আফগানিস্তানে বৌদ্ধধর্ম
From Wikipedia, the free encyclopedia
বৌদ্ধধর্ম ছিল প্রাক-ইসলামি আফগানিস্তানের অন্যতম প্রধান ধর্ম। এই ধর্মটি হিন্দুকুশ পর্বতমালার দক্ষিণে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছিল। ৩০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিক সেলুকিড সাম্রাজ্য ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্যের সঙ্গে মিত্রতায় আবদ্ধ হয়। সেই সময়েই বৌদ্ধধর্ম প্রথম আফগানিস্তানে প্রচারিত হয়েছিল। অধুনা উত্তর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে গ্রিকো-ব্যাক্ট্রিয়ান রাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ২৫০-১২৫ অব্দ) ও ইন্দো-গ্রিক রাজ্যের (খ্রিস্টপূর্ব ১৮০-১০ অব্দ) অধীনে গ্রিকো-বৌদ্ধ শিল্পকলা বিকাশ লাভ করে। কুষাণ সাম্রাজ্যের অধীনে গ্রিকো-বৌদ্ধধর্ম সমৃদ্ধির শিখরে আরোহণ করে। এই সাম্রাজ্যের এর ব্যাক্ট্রিয়ান ভাষা লেখার জন্য গ্রিক হরফ ব্যবহার করত।
অসংখ্য বৌদ্ধ ভিক্ষুকে ধর্মপ্রচারে প্রেরণ করা হয়েছিল। জেন বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বোধিধর্ম চীনে গিয়েছিলেন। শাওলিন কুং ফুর কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠাতা লোকক্ষেম (১৭৮ খ্রিষ্টাব্দ) চীনের রাজধানী লোয়াং-এ যান। তিনিই প্রথম মহাযান বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন।[1] মহাবংশ (অধ্যায় ২৯) অনুসারে,[2] মহাধর্মরক্ষিত ৩০,০০০ বৌদ্ধ ভিক্ষুকে “গ্রিক আলাসান্দ্রার শহর” (ককেসাসের আলেকজান্দ্রিয়া, অধুনা আফগানিস্তানের কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে) শ্রীলঙ্কায় নিয়ে আসেন অণুরাধাপুরার মহাস্তুপ স্থাপনের জন্য। গ্রিকো-ব্যাক্ট্রিয়ান রাজা প্রথম মিনান্ডার (পালি: মিলিন্দ) (রাজত্বকাল খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫-১৩৫ অব্দ) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বৌদ্ধ। তিনি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ মিলিন্দ পঞহ-এ অমর হয়ে রয়েছেন।
খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে ইসলামের আবির্ভাবের পর এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের পতন শুরু হয়। খ্রিস্টীয় ১১শ শতাব্দীতে গজনবিদের রাজত্বকালে তা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়।[3]