জিনেদিন জিদান
ফরাসি ফুটবল খেলোয়াড় / From Wikipedia, the free encyclopedia
জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান (ফরাসি উচ্চারণ: [zinedin jazid zidan], আরবি: زين الدين يزيد زيدان, ইংরেজি: Zinedine Zidane; জন্ম: ২৩ জুন ১৯৭২) হলেন একজন ফরাসি পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার। তিনি বর্তমানে স্পেনীয় পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় রিয়াল মাদ্রিদ, ইয়ুভেন্তুস, বর্দো এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি মূলত একজন আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে বাম-পার্শ্বীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি প্রায়ই সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে থাকেন।[5][6][7][8][9] জিদান একজন উচ্চস্তরের প্লেমেকার, যিনি তার খেলোয়াড়ি সৌন্দর্য, দূরদৃষ্টি, বল পাস, বল নিয়ন্ত্রণ ও কৌশলের জন্য প্রসিদ্ধ।[10][11] তিনি প্রথম আরব দেশ হিসেবে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ মঞ্চায়নে কাতারের সফল নিলামডাকের প্রতিনিধি ছিলেন।[12]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান[1][2] | |||||||||||||||||||
জন্ম | (1972-06-23) ২৩ জুন ১৯৭২ (বয়স ৫১)[3] | |||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | মার্সেই, ফ্রান্স | |||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৮৫ মি (৬ ফু ১ ইঞ্চি)[4] | |||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | |||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||
১৯৮১–১৯৮২ | ফোরেস্তা | |||||||||||||||||||
১৯৮২–১৯৮৩ | সেঁত-অঁরি | |||||||||||||||||||
১৯৮৩–১৯৮৬ | সেপ্তেমেস-লে-ভালোঁ | |||||||||||||||||||
১৯৮৬–১৯৮৯ | কান | |||||||||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | |||||||||||||||||
১৯৮৯–১৯৯২ | কান | ৬১ | (৬) | |||||||||||||||||
১৯৯২–১৯৯৬ | বর্দো | ১৩৯ | (২৮) | |||||||||||||||||
১৯৯৬–২০০১ | ইয়ুভেন্তুস | ১৫১ | (২৪) | |||||||||||||||||
২০০১–২০০৬ | রিয়াল মাদ্রিদ | ১৫৫ | (৩৭) | |||||||||||||||||
মোট | ৫০৬ | (৯৫) | ||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||
১৯৮৮–১৯৮৯ | ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৭ | ৪ | (১) | |||||||||||||||||
১৯৮৯–১৯৯০ | ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৮ | ৬ | (০) | |||||||||||||||||
১৯৯০–১৯৯৪ | ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-২১ | ২০ | (৩) | |||||||||||||||||
১৯৯৪–২০০৬ | ফ্রান্স | ১০৮ | (৩১) | |||||||||||||||||
পরিচালিত দল | ||||||||||||||||||||
২০১৪–২০১৬ | রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়া | |||||||||||||||||||
২০১৬–২০১৮ | রিয়াল মাদ্রিদ | |||||||||||||||||||
২০১৯–২০২১ | রিয়াল মাদ্রিদ | |||||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| ||||||||||||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
১৯৮১–৮২ মৌসুমে, ফরাসি ফুটবল ক্লাব ফোরেস্তার যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে জিদান ফুটবল জগতে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তীতে সেঁত-অঁরি, সেপ্তেমেস-লে-ভালোঁ এবং কানের হয়ে খেলার মাধ্যমে ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ১৯৮৯–৯০ মৌসুমে, কানের মূল দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেন। কানের হয়ে ৩ মৌসুম খেলার পর, তিনি বর্দোয় যোগদান করেন, যেখানে তিনি ৪ মৌসুমে ১৩৯ ম্যাচে ২৮টি গোল করেছেন। অতঃপর তিনি ৩.৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইতালীয় ক্লাব ইয়ুভেন্তুসে যোগদান করেন, যেখানে মার্চেল্লো লিপ্পির অধীনে তিনি ইয়ুভেন্তুসের হয়ে একটি উয়েফা সুপার কাপ শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ইয়ুভেন্তুসের হয়ে ৫ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ২০৯ ম্যাচে ৩১টি গোল করার পর, প্রায় ৭৭.৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করেন, যেখানে তিনি ১টি লা লিগা এবং ১টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়লাভ করেছেন।[13] রিয়াল মাদ্রিদে ৫ মৌসুম অতিবাহিত করার পর তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন।
৬ বছর যাবত ফ্রান্সের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, ১৯৯৪ সালে, জিদান ফ্রান্সের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন, যেখানে তিনি ১০৮ ম্যাচে ৩১টি গোল করেছেন। তিনি ফ্রান্সের হয়ে ৩টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৯৮, ২০০২ এবং ২০০৬) এবং ৩টি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (১৯৯৬, ২০০০ এবং ২০০৪) অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ১৯৯৮ সালে এমে জাকের অধীনে ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়লাভ করেছেন।
খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর ২০১৮ সালে, জিদান রিয়াল মাদ্রিদের রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়ার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে ম্যানেজার হিসেবে ফুটবল জগতে অভিষেক করেন।[14][15] রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়ায় ২ মৌসুমের জন্য ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার পর তিনি রিয়াল মাদ্রিদে ম্যানেজার হিসেবে পুনরায় ফিরে আসেন; রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ম্যানেজার হিসেবে ২ মৌসুমে তিনি ৯টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন।[16] রিয়াল মাদ্রিদের হয়েই ম্যানেজার হিসেবে তিনি সেরা সময় অতিবাহিত করেছেন, যেখানে তিনি প্রায় ৭০ শতাংশ ম্যাচ জয়লাভ করেছেন। তার এই সাফল্য ২০১৭ সালে তাকে দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল পুরস্কার জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।[17] ২০১৮ সালে ম্যানেজারের পদ ছেড়ে দেওয়ার পর,[18][19] ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তিনি দ্বিতীয় দফায় রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন।[20][21]
ব্যক্তিগতভাবে, জিদান বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ১৯৯৮ সালে বালোঁ দর এবং ২০০১–০২ মৌসুমে দোন বালোন পুরস্কার জয় অন্যতম।[22] এছাড়াও তিনি ফিফার প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ফিফা ১০০ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। দলগতভাবে, খেলোয়াড় হিসেবে জিদান সর্বমোট ১৫টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ১টি বর্দোর হয়ে, ৬টি আয়াক্সের হয়ে, ৬টি ইয়ুভেন্তুসের হয়ে, ৬টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং ২টি ফ্রান্সের হয়ে জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে, ম্যানেজার হিসেবে, তিনি ১১টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন; যার সবগুলো রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জয়লাভ করেছেন।