চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার
From Wikipedia, the free encyclopedia
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (সুইডীয়: Nobelpriset i fysiologi eller medicin) নোবেল ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত, কারোলিন্সকা ইনস্টিটিউটে নোবেল পরিষদ দ্বারা প্রদত্ত, চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ঔষধক্ষেত্র অসামান্য আবিষ্কারের জন্য বছরে একবার ভূষিত করা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে এটি সর্বজনস্বীকৃত। ১৮৯৫ সালে ডায়নামাইটের আবিষ্কারক সুইডীয় রসায়নবিদ আলফ্রেদ নোবেল যে পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদানের ব্যাপারে দলিলে উল্লেখ করে গিয়েছিলেন তন্মধ্যে এটি একটি। নোবেল ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষামূলক চিকিৎসা বিজ্ঞানে আগ্রহী ছিলেন এবং পরীক্ষাগারেও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও অগ্রগতির জন্য একটি পুরস্কার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। নোবেল পুরস্কার ১০ ডিসেম্বর নোবেলের মৃত্যু বার্ষিকীতে বার্ষিক অনুষ্ঠানে একটি ডিপ্লোমা এবং একটি আর্থিক পুরস্কারের সার্টিফিকেটসহ প্রাপক/প্রাপকগণকে প্রদান করা হয়। প্রদত্ত মেডেলের সম্মুখ দিকে থাকে আলফ্রেদ নোবেলের খোদিত ছবি যা পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা সাহিত্যের জন্য প্রদত্ত মেডেলের মতই; তবে অন্য পাশটা আলাদা। সেই পাশে মেধাবী এক চিকিৎসকের প্রতিকৃতি দেখা যায়, যে নিজের কোলে রাখা একটি উন্মুক্ত বই ধরে আছে এবং একই সাথে পাথরের বুক চিড়ে প্রবহমান পানি দিয়ে একটি মেয়ের তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার | |
---|---|
বিবরণ | শরীরবিদ্যার উন্নয়ন অথবা ঔষধ আবিষ্কার, যা মানবজাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে |
অবস্থান | স্টকহোম শহুরে এলাকায় সোলনা |
দেশ | সুইডেন |
পুরস্কারদাতা | কারোলিন্সকা ইনস্টিটিউটে নোবেল পরিষদ |
প্রথম পুরস্কৃত | ১৯০১ |
ওয়েবসাইট | নোবেলপ্রাইজ.অর্গ |
২০১৯ সাল পর্যন্ত, ১১০টি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে ২০৭ জন পুরুষ ও ১২ জন নারীর মাঝে। ১৯০১ সালে জার্মান শারীরবিজ্ঞানী এমিল ফন বেরিংকে "সিরাম চিকিৎসা" বিষয়ে গবেষণা ও ডিপথেরিয়া রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা উদ্ভাবনের জন্য প্রথমবারের মতো চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রথম নারী হিসেবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান অস্ট্রীয়-হাঙ্গেরীয়-মার্কিন বিজ্ঞানী গের্টি কোরি; তিনি মধুমেহ বা ডায়াবেটিস চিকিৎসার ঔষধসহ অনেক দিক, গুরুত্বপূর্ণ গ্লুকোজ বিপাকে ব্যাখ্যার জন্য ১৯৪৭ সালে এ পুরস্কার পান।
কিছু পুরস্কার বিতর্কিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৪৯-এ আন্তোনিও এগাস মনিজের পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত, চিকিৎসা সংস্থা থেকে প্রতিবাদ সত্ত্বেও তিনি প্রিফন্টাল লিউকোটমির জন্য পুরস্কৃত হন। অন্যান্য বিতর্কের মধ্যে পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত নিয়ে মতবিরোধ একটি। ১৯৫২ সালের বিজয়ী সেলমান ওয়াক্সমানের নামে আদালতে মামলা করা হয় এবং অর্ধেক পেটেন্টের অধিকার তার সহ-আবিষ্কারক আলবার্ট শাৎসকে প্রদান করা হয়, যিনি নোবেল পুরস্কার দ্বারা স্বীকৃত ছিলেন না। ১৯৬২ সালের পুরস্কার বিজয়ী হলেন জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক ও মরিস উইলকিন্স, ডিএনএ গঠন এবং বৈশিষ্ট্যাবলীতে তাদের কাজের জন্য, যারা অন্যদের কাজের অবদান স্বীকার করেননি, বিশেষ করে অসওয়াল্ড আভারি ও রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন যারা মনোনয়ন সময় মৃত ছিলেন। নোবেল পুরস্কার নিয়মানুসারে মৃতদের মনোনয়ন নিষেধ, সেদিক থেকে আয়ুস্কাল একটি সম্পদ, যেহেতু আবিষ্কারের ৫০ বছর পরও পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও এক পুরস্কার সর্বোচ্চ তিন প্রাপকদের মধ্যে প্রদান করা যায়, এবং গত অর্ধ শতাব্দীর থেকে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দল হিসেবে কাজ করার একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতা আছে, ফলে এই নিয়মের দ্বারা বিতর্কিত বাদ দিতে হচ্ছে।