প্রাকৃতিক নির্বাচন
From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোন প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো জনগোষ্ঠীতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এটি ডারউইনীয় বিবর্তনের অন্যতম চালিকাশক্তি।
যেকোন জনগোষ্ঠীতেই প্রাকৃতিকভাবে প্রকরণ উৎপন্ন হয়, এর ফলে কিছু কিছু প্রাণী টিকে থাকতে সমর্থ হয় ও প্রজননে অপেক্ষাকৃত বেশি সফল হয়। প্রজননগত সাফল্য নির্ধারণকারী উপাদানগুলোও গুরুত্বপূর্ণ, যা চার্লস ডারউইন বিস্তারিতভাবে তাঁর যৌন নির্বাচন তত্ত্বে ব্যাখ্যা করেছেন।
প্রাকৃতিক নির্বাচন মূলত বহির্বৈশিষ্ট্যর (ফেনোটাইপ) উপর কাজ করে কিন্তু বহির্বৈশিষ্ট্যর বংশাণুগত ভিত্তি, যা প্রজননগত সাফল্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, জনগোষ্ঠীতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে। (দেখুন: অ্যালিল কম্পাঙ্ক)। এভাবে ক্রমাগত অভিযোজনের ফলে প্রাণীরা তাদের আপন পরিবেশের (Ecological niche) জন্য বিশেষায়িত হতে হতে এক সময় নতুন প্রজাতিতে রুপান্তরিত হয়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন একটি প্রক্রিয়া (তবে একমাত্র প্রক্রিয়া নয়) যার মাধ্যমে একটি জনগোষ্ঠী হতে নতুন প্রজাতির উদয় ঘটে। এটি এমন এক ছাঁকনি যার ভেতর দিয়ে শুধু উপকারী প্রকরণগুলোই গমন করতে পারে। কৃত্রিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানুষই এই "ছাকনি"-র ভূমিকা পালন করে।
প্রাকৃতিক নির্বাচন আধুনিক জীববিজ্ঞানের অন্যতম ভিত্তি। ডারউইন প্রথম তার অন দি অরিজিন অফ স্পিসিস[1] গ্রন্থে এই শব্দটি প্রবর্তন করেন, যেখানে তিনি একে কৃত্রিম নির্বাচনের (যেই প্রক্রিয়ায় মানুষ তার পছন্দের বৈশিষ্ট্য ধারণকারী উদ্ভিদ ও প্রাণীকে বংশবৃদ্ধি করার জন্য নির্বাচন করে) সাথে তুলনা করেছেন। ডারউইনের এই তত্ত্ব প্রবর্তনের সময় বংশগতিবিদ্যা অজানা ছিল। ধ্রুপদী বংশগতিবিদ্যা আর আণবিক বংশগতিবিদ্যার সাথে ডারউইনীয় বিবর্তনের মিলনকে বিবর্তনের আধুনিক সংশ্লেষণ বলে। অভিযোজনমূলক বিবর্তনের প্রাথমিক ব্যাখ্যা এখনও প্রাকৃতিক নির্বাচন।