নাইট
From Wikipedia, the free encyclopedia
নাইট হলেন কোন শাসক বা দেশের জন্য তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে, বিশেষ করে সামরিক কাজের জন্য, সেই শাসক বা অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা কর্তৃক প্রদত্ত সম্মানসূচক উপাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। ঐতিহাসিকভাবে, ইউরোপে সাধারণত অশ্বারোহী যোদ্ধাদের নাইটহুডে ভূষিত করা হয়।[1] মধ্যযুগে নাইটহুড নিম্ন শ্রেণীর অভিজাত হিসেবে বিবেচিত ছিল। মধ্যযুগের শেষের দিকে, এই পদক্রমটি বীরত্বের সূচক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মূলত নাইট হলেন একজন সামন্ত, যিনি একজন অভিজাত ব্যক্তির যোদ্ধা হিসেবে তার রাজস্ব আদায় করে থাকেন।[2] অভিজাতগণ তাদের নাইটদের বিশ্বাস করতেন এবং তারা ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করায় পারদর্শী ছিল।
মধ্যযুগে ১২শ শতাব্দীতে এই উপাধি প্রদানের শুরু থেকে ১৫শ শতাব্দীতে ডিউচি ও বার্গান্ডি পর্যন্ত নাইটহুড মূলত ঘোড়সওয়ারদের সাথে সম্পর্কিত ছিল। এই যোগসূত্র বীরত্ব, অশ্বারোহী সৈনিক ও অন্যান্য সম্পর্কিত শব্দের সাথে জড়িত ছিল। অশ্বারোহী যোদ্ধাদের প্রদত্ত বিশেষ সম্মাননা মুসলিম বিশ্বে ফুরুসিয়া, গ্রিসে হিপেউস ও রোমে ইকুয়েস নামে পরিচিত ছিল।[3]
মধ্যযুগের শেষের দিকে, যুদ্ধবিগ্রহের নতুন কৌশল আবিষ্কার হলে বর্ম পরিহিত ধ্রুপদী নাইটদের উপযোগ কমতে থাকে, কিন্তু অনেক দেশে তাদের উপাধি রয়ে যায়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন খ্রিস্টীয় গির্জায় নাইটহুডের অনেক ক্রম রয়ে গেছে। কয়েকটি ঐতিহাসিকভাবে খ্রিস্টান দেশে এবং তাদের প্রাক্তন অঞ্চলসমূহে এই ক্রম দেখতে পাওয়া যায়, যেমন রোমান ক্যাথলিকদের অর্ডার অব দ্য হলি সেপালচার, প্রটেস্ট্যান্টদের অর্ডার অব সেন্ট জন, ইংরেজদের অর্ডার অব দ্য গার্টার, সুইডিশদের রয়্যাল অর্ডার অব দ্য সেরাফিম, এবং রয়্যাল নরওয়েজিয়ান অর্ডার অব সেন্ট ওলাভ। এই পদক্রমে ভূষিত হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের নিজস্ব মানদণ্ড রয়েছে, কিন্তু সাধারণত রাজ্যের প্রধান, শাসক বা প্রধান ধর্মযাজক মেধাসম্পন্ন কাজের অবদানের জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিকে নাইটহুড প্রদান করে থাকেন, যেমন ব্রিটিশ সম্মাননা পদ্ধতিতে গির্জা বা দেশের সেবার জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যে নাইটের সমকক্ষ নারী উপাধি হল ডেম।এছাড়াও বর্তমানে নাইট বা নাইটহুড একটি উপাধি। আমাদের দেশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মহান বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ব্রিটিশ সরকার দ্বারা নাইট উপাধিতে ভূষিত হন। পরে অবশ্য জালিওনাবাগের হত্যাকাণ্ডের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি ত্যাগ করেন।