প্রজাতন্ত্রী জনতা দল
তুরস্কের সামাজিক গণতন্ত্রী রাজনৈতিক দল / From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রজাতন্ত্রী জনতা দল (তুর্কি: Cumhuriyet Halk Partisi, উচ্চারিত [dʒumhuːɾiˈjet haɫk 'paɾtisi] (শুনুনⓘ), সংক্ষিপ্ত আকারে সিএইচপি [dʒeːheːpeˑ]) হলো তুরস্কের একটি কামালবাদী ও সামাজিক গনতন্ত্রী রাজনৈতিক দল, এটি বর্তমানে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছে।[11][7] আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই দলটি তুরস্কের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। দলটিকে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা দল হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।[12] সিএইচপি নিজেকে একটি "আধুনিক সামাজিক গনতন্ত্রী দল, যেটি তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা নীতি ও মূল্যবোধের প্রতি বিশ্বস্ত" হিসেবে বর্ণনা করে।[13][14] এর প্রতীকে ছয়টি তীর রয়েছে, যা কামালবাদের মৌলিক নীতিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে: প্রজাতন্ত্রবাদ, সংস্কারবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি, জনতাবাদ, জাতীয়তাবাদ ও পরিসংখ্যানবাদ। এটি মহান জাতীয় সভায় ১৩৫ জন সাংসদ নিয়ে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল ন্যায়বিচার ও উন্নয়ন দলের (একেপি) প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আছে।
প্রজাতন্ত্রী জনতা দল Cumhuriyet Halk Partisi | |
---|---|
সংক্ষেপে | সিএইচপি |
নেতা | কেমাল কিলিচদারোলু |
মহাসচিব | সেলিন সায়েক বোকে |
মুখপাত্র | ফাইক ওজট্রাক |
প্রতিষ্ঠাতা | মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক |
প্রতিষ্ঠা |
|
পূর্ববর্তী | ঐক্য ও প্রগতি সমিতি[1][2][3] আনাতোলিয়া ও রুমেলিয়ার অধিকার রক্ষা সংগঠন |
সদর দপ্তর | আনাতোলীয় বুলভার্ড নং: ১২, চাঙ্কায়া, আঙ্কারা |
ছাত্র শাখা | হালক-লিস (হালকচি লিসলিয়ার) |
যুব শাখা | সিএইচপি যুব |
মহিলা শাখা | সিএইচপি কাদিন কোল্লেরে |
এনজিও | আতাতুর্কীয় দর্শন সংগঠন (বেসরকারি) সোডেভ (বেসরকারি) |
সদস্যপদ (২০২২) | ১,৩৬৯,৪৩০[4] |
ভাবাদর্শ | |
রাজনৈতিক অবস্থান | মধ্যম-বামপন্থী[9] |
জাতীয় অধিভুক্তি | জাতীয় জোট |
ইউরোপীয় অধিভুক্তি | ইউরোপীয় সমাজতন্ত্রীদের পার্টি (সহযোগী) |
আন্তর্জাতিক অধিভুক্তি | প্রগতিশীল জোট[10] সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনাল |
আনুষ্ঠানিক রঙ | লাল |
স্লোগান | "প্রথমে জনতা, প্রথমে ঐক্য, প্রথমে তুরস্ক!" |
মহান জাতীয় সভা | ১৩৫ / ৬০০ |
মেট্রোপলিটন পৌরসভা | ১১ / ৩০ |
জেলা পৌরসভা | ২৪১ / ১,৩৫১ |
প্রাদেশিক কাউন্সিলর | ১৮৪ / ১,২৫১ |
পৌরসভা | ৪,৬৩৮ / ২০,৪৯৮ |
নির্বাচনী প্রতীক | |
ছয়টি তীর | |
দলীয় পতাকা | |
ওয়েবসাইট | |
en | |
তুরস্কের রাজনীতি |
তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে এই রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি। মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তারা ১৯১৯ সালের সিভাস মহাসভায় একত্রিত হয়। ৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৩-এ "জনতা দল" নিজেকে একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে ও ২৯ অক্টোবর ১৯২৩ তারিখে আতাতুর্ক এর প্রথম সভাপতি হিসেবে তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। ১৯২৪ সালে জনতা দল নিজের নাম পরিবর্তন করে "প্রজাতন্ত্রী জনতা দল" রাখে। তুরস্ক নিজের একদলীয় যুগের মধ্যে প্রবেশ করার সাথে সাথে সিএইচপি দেশে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের যন্ত্র হয়ে উঠে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আতাতুর্কের উত্তরসূরি ইসমত ইনোনু বহুদলীয় নির্বাচনের অনুমতি দেয়, দলটি ১৯৫০ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতার একটি শান্তিপূর্ণ স্থানান্তর শুরু করে, একদলীয় মেয়াদ শেষ করে ও তুরস্কের বহুদলীয় মেয়াদ শুরু করে। ১৯৬০ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পরের বছরগুলোয় দলটি ধীরে ধীরে মধ্যম-বামপন্থী প্রবণতা দেখছিলো, এটি ১৯৭২ সালে বুলেন্ত এজেভিত চেয়ারম্যান হওয়ার পরে পাকাপোক্ত করা হয়। ১৯৮০ সালে সামরিক জান্তা কর্তৃক সিএইচপিকে সেই সময়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। দেনিজ বায়কাল দ্বারা ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯২-এ সিএইচপির মূল নাম ও আরও কেন্দ্রবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ১৯৮০ পূর্বের সময়কাল থেকে এর বেশিরভাগ সদস্যের অংশগ্রহণে দলটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। কেমাল কিলিচদারোলু ২০১১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর দলটিকে এর ঐতিহ্যবাহী মধ্যম-বামপন্থী অবস্থানে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এটি ক্ষমতাসীন একেপি ও তাদের জনতা জোটের বিরুদ্ধে ইয়ি পার্টি, সাদেত পার্টি ও ডেমোক্র্যাট পার্টির মতো বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত[15] জাতীয় জোটের একটি প্রতিষ্ঠাতা দল।[16] এছাড়াও, সিএইচপি হলো ইউরোপীয় সমাজতন্ত্রীদের পার্টির (পিইএস) সহযোগী এবং সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনাল[17] ও প্রগতিশীল জোটের একটি সদস্য। সিএইচপির অনেক রাজনীতিবিদ এলজিবিটি অধিকার[18][19][20] ও তুরস্কের নারীবাদী আন্দোলনের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছেন। দলটি নিজের ইউরোপপন্থী নীতি ও ন্যাটোর প্রতি অঙ্গীকার অব্যাহত রেখেছে।
এই দলের ভিত্তির মধ্যে মধ্য ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণী যেমন বাবু শ্রমিক, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল, সরকারি আমলা, শিক্ষাবিদ, কলেজ শিক্ষার্থী, বামমুখী বুদ্ধিজীবী, আলেভি ও ডিসকের মতো শ্রমিক সংগঠনগুলো অন্তর্ভুক্ত।[21] দলটির শক্তিশালী ঘাঁটির মধ্যে রয়েছে পশ্চিম এজিয়ান অঞ্চল (ইজমির, আইদিন, মুউলা), থ্রেস, কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের পূর্বে (আরদাহান ও আর্টভিন), এবং আনাতোলীয় কলেজ শহর এস্কিশেহির।[22]