হুগো গ্রোশিয়াস
আন্তর্জাতিক আইনের প্রবক্তা / From Wikipedia, the free encyclopedia
হুগো গ্রোশিয়াস (১০ এপ্রিল ১৫৮৩ - ২৮ আগস্ট ১৬৪৫) ছিলেন ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্রের একজন আইনজ্ঞ। তিনি ফ্রান্সিসকো দে ভিতোরিয়া আর আলবার্তো জেন্তিলির সাথে মিলে প্রাকৃতিক আইনের উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।[1] তিনি ছিলেন একাধারে একজন দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, ইতিহাসবেত্তা, কূটনীতিবিদ, নাট্যকার ও কবি।
হুগো গ্রোশিয়াস | |
---|---|
জন্ম | ১০ এপ্রিল ১৫৮৩ ডেল্ফট, হল্যান্ড, ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্র |
মৃত্যু | ২৮ আগস্ট ১৬৪৫ রস্টক, সুইডিশ পোমেরানিয়া |
যুগ | সপ্তদশ শতকের দর্শন |
অঞ্চল | পাশ্চাত্য দর্শন |
ধারা | প্রাকৃতিক আইন, সামাজিক চুক্তি, মানবতাবাদ, স্কলাস্টিসিসম |
প্রধান আগ্রহ | যুদ্ধ দর্শন, আন্তর্জাতিক আইন, রাজনৈতিক দর্শন, ধর্মতত্ত্ব |
উল্লেখযোগ্য অবদান | প্রাকৃতিক অধিকার, ন্যায়ের যুদ্ধ ইত্যাদি |
ভাবগুরু | |
রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ৪২৬ খ্রিষ্টাব্দে। তারপর মধ্যযুগে ইউরোপের শাসনকার্য পরিচালিত হত ভ্যাটিকান থেকে। প্রাকৃতিক আইনকে মধ্যযুগে ধর্ম দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। বলা হয় যা কিছু ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত তাই আইন। একইভাবে রাষ্ট্র ও জাতিসমূহ কীভাবে আচরণ করবে তাও ঈশ্বর ঠিক করে দিয়েছেন। গ্রোশিয়াস এ ধারণা পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৬০৯ সালে তার প্রথম গ্রন্থে Mare Liberum বা "মুক্ত সমুদ্র" প্রকাশ করেন। সপ্তদশ শতকে ইউরোপে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র ছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন ও নেদারল্যান্ডস। মূল কারণ ছিল এসব রাষ্ট্র সমুদ্রপথে বাণিজ্য করার সুযোগ পায় এবং এদের প্রত্যেকের শক্তিশালী নৌবাহিনী ছিল। এ শক্তির বলে এরা সমুদ্রের বিশাল অংশ নিজ নিজ অধিকারে রয়েছে বলে দাবি করে। এ গ্রন্থে গ্রোশিয়াস দেখান যে সমুদ্র মানবজাতির জন্য উন্মুক্ত। প্রকৃতির এ ভাণ্ডারের উপর অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি এবং তা করতে হবে নির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে। তার এ প্রকৃতিবাদী মতবাদ ব্যাপক সাড়া ফেলে।
১৬২৫ সালে হুগো গ্রোশিয়াস তার বিখ্যাত গ্রন্থ ডি জুর বেল্লি আক পাসিস (যুদ্ধ ও শান্তির আইন) প্রকাশ করেন। এ গ্রন্থে তিনি বিশ্বশান্তির একটি রূপরেখা প্রকাশ করেন যা আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এ গ্রন্থে তিনি পরামর্শ দেন, রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তির উপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত।[2]
১৬৪৫ সালের আগস্টে তিনি সুইডিশ পোমেরানিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।