ব্রাজিলের প্রথম পেদ্রো
ব্রাজিল এর সম্রাট এবং পরবর্তীতে পর্তুগালের রাজা / From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রথম ডোম পেদ্রো (ডাকনামঃ দ্য লিবোরেটর[1]; বাংলায়: মুক্তিদাতা) (১২ই অক্টোবর ১৭৯৮ - ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৮৩৪), ছিলেন ব্রাজিল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম শাসক। রাজা চতুর্থ ডোম পেদ্রোর মতে, তিনি পর্তুগালেও সমানভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, যেখানে তিনি দ্য লিবারেটর ও সাথে সাথে দ্য সোলজার কিং নামে পরিচিত হন। পেদ্রো লিসবনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পর্তুগালের রাজা ষষ্ঠ ডোম জুয়াও ও রানী চারলতা জ্যাকুইনার চতুর্থ সন্তান সতরাং তিনি ছিলেন হাউজ অফ ব্রাজানজানার একজন সদস্য। ১৮০৭ সালে তাদের রাষ্ট্র যখন ফরাসি বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়, তখন তিনি ও তার পরিবার পর্তুগালের সবচেয়ে বড় ও সমৃদ্ধ উপনিবেশ ব্রাজিলে চলে আসেন।
ব্রাজিলের প্রথম পেদ্রো পর্তুগালের চতুর্থ পেদ্রো | |||||
---|---|---|---|---|---|
ব্রাজিল সাম্রাজ্য | |||||
রাজত্ব | ১২ অক্টোবর, ১৮২২ – ৭ এপ্রিল, ১৮৩১ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১লা ডিসেম্বর, ১৮২২ | ||||
উত্তরসূরি | ব্রাজিলের দ্বিতীয় পেদ্রো | ||||
পর্তুগাল ও আলগার্ভিসের রাজা | |||||
রাজত্ব | ১০শে মার্চ ১৮২৬ – ২ মে ১৮২৬ | ||||
পূর্বসূরি | পর্তুগালের ষষ্ঠ জুয়াও | ||||
উত্তরসূরি | পর্তুগালের দ্বিতীয় মারিয়া | ||||
জন্ম | (১৭৯৮-১০-১২)১২ অক্টোবর ১৭৯৮ কুয়েলাজ প্রাসাদ, লিসবন | ||||
মৃত্যু | ২৪ সেপ্টেম্বর ১৮৩৪(1834-09-24) (বয়স ৩৫) কুয়েলাজ প্রাসাদ, লিসবন | ||||
সমাধি | ব্রাজিলের স্বাধীনতা মনুমেন্ট, সাঁউ পাউলু | ||||
দাম্পত্য সঙ্গী |
| ||||
বংশধর আরো... |
| ||||
| |||||
রাজবংশ | হাউজ অফ ব্রাগান্জা | ||||
পিতা | পর্তুগালের ষষ্ঠ জুয়াও | ||||
মাতা | সেপনের কার্লোতা জ্যাকুইনা | ||||
ধর্ম | রোমান ক্যাথোলিক | ||||
স্বাক্ষর |
১৮২০ সালে লিসবনে মুক্তির আন্দোলন শুরু হলে প্রথম পেদ্রোর পিতা পেদ্রোকে ব্রাজিল শাসনের দায়িত্ব দিয়ে এপ্রিল ১৮২১ সালে পর্তুগাল ফিরে আসতে বাধ্য হন। তিনি পর্তুগীজ সৈন্যদের দ্বারা বিপ্লবী ও অবাধ্যদের হুমকি দমনে সমর্থ হন। ১৮০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক স্বায়তশাসন উপভোগ করা ব্রাজিলকে পর্তুগীজ সরকার সুবিধাটি বাতিলের হুমকি দেওয়ার পর সেখানে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। প্রথম পেদ্রো ব্রাজিলকে সমর্থন করেন ও ৭ই সেপ্টেম্বর ১৮২২ সালে পর্তুগীজ শাসন থেকে ব্রাজিলকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেন। ১২ অক্টোবর তিনি ব্রাজিল সাম্রাজ্যে অধিষ্ঠিত হন ও পর্তুগীজদের অধীন সকল সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন। কয়েক মাস পরে, পেড্রো আমি নিরক্ষীয় আকালিক কনফেডারেশনের, ব্রাজিল এর উত্তর প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহের একটি ব্যর্থ প্রয়াস ব্যর্থ করে দেন।
১৮২৫ সালের শুরর দিকে দক্ষিণের প্রদেশ কিসপ্লাতিয়ানার বিদ্রোহ, ইউনাইটেড প্রোভিনেন্সের রিও দে লা প্লাতার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহ ব্রাজিল সাম্রাজ্যকে কিসপ্লাতিন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়। পেদ্রো তার বড় কন্যা দ্বিতীয় দোনা মারিয়া কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পূর্বে ১৮২৬ সালের মার্চে পর্তুগালের রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। ১৮২৮ সালে পরিস্থিতি আরো গুরুতর আকার ধারণ করে যখন দক্ষিণের যদ্ধে ব্রাজিল কিসপ্লাতিনা শহরটি হারন। একই বছর লিসবনে, তার ছোট ভাই যুবরাজ ডোম মিগুয়েল, মারিয়ার কাছ থেকে সিংহাসন আয়োত্ত করেন। এছাড়া একজন মহিলা আইনজীবীর সাথে সম্রাটের যৌন সম্পর্কের কেলেংকারির জন্য তার ভাবমূর্তি আরো ক্ষুণ্ণ হয়। এছাড়া ১৮২৬ সাল থেকে ১৮৩১ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের সংসদে এই বিতর্ক চলতে থাকে যে, সরকার রাজাদের কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন নাকি রাজনীতিবিদদের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। ব্রাজিল ও পর্তুগাল উভয় দেশেই একসাথে সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় ও তা সমাধান করতে না পেরে ৭ই এপ্রিল ১৮৩১ সালে পেদ্রো তার ছেলে দ্বিতীয় ডোম পেদ্রোকে ক্ষমতায় বসিয়ে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
১৮৩২ সালের জুলাইয়ে পেদ্রো একটি সেনাবাহিনী নিয়ে পর্তুগাল আক্রমণ করেন। মুখমুখি এই জাতীয় গৃহযুদ্ধটির জন্য তিনি পুনরায় বৃহত্তর সংঘাতে জড়িয়ে পরেন। এর ফলে যারা মুক্তবাদ দাবি করছেন ও স্বৈরতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবি করছেন তাদের মধ্যে আইবেরিয়ান উপদ্বীপে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। যখন পেদ্রো ও তার সঙ্গে অন্যান্য মুক্তবাদীরা জয়ী হয় তার কয়েক মাস পর প্রথম পেদ্রো ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৮৩৪ সালে যক্ষায় ভুগে মৃত্যুবরণ করেন। সমসাময়িক সমালোচক ও বংশধরদের দ্বারা উদার নীতিতে বিশ্বাসী বলে তাকে সম্মান করা হয়। এছাড়া ধারণা করা হয় উদারতাবাদ চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ প্রেদ্রোর জন্যই বর্তমানে ব্রাজিল ও পর্তুগাল থেকে স্বৈরতন্ত্র বিদায় নিয়ে নতুন সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে।