ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (ইংরেজি: FIFA Club World Cup) হচ্ছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা দ্বারা আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতা, যেখানে ৬টি কনফেডারেশনের পুরুষদের ফুটবল ক্লাবগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল ক্লাব পর্যায়ের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতাটি ২০০০ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হলেও ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একাধিক কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফিফার বিপণন অংশীদার আইএসএলের দেউলিয়া হওয়া।[1][2] তবে ২০০৫ সাল থেকে এটি প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই প্রতিযোগিতাটি ইতোমধ্যে ব্রাজিল, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরক্কো এবং কাতারের মতো দেশ আয়োজন করেছে।[3][4] এটি মূলত ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ নামে পরিচিত ছিল, অতঃপর ২০০৬ সালে আন্তঃমহাদেশীয় কাপের সাথে একত্রিত হয়ে বর্তমান নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।
আয়োজক | ফিফা |
---|---|
প্রতিষ্ঠিত | ২০০০; ২৪ বছর আগে (2000) |
অঞ্চল | আন্তর্জাতিক |
দলের সংখ্যা | ৭ (৬টি কনফেডারেশন থেকে) |
সম্পর্কিত প্রতিযোগিতা | ফিফা আন্তঃমহাদেশীয় কাপ |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | ম্যানচেস্টার সিটি (১ম শিরোপা) |
সবচেয়ে সফল দল | রিয়াল মাদ্রিদ (৫টি শিরোপা) |
টেলিভিশন সম্প্রচারক | সম্প্রচারকের তালিকা |
ওয়েবসাইট | www |
২০২৩ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ |
২০০০ সালে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম আসরটি ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং কোপা লিবের্তাদোরেসের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবদের মধ্যকার প্রতিযোগিতা আন্তঃমহাদেশীয় কাপের সাথে সমান্তরালে চলেছিল, যার প্রতিটি আসরের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ফিফা কর্তৃক স্বীকৃত। ২০০৫ সালে, আন্তঃমহাদেশীয় কাপ ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সাথে একীভূত করা হয়েছে এবং ২০০৬ সালে প্রতিযোগিতাটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নামে নামকরণ করা হয়েছে। ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা এবং একটি ফিফা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নস সনদ অর্জন করে।
এই প্রতিযোগিতার বর্তমান বিন্যাসে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে স্বাগতিক দেশের মধ্যে মাঠে সাতটি দল ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে; যেখানে উক্ত বছরের এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ (এশিয়া), ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ (আফ্রিকা), কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ (উত্তর আমেরিকা), কোপা লিবের্তাদোরেস (দক্ষিণ আমেরিকা), ওএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ (ওশেনিয়া) এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের (ইউরোপ) চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের পাশাপাশি স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব সরাসরি নকআউট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ওএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের বিরুদ্ধে প্লে-অফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, যেখানের বিজয়ী ক্লাব কোয়ার্টার-ফাইনালে এশিয়া, আফ্রিকা এবং উত্তর আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মুখোমুখি হয়। কোয়ার্টার-ফাইনালের বিজয়ী ক্লাব ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য সেমি-ফাইনালে ইউরোপীয় এবং দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মুখোমুখি হয়।
এপর্যন্ত এই প্রতিযোগিতাটি ১১টি ক্লাব জয়লাভ করেছে, যার মধ্যে ৪টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা টানা ৩টি শিরোপাসহ সর্বমোট ৫টি শিরোপা জয়ালাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক স্পেনীয় ক্লাব বার্সেলোনা, যারা এপর্যন্ত ৩ বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলীয় ক্লাব করিন্থিয়ান্স ও জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ, যারা এপর্যন্ত ২ বার করে শিরোপা জয়লাভ করেছে। এই প্রতিযোগিতায় স্পেনীয় ক্লাবগুলো সর্বাধিক ৮ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো (যারা এপর্যন্ত ৪ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে) এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো (যারা এপর্যন্ত ৪ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে)। ইংল্যান্ড এবং ব্রাজিল হতে সর্বাধিক ৩ বার ভিন্ন ভিন্ন ক্লাব এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়লাভ করেছে।
সর্বশেষ আসরটি ২০২৩ সালে সৌদি আরবে আয়োজন করা হয়েছে; জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লিউমিনেন্সকে ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছে।