বিঠোবা
বিষ্ণু বা কৃষ্ণের রূপভেদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
বিঠোবা হলেন একজন হিন্দু দেবতা। তিনি বিট্ঠল ও পাণ্ডুরঙ্গ নামেও পরিচিত। প্রধানত ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে তার পূজা প্রচলিত। বিঠোবাকে সাধারণভাবে হিন্দু দেবতা বিষ্ণু অথবা তার অবতার কৃষ্ণের একটি বিশেষ রূপ মনে করা হয়। বিঠোবার মূর্তিতে তাকে এক কৃষ্ণবর্ণ বালক রূপে দেখা যায়। তিনি তার দুই হাত কোমরে রেখে কনুই দু-টি বাইরের দিকে বাঁকিয়ে একটি ইটের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন। কোনও কোনও মূর্তিতে তার পাশে তার প্রধানা মহিষী রুখমাইকেও (রুক্মিণী) দেখা যায়।
বিঠোবা বিট্ঠল পাণ্ডুরঙ্গ | |
---|---|
দেবনাগরী | विठोबा विठ्ठल पांडुरंग |
অন্তর্ভুক্তি | বিষ্ণু বা কৃষ্ণের রূপভেদ |
আবাস | পণ্ঢরপুর |
বাহন | গরুড় (বিষ্ণুর রূপভেদ হিসেবে পূজিত হলে) |
সঙ্গী | রুখমাই, সত্যভামা, রাহি |
মহারাষ্ট্রের একেশ্বরবাদী, আচারানুষ্ঠান-বিরোধী ভক্তিবাদী বারকরী [1][2] ও কর্ণাটকের হরিদাসীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রধান উপাস্য দেবতা হলেন বিঠোবা। পণ্ঢরপুর বিট্ঠল মন্দির হল বিঠোবার প্রধান মন্দির। বিঠোবা-কেন্দ্রিক কিংবদন্তিগুলির প্রধান চরিত্র হলেন তার ভক্ত পুন্ডলিক। কথিত আছে, তিনিই বিঠোবাকে পণ্ঢরপুরে নিয়ে আসেন এবং তারই জন্য বিঠোবা বারকরী ধর্মের সন্ত-কবিদের রক্ষাকর্তার ভূমিকা গ্রহণ করেন। বারকরী সন্ত-কবিরা অভঙ্গ নামে এক প্রকার স্বতন্ত্র ভক্তিমূলক গীতিকবিতার রচয়িতা হিসেবে পরিচিত। মারাঠি ভাষায় রচিত এই গীতিকবিতাগুলিতে বিঠোবার মাহাত্ম্য কীর্তিত হয়েছে। হরিদাসের স্তোত্রাবলি ও সামগ্রিকভাবে ব্যবহার্য আরাত্রিক ভজনগুলির মারাঠি সংস্করণও বিঠোবা-কেন্দ্রিক ভক্তিসাহিত্যের অঙ্গ। বিঠোবার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলি হল আষাঢ় মাসের শয়নী একাদশী ও কার্তিক মাসের প্রবোধিনী একাদশী।
বিঠোবা ও তার ধর্মানুষ্ঠানের ইতিহাস-রচনার বিষয়টি নিয়ে বিতর্কিত। এমনকি তার নামটি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। একাধিক ভারততত্ত্ববিদের ধারণা, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই বিঠোবার পূজা প্রচলিত রয়েছে। অতীতে তাকে বীরশিলা অথবা গ্রামদেবতা অথবা শিবের বিশেষ এক রূপ অথবা জৈন সন্ত রূপে পূজা করা হয়েছে। এমনও হতে পারে, বিভিন্ন শ্রেণির ভক্তেরা বিভিন্ন সময়ে এই সব ক-টি রূপেই তাকে পূজা করেছিলেন। তার কাল্ট ও তার প্রধান মন্দিরটিও একই রকম বিতর্কিত। তবে খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দী থেকেই যে দু-টির অস্তিত্ব ছিল, তার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।