শিল্প বিপ্লবের সময় পোশাক উৎপাদন
From Wikipedia, the free encyclopedia
শিল্পবিপ্লবকালীন ব্রিটেনে মূলত দক্ষিণ ল্যাঙ্কাশায়ার এবং পেন নদীর দুই তীরবর্তী শহরেই বস্ত্র উৎপাদনের কাজ সীমাবদ্ধ ছিল।আবার জার্মানিতে শিল্পবিপ্লবের সময় উপর উপত্যকা ,রূঢ় অঞ্চলেই এবং উত্তর সাইলেশিয়ায় বস্ত্র উৎপাদনের কেন্দ্রগুলো গড়ে উঠেছিল।আমেরিকার ক্ষেত্রে নিউ ইংল্যান্ড ছিল বস্ত্র উৎপাদনের ভরকেন্দ্র।বস্ত্র উৎপাদন, লৌহ উৎপাদন, বাষ্পীয় শক্তি এবং সস্তা শ্রমশক্তি-এই চারটিই ছিল শিল্প বিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি। অষ্টাদশ শতকের পূর্বে বুননকার্য ও বস্ত্র উৎপাদনে যুক্ত মানুষজন নিজেদের বাড়িতেই বস্ত্র তৈরী করতো। সেই বস্ত্র ঘোড়ায় টানা পণ্যবাহী ছোট ছোট শকটে ,কখনোবা নদী পথে আবার কখনো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলা খালপথে দেশের বিভিন্ন অংশের মধ্যেই চাহিদানুসারে বিক্রি করা হতো।অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে এই কাজে যুক্ত কারিগরেরা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করা শুরু করেন।রেশম, পশম বা ফুস্তিয়ান কাপড়ের চাহিদা কমে আসে সুতির কাপড়ের তুলনায়।এই শতকে তুঙ্গে ওঠে সুতিবস্ত্রের জনপ্রিয়তা। শিল্প ক্ষেত্রে উন্নতমানের ঢালাই লোহার প্রচলন বৃদ্ধি পাবার ফলে কাস্টিং এবং স্পিনিং মেশিনের মতো যুগান্তকারী আবিষ্কারের পথ প্রশস্ত হয় যা বস্ত্রশিল্পকে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করে। এই পথ ধরেই বস্ত্র উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সোপান সংযোজিত হয় স্পিনিং মিউল এবং ওয়াটার ফ্রেমের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।এইসময় যন্ত্রগুলি মূলত চালিত হতো বাষ্পীয় শক্তি পরিচালিত কারখানায়। কিন্তু চাহিদানুসারে এর কিছুদিনের মধ্যেই আরো উন্নতমানের অধিক শক্তিশালী চালিকাশক্তির প্রয়োজন হওয়াতে বাজারে এলো বাস্পীয়শক্তিচালিত স্টিম ইঞ্জিন এবং রোটেটিভ মিল ইঞ্জিন যার মাধ্যমে কর্মশালার প্রতি অংশে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদি পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট পাইপলাইনে পৌঁছে যেত প্রয়োজনীয় শক্তি। অতিরিক্ত শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজনে উদ্ভাবিত হলো আরো উন্নতমানের যন্ত্রচালিত তাঁত।শিল্প নগরী ম্যানচেস্টার এবং তত-সংলগ্ন শহরতলিতে অন্যান্য শিল্পের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল সুতি বস্ত্র-বাণিজ্যের বহর। পূর্বাপেক্ষা আরো বড় পরিসরে বস্ত্র উৎপাদন ও গুদামজাতকরনের জন্য প্রথাগত শৈলী ছেড়ে বাণিজ্যিক ধাঁচে শিল্প পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছিলো।ইয়র্কশায়ারের ওয়েস্টরিডিং অঞ্চলে পশমজাত বস্ত্রের উৎপাদনেও শুরু হয় প্রযুক্তির ব্যবহার।