শিল্পকলার শাখাসমূহ
মানুষের সৃষ্টিশীল ও নান্দনিক অভিব্যক্তি প্রকাশকারী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড / From Wikipedia, the free encyclopedia
এই নিবন্ধে প্রধান কিছু শিল্পকলার শাখা আলোচনা করা হয়েছে। শিল্পকলা বলতে বিশ্বের বিভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিদ্যমান বহুবিধ কিছু মানব কর্মকাণ্ডকে বোঝায়, যেগুলিতে দেখা, শোনা বা পড়ার যোগ্য কিংবা পরিবেশন করার মতো এমন বিশেষ কোনও কিছু (বস্তু, পরিবেশ বা অভিজ্ঞতা) সৃষ্টি করা হয়, যার মাধ্যমে সৃষ্টিকারীর কল্পনাশক্তি বা কারিগরি দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং দর্শক, শ্রোতা বা পাঠক বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ও বুদ্ধি দিয়ে মানসিকভাবে যার সৌন্দর্য ও আবেগ উদ্রেককারী ক্ষমতার তারিফ করে। শিল্পকলায় সৃষ্ট বস্তুকে শিল্পকর্ম বলে এবং যে ব্যক্তি শিল্পকলার চর্চা করে শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেন, তাকে শিল্পী বলে। কোনও মানব কর্মকাণ্ড ও তার সৃষ্টিকে শিল্প বলে গ্রহণ করা হবে কি না, তা প্রায়শই স্থান, কাল, সভ্যতা, সংস্কৃতি, সম্প্রদায় এমনকি ব্যক্তিগত সৌন্দর্যবোধ ও আবেগ-অনুভূতির উপরে নির্ভর করে। আবার স্থান, কাল, সংস্কৃতির সীমানা ছাড়িয়ে সিংহভাগ মানুষের সৌন্দর্যবোধ ও আবেগকে নাড়া দেয়, এমন শিল্পকর্মও রয়েছে। তবে বিংশ শতাব্দীতে এসে আবেগ ও সৌন্দর্যের চিরায়ত সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে সমসাময়িক শিল্পীসমাজ, শিল্পের সমালোচক ও বোদ্ধাসমাজ এবং শিল্পকর্ম ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা সমাদৃত যেকোনও কিছুকেই শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হতে পারে, যা সাধারণ জনগণের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে পারে। শিল্পকলামূলক কর্মকাণ্ডের পরিধি সতত পরিবর্তনশীল। নতুন প্রযুক্তি, নতুন উপাদান, নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতি, ইত্যাদি নতুন নতুন শিল্পকলার জন্ম দিচ্ছে।
শিল্পকলার প্রধান শাখাগুলি হল দৃশ্যকলা (যার প্রশাখাগুলির মধ্যে স্থাপত্য, মৃৎশিল্প, রেখাঙ্কন, চিত্রাঙ্কন, চলচ্চিত্র নির্মাণ, আলোকচিত্রকলা ও ভাস্কর্য অন্তর্ভুক্ত), শোভাবর্ধক কলা, ব্যবহারিক কলা, সাহিত্যকলা (যার প্রশাখাগুলির মধ্যে কল্পকাহিনী, নাটক, কবিতা ও গদ্য অন্তর্ভুক্ত) ও পরিবেশন কলা (যার প্রশাখাগুলির মধ্যে নৃত্য, সঙ্গীত, মঞ্চনাটক অন্তর্ভুক্ত)। এছাড়া রন্ধনকলাকেও শিল্পকলার একটি শাখা হিসেবে গণ্য করা যায় (যার মধ্যে রন্ধন, চকোলেট প্রস্তুতি, দ্রাক্ষাসুরা প্রস্তুতি, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত)। শিল্পকলার কিছু শাখা-প্রশাখায় দৃশ্যমান উপাদানের সাথে পরিবেশন (যেমন চলচ্চিত্রগ্রহণ) কিংবা অঙ্কনের সাথে লিখিত বিষয়বস্তুর (যেমন কমিক্স) সমন্বয় ঘটানো হয়। প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র থেকে আধুনিক যুগের চলচ্চিত্র পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই শিল্পকলা মানুষের সাথে তার পরিবেশের সম্পর্ককে গল্প বলার ছলে প্রকাশ করার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।