মার্শাল পরিকল্পনা
From Wikipedia, the free encyclopedia
মার্শাল পরিকল্পনা (প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় পুণর্গঠন প্রকল্প নামে পরিচিত, ইআরপি) ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে সহায়তা প্রদান করার একটি মার্কিন পরিকল্পনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় দেশগুলোর বিধ্বস্ত অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং এসব দেশে সোভিয়েত কমিউনিজমের বিস্তার রোধ করার লক্ষ্যে এ পরিকল্পনা অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র এসব দেশকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।[1] এ পরিকল্পনা ১৯৪৮ সালের এপ্রিল মাসে প্রণয়ন করা শুরু হয় এবং চার বছর যাবৎ পরিচালিত হয়।[2] যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলসমূহ পুনর্গঠন, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করা, শিল্পে আধুনিকায়ন এবং পুনরায় একটি সমৃদ্ধ ইউরোপ সৃষ্টি করা।[3] অর্থনীতিতে "মার্শাল পরিকল্পনার সমতূল্য" বলতে সাধারণত বড় ধরনের আপদকালীন আর্থিক সহায়তা বোঝানো হয়।[4]
এ পরিকল্পনাটি[5] যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র সচিব জর্জ মার্শালের নামানুসারে রাখা হয়। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত এক ভাষণে ইউরোপ পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।[3][6] রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দুই পক্ষ থেকে এ পরিকল্পনাটি সমর্থন লাভ করে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ এ পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করেন। এদের মধ্যে উইলিয়াম ক্লেটন ও জর্জ কেনান অন্যতম। সিনেটরদের মধ্যে আর্থার এইচ ভ্যান্ডারবার্গ এ প্রকল্প প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এ পুনর্গঠন পরিকল্পনাটি সর্বপ্রথম ৫ জুন ১৯৪৭ সালে ইউরোপীয় দেশসমূহের একটি সভায় উত্থাপিত হয়। এ পরিকল্পনায় সোভিয়েত ইউনিয়ন আর তার সহযোগী দেশগুলোকে কিছু সহায়তা করার প্রস্তাব রাখা হলেও তারা সে প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।[7][8] এ প্রস্তাবে অনুমোদন দিলে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপের একটা আশঙ্কা ছিল।[9] পরিকল্পনাটির চার বছর মেয়াদকালে সর্বমোট ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ইউরোপীয় দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ও কারিগরী সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়।[10] ১৯৫১ সালের শেষে সমন্বিত নিরাপত্তা পরিকল্পনার মাধ্যমে মার্শাল পরিকল্পনা প্রতিস্থাপিত হয়।[11]