বাগর্থবিজ্ঞান
ভাষাতে অর্থ বিষয়ক গবেষণা / From Wikipedia, the free encyclopedia
বাগর্থবিজ্ঞান ([Semantics সেম্যান্টিক্স] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য)) ভাষাতে অর্থ বিষয়ক গবেষণা। একে শব্দার্থবিদ্যা, শব্দার্থতত্ত্ব, অর্থতত্ত্ব,অর্থবিজ্ঞান ইত্যাদি নামেও বাংলায় ডাকা হয়।
আপাতদৃষ্টিতে অর্থকে বেশ অস্পষ্ট, বিমূর্ত, ধরা-ছোঁয়ার বাইরের একটি বস্তু বলে মনে হতে পারে। তবে বাগর্থবিজ্ঞানীরা ভাষার ব্যবহার নিয়ে অত্যন্ত সচেতনভাবে চিন্তা করেন যাতে তাঁরা অর্থ সম্পর্কে কিছু নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন।
বাগর্থবিজ্ঞানীরা অর্থকে দুইটি প্রধান ভাগে ভাগ করেন: বাচ্যার্থ (বা আক্ষরিক অর্থ বা অভিধার্থ বা আভিধানিক অর্থ) এবং ব্যঞ্জনার্থ। বাচ্যার্থ বলতে কোনও ভাষার শব্দ বা বাক্যের সমতুল্য কোনও কিছুকে বোঝায়; অর্থাৎ এটি শব্দ বা বাক্যটির আভিধানিক অর্থ। অন্যদিকে ব্যঞ্জনার্থ বলতে কোনও বক্তা কোনও একটি ভাষাংশ ব্যবহারের মাধ্যমে আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছেন তাকে বোঝায়; বক্তার উদ্দিষ্ট অভিব্যক্তি-ই এখানে মুখ্য। একই বাক্য বা শব্দ ভিন্ন ভিন্ন বক্তা পরিস্থিতিভেদে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করতে পারেন। এমনকি কোনও কোনও বাক্যের বাচ্যার্থ বা আক্ষরিক অর্থ স্ববিরোধী বা অবাস্তব হলেও ঐ বাক্যগুলির মাধ্যমে বক্তা কোনও বিশেষ অনুভূতি অপরের কাছে প্রকাশ করতে পারেন।
বাগর্থবিজ্ঞানীরা রৌপ বিধিসম্মতভাবে ও প্রণালীবদ্ধভাবে এই ঘটনাগুলি ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেন। তাঁরা রসায়ন, ভূ-বিজ্ঞান ও অন্যান্য ভৌত বিজ্ঞানের মত ভাষার অর্থ সম্পর্কিত তত্ত্ব দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা অর্থ সম্পর্কে কতগুলি সুনির্দিষ্ট, পরস্পর-সম্পর্কিত ও সাশ্রয়ী সংজ্ঞা ও বিবৃতি গঠন করার চেষ্টা করেন, যেগুলি ভাষাতে অর্থ সম্পর্কিত বিপুল পরিমাণ বাস্তব তথ্য (fact) ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। দেখা গেছে, বিভিন্ন ভাষার অর্থ সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য বা ঘটনাবলির মধ্যে অনেক মিল আছে (অনেক অমিল-ও আছে, কিন্তু বাগর্থবিজ্ঞানীরা মিলগুলির প্রতিই আগ্রহী)। বাগর্থবিজ্ঞানীরা এই সাদৃশ্যগুলি বিবেচনা করে মানুষের বলা সব ভাষার জন্য প্রযোজ্য একটি সাধারণ অর্থ বিষয়ক তত্ত্ব নির্মাণের চেষ্টা করেন।
পাশ্চাত্যে প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক আরিস্তোত্ল ভাষাতে অর্থ নিয়ে প্রথম গবেষণা শুরু করেন, তবে তার পর বাগর্থবিজ্ঞানের অনেক উন্নতি ঘটেছে। বর্তমান বাগর্থবিজ্ঞানীরা প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান, সৃষ্টিশীল ব্যাকরণ, ইত্যাদি আধুনিক কলাকৌশলের সহায়তা নিয়ে থাকেন, যেগুলি আরিস্তোত্লের কাছে লভ্য ছিল না।