প্রতিপদার্থ
From Wikipedia, the free encyclopedia
কণা পদার্থবিজ্ঞানে প্রতিকণার ধারণা প্রতিপদার্থের ধারণা রুপ নিয়েছে। ধারণা করা হয়েছে যেভাবে কণা দ্বারা পদার্থ গঠিত হয় ঠিক তেমনিভাবে প্রতিকণা দ্বারা প্রতিপদার্থ গঠিত হয়। উদাহরণস্বরুপ, একটি প্রতিইলেকট্রন (পজিট্রন) এবং একটি প্রতিপ্রোটন মিলিত হয়ে গঠন করে একটি প্রতিহাইড্রোজেন পরমাণু, যেমন করে একটি ইলকট্রন ও প্রোটন মিলে তৈরি করে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু। উপরন্তু কণা এবং প্রতিকণা মিলিত হলে যেভাবে পূর্ণবিলয়ের মাধ্যমে সকল শক্তি বিমুক্ত হয়, তেমনি পদার্থ এবং প্রতিপদার্থের মিলনে পূর্ণবিলয়ের সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করা হয়েছে। এ ধরনের পূর্ণবিলয়ের ফলে প্রকৃতপক্ষে উচ্চ শক্তির ফোটন (গামা রশ্মি) এবং বহু কণা-প্রতিকণা জোড়ার সৃষ্টি হয়। এই পূর্ণবিলয়ে বিমুক্ত কণাগুলোর মধ্যে বিপুল পরিমাণ শক্তি থাকে। এই শক্তির মান পূর্ণবিলয়ের ফলে সৃষ্ট বস্তুসমূহের নিশ্চল ভর এবং মূল পদার্থ-প্রতিপদার্থ জোড়ার অন্তর্ভুক্ত বস্তুসমূহের নিশ্চল ভরের পার্থক্যের সমান।
সাধারণভাবে, প্রতিপদার্থ কনাদের তাদের নেগেটিভ বেরিয়ন সংখ্যা (Baryon Numbers) বা লেপটন সংখ্যা (Lepton Numbers) দিয়ে সংগায়িত করা যায়। যেখানে সাধারণ কনাগুলোর বেরিয়ন সংখ্যা পজিটিভ।
প্রতিকণাগুলো পরস্পর যুক্ত হয়ে প্রতিপদার্থ গঠন করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পজিট্রন ( ইলেকট্রন এর বিপরীত কনা) এবং অ্যান্টি-প্রোটন মিলে গঠন করে অ্যান্টি- হাইড্রোজেন পরমাণু। কিছু কিছু ঘটনা থেকে দেখা যায়, প্রতিপদার্থের পারমাণবিক কনা থাকা সম্ভব। অনেক অতিপরিচিত রাসায়নিক পদার্থের মৌলের পরমাণুর প্রতিপরমানু আছে বলে অনুমান করা হয়।
এই মহাবিশ্বে এখনো যতটুকু পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে, তাতে সাধারণ পদার্থই বেশি। কেন মহাবিশ্বে সাধারণ ও প্রতিপদার্থ এর মিশ্রণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় সে ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য গবেষণা হয়েছে। এই পদার্থ ও প্রতিপদার্থ এর অসামঞ্জস্যতা পদার্থবিদ্যার অন্যতম একটি সমস্যা যার সমাধান এখনো করা যায়নি। এই অসামঞ্জস্যতা যে উপায়ে তৈরি হয় তাকে বলে বেরিওজেনেসিস (Bariogenesis)। প্রতিপদার্থের কনাগুলো তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন। পার্টিকেল অ্যাকসেলেরাটর (Partical Accelaretor) এবং তেজস্ক্রিয় ভাঙ্গন থেকে একক(Single) প্রতিকনা তৈরি করা যায়। অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা অনেক প্রচেষ্টার পরে এন্টি-হিলিয়াম নিউক্লিয়াস তৈরি করতে পেরেছেন। এটাই এখনো পর্যন্ত তৈরি করা সব থেকে জটিল প্রতিকনা।