বিজ্ঞানে নারী
বিশ্ববিজ্ঞানে নারীর অবদান / From Wikipedia, the free encyclopedia
বিজ্ঞানের ইতিহাসের সূত্রপাতের সঙ্গেই বিজ্ঞানে নারীর উপস্থিতির সূচনা। কেননা তখন থেকেই তারা বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। জেন্ডার এবং বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী ঐতিহাসিকগণ নারীদের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা এবং কৃতিত্ব, তারা যেসব বাধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং তাদের কাজসমূহ প্রধান বৈজ্ঞানিক জার্নাল এবং অন্যান্য প্রকাশনায় গ্রহণ ও সূক্ষ্ম পর্যালোচনার জন্য যেসব কৌশল অবলম্বন করা হয় ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়গুলোর ঐতিহাসিক, সমালোচনামূলক এবং সমাজতাত্ত্বিক অধ্যয়ন একাডেমিক চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে নারীদের সম্পৃক্ততা বেশ কয়েকটি প্রাচীন পাশ্চাত্য সভ্যতায় বিদ্যমান ছিল। প্রাচীন গ্রীসে প্রাকৃতিক দর্শনের অধ্যয়ন নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। খ্রিস্টীয় প্রথম বা দ্বিতীয় শতাব্দীতে নারীরা আলকেমির প্রোটো-সায়েন্সে (বিজ্ঞানের দর্শন) অবদান রেখেছিলেন। মধ্যযুগে, ধর্মপীঠস্থান ও ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো নারী শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল এবং এর মধ্যে কিছু সম্প্রদায় নারীদের জ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখার সুযোগ প্রদান করেছিল। একাদশ শতাব্দীতে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্থান ঘটেছিল তবে নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিধির বাইরে থাকত।[1] প্রচলিত শিক্ষার বাইরে, উদ্ভিদবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান ছিল যা আধুনিক যুগের প্রথম দিকে নারীদের অবদানের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ হয়েছিল।[2] চিকিৎসা ক্ষেত্রে নারীদের শিক্ষিত করার মানসিকতা ইতালিতে অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশ উদার ছিল বলে মনে হয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর ইতালীয় বিজ্ঞানী লরা বাসি ছিলেন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানজনক পদ অর্জনকারী প্রথম নারী।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে জেন্ডারের ভূমিকা অনেকাংশে পূর্ব-নির্ধারিত ছিল। এ সময় নারীরা বিজ্ঞানে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছিল। ঊনবিশ শতাব্দীতে, নারীদের অধিকাংশ আনুষ্ঠানিক বৈজ্ঞানিক শিক্ষা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। তবে এই সময়ের মধ্যে তারা শিক্ষিত সমাজের অন্তর্ভুক্ত হতে শুরু করে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে নারীদের কলেজের উত্থান নারী বিজ্ঞানীদের চাকরি ও শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে।
পোল্যান্ডের ওয়ারশতে জন্মগ্রহণকারী মেরি কুরি রেডিয়াম ও পোলোনিয়াম আবিষ্কার করেছিলেন এবং বিজ্ঞানীদের জন্য তেজস্ক্রিয় অবক্ষয় নিয় গবেষণা করার পথ তৈরি করেছিলেন।[3] পদার্থবিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ হিসেবে কাজ করে তিনি তেজস্ক্রিয় অবক্ষয় নিয়ে অগ্রণী গবেষণা পরিচালনা করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত প্রথম নারী এবং রসায়নেও দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি। ১৯০১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে চল্লিশজন নারী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, শরীরবিদ্যা বা চিকিৎসাশাস্ত্রে সতেরো জন নারী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।[4]