সমকামিতার ইতিহাস
ইতিহাসের বিভিন্ন দিক / From Wikipedia, the free encyclopedia
সমকামী সম্পর্ককে সময়ে সময়ে স্থানে স্থানে, সমাজ বিভিন্ন ভাবে মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন করেছে। কেউ কেউ ভেবেছে, সমকামিতাকে সমাজে স্বীকৃতি দিলে সমস্ত পুরুষই এই সম্পর্কে জড়িয়ে যাবে; যদিও এর চর্চাকে লঘু পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবুও সমাজের আইনি ব্যবস্থায় একে বাধা দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও আইনের মাধ্যমে এর চর্চাকারীদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। গুয়েন ব্রোউড ও সারাহ গ্রিন ১৯৭৬ সালের নৃকুলবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণায় সমাজে সমকামিতার অবস্থা তুলে ধরেছেন। তারা দেখেছেন, ৪২ টি সম্প্রদায়ের মধ্যে ৯ টি সমাজে সমকামিতাকে স্বীকৃতি অথবা উপেক্ষা করা হয়েছে। ৫ টি সম্প্রদায়ে সমকামিতা সম্বন্ধে কোনো ধারণাই নেই। ১১ টি সম্প্রদায় একে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে কিন্তু কোনো শাস্তির ব্যবস্থা করেনি এবং ১৭টি সম্প্রদায় সমকামিতার প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। ৭০টি সম্প্রদায়ের মধ্যে ৪১ টি সম্প্রদায়ে সমকামিতা অনুপস্থিত অথবা দুর্লভ এবং বাকি ২৯টি সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি দেখা যায় ও দুর্লভ নয়।[1][2] এর চর্চা প্রাচীন গ্রিসে অনেক বেশি দেখা যেত যদিও পরবর্তীতে আব্রাহামিক ধর্ম, আইন এবং চার্চ এর কারণে সংস্কৃতি প্রভাবিত হয়। চার্চ সমকামিতাকে প্রকৃতিবিরুদ্ধ অথবা ঐশ্বরিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিমত দিয়ে। একে রুখতে প্রতিষ্ঠা করে সডোমী আইন।
ইতিহাসের অনেক চরিত্র – যেমন সক্রেটিস, লর্ড বাইরন, দ্বিতীয় এডওয়ার্ড, হেড্রিয়ান[3] – এদের বেলায় সমকামী বা উভকামী বর্ণনাটা ব্যবহার করা হয়েছে। মাইকেল ফোকাল্ট এর মত কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সমাজের গঠনে তখন এই বিষয়টা সম্বন্ধে সুষ্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা না থাকায়, তাদের যৌন অভিমুখিতার ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে জানা যায় না।[4] যদিও অনেকে তার এ বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেছে।[5] সমাজতত্ত্ব গঠন সংক্রান্ত বর্তমান যুগের চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী প্রাচীন বা মধ্য যুগে কেউ সমকামিতাকে একটি একচেটিয়া, চিরস্থায়ী অথবা যৌনতার অর্থনিরুপক হিসেবে অনুভব করেন নি। জন বসওয়েল এটার বিপরীতে আবার প্লেটোর গ্রীক লেখার উদাহরণ তুলে ধরেছেন[6] যেখানে ব্যক্তিদের মাঝে স্বতন্ত্র সমকামিতার দৃষ্টান্ত রয়েছে।