর ট্রিপল সেভেন নামে ডাকা হয়।[2][3] বোয়িং ৭৭৭ এর ইঞ্জিন দুটি পৃথিবীর সমস্ত বিমানের ইঞ্জিনের চেয়ে বড়। এর প্রত্যেক ল্যান্ডিং গিয়ারে ছয়টি করে চাকা, গোলাকৃতি ফিউসেলাজ এবং কোনাকৃতির পেছনের লেজ রয়েছে। এই বিমানটির নকশা করার সময় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ আটটি বিমান পরিচালনা সংস্থার সাথে আলোচনা করা হয়েছিল এবং এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পুরাতন জামানার সুপরিসর বিমানগুলোকে প্রতিস্থাপিত করা। এই বিমানটিতেই সর্বপ্রথম ফ্লাই-বাই-ওয়্যার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটিই সর্বপ্রথম বিমান যা সম্পূর্নরুপে কম্পিউটারের সাহায্যে নকশা করা হয়েছে।
বোয়িং ৭৭৭ | |
---|---|
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-২০০ মডেলের বিমান | |
ভূমিকা | সুপরিসর জেট এয়ারলাইয়ার |
উৎস দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
নির্মাতা | বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন্স |
প্রথম উড্ডয়ন | জুন ১২, ১৯৯৪ |
প্রবর্তন | জুন ৭ ১৯৯৫, যুক্তরাষ্ট্র |
অবস্থা | পরিসেবায় নিয়োজিত |
মুখ্য ব্যবহারকারী | এমিরেটস এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এয়ার ফ্রান্স সিংগাপুর এয়ারলাইন্স |
ইউনিট খরচ | ৭৭৭-২০০ইআর: $২৫৮.৮ মিলিয়ন [1] ৭৭৭-২০০এলআর: $২৯১.২ মিলিয়ন[1] ৭৭৭-৩০০ইআর: $৩১৫ মিলিয়ন[1] ৭৭৭এফ: $২৯৫.৭ মিলিয়ন [1] |
বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি দুই ধরনের দৈর্ঘ্যের ফিউসেলাজের (মূল শরীর) নকশা করা হয়েছে। প্রাথমিক ৭৭৭-২০০ প্রকরনটির ১৯৯৫ সালে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয় অপরদিকে সম্প্রসারিত ফিউসেলাজের বিমান ৭৭৭-২০০ইআর এবং ৭৭৭-২০০ (পূর্বের প্রকরনের চেয়ে ১০.১ মিটার লম্বা) এর বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। দূরপাল্লার প্রকরন ৭৭৭-৩০০ইআর এবং ৭৭৭-২০০এলআর দুটি যথাক্রমে ২০০৪ এবং ২০০৬ সালে বাজারে আসে। এর আরেকটি মালবাহী প্রকরন ৭৭৭এফ ২০০৯ সালে কার্যক্রম শুরু করে। বোয়িং ৭৭৭-২০০ এবং ৭৭৭-২০০ইআর বিমানদুটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ দূরপাল্লার যা না থেমে অর্ধেক পৃথিবী ভ্রমণ করার রেকর্ড করেছে।
যুক্তরাষ্টের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স সর্বপ্রথম বোয়িং ৭৭৭ কে বাণিজ্যিক পরিসেবায় নিয়ে আসে ১৯৯৫ সালে। এর পর প্রায় ৬০ টি বড় বিমান পরিচালনাকারী সংস্থা বোয়িংকে সব ধরনের প্রকরনের ১৪৫২ টি বিমানের অর্ডার দেয় এবং ১৪৫২ টি হস্তান্তর করা হয়। মে ২০১৩ পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রকরন ছিল ৭৭৭-২০০ইআর যা আজ পর্যন্ত ৪২০ টি হস্তান্তর করা হয়। এই বিমানটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত বিমান হিসেবে আক্ষা দেওয়া হয়।[4]
বোয়িং ৭৭৭ এর জ্বালানী সাশ্রয়ীতার জন্য এটিই বোয়িং কোম্পানির সর্বাধিক বিক্রিত বিমান। এই বিমানটি বর্তমানে দূরপাল্লার সমস্ত পরিসেবায় ব্যবহৃত হতে শুরু হয়েছে এবং অনেক এয়ারলাইন্স কোম্পানিই তাদের অন্যান্য দূরপাল্লার সুপরিসর বিমানকে বাদ দিয়ে এই বিমানকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।