বারকোড
From Wikipedia, the free encyclopedia
বারকোড হল তথ্য সংগ্রহের একটি ভিজুয়াল পদ্ধতি। যা মেশিনযোগে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এটি সাধারণত এর ধারণকারী জিনিস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে। গতানুগতিক বারকোড হল কিছু অঙ্কিত সমান্তরাল লাইন-যার প্রস্থ এবং মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গার তারতম্য ভিন্ন ভিন্ন তথ্যের প্রতিনিধিত্ব করে; এটি রৈখিক বা একমাত্রিক ব্যবস্থা। পরবর্তীতে আয়তক্ষেত্র, বিন্দু, ষড়ভুজসহ অন্যান্য জ্যামিতিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে বারকোড ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়।যাকে ম্যাট্রিক্স কোড বা দ্বিমাত্রিক বারকোড বলা হয়। যদিও তাতে প্রকৃতপক্ষে বার বা সরলরেখা ব্যবহৃত হয় না। প্রাথমিকভাবে বারকোড স্ক্যানার নামে বিশেষ অপটিকাল স্ক্যানার দিয়ে বারকোড স্ক্যান করা হত। পরবর্তীতে এমন কিছু সফটওয়ার তৈরি হয়েছে যা ক্যামেরা সংবলিত স্মার্টফোনের ধারণকৃত ছবি পড়তে পারে।
নরম্যান জোসেফ ও বারনার্ড সিলভার বারকোড আবিষ্কার করেন। এটি ১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পেটেন্ট করা হয় (US2612994A)। এই আবিষ্কার হয়েছিল মোর্স কোডের উপর ভিত্তি করে,[1] যা ছিল পাতলা এবং পুরু দাগের রূপায়ন। যদিও এটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে বিশ বছর সময় লেগেছিল। শিল্প ক্ষেত্রে বারকোডের প্রাথমিক ব্যবহারে ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে আমেরিকান রেলপথ অ্যাসোসিয়েশন প্রণোদনা দেয়। জেনারেল টেলিফোন ও ইলেক্ট্রনিক্স এবং কারট্রাক এসিআই দ্বারা তৈরিকৃত এই প্রকল্পের মাধ্যমে রেলপথের রোলিং স্টকে স্টিলের উপর বিভিন্ন রঙবিশিষ্ট ডোরা দেয়া হয়েছিল। একটি গাড়ির উভয়দিকে একটি করে প্লেট ব্যবহার করা হয়েছিল। যাতে ছিল মালিকানা, যানের ধরন, শনাক্তকরণ চিহ্নের তথ্য।[2] একটি ট্রাকসাইড স্ক্যানার দ্বারা সেই প্লেটগুলো শনাক্ত করা হত। উদাহরণস্বরূপ, গাড়িটি যখন চলন্ত অবস্থায় ইয়ার্ডে প্রবেশ করত।[3] প্রকল্পটি দশ বছর পরে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। কারণ দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের কারণে ব্যবস্থাটি আস্থাজনক ছিল না।[2]
বারকোড বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ঐ সময় যখন এটি বিভিন্ন সুপার মার্কেটে স্বয়ংক্রিয় চেকআউট-এর জন্য ব্যবহার শুরু হয় এবং অন্যান্য কাজে এর ব্যবহার বাড়তে থাকে। যাকে স্বয়ংক্রিয় তথ্য শনাক্তকরণ এবং সংগ্রহকরণ ও বলা যায়। বর্তমানে সর্বত্র ব্যবহৃত সার্বজনীন পণ্য নম্বরের প্রথম শনাক্তকরণ ছিল ১৯৭৪ সালে রাইগলি কোম্পানির চুইংগামের প্যাকেটে।[4] কিউআর কোড নামে একধরনের দ্বিমাত্রিক বারকোড বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়।[5]
স্বয়ংক্রিয় তথ্য শনাক্তককরণ এবং সংগ্রহকরণ ব্যবস্থায় যদিও বারকোডসহ আরো অনেক পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে। কিন্তু বারকোড ব্যবস্থা সহজ, সার্বজনীন এবং স্বল্পমূল্যবান হওয়ার কারণে অন্যান্য ব্যবস্থা গৌণই থেকে গেছে। বিশেষ করে ১৯৯৫ সালের আগে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন এর মত প্রযুক্তি সুলভ হওয়ার কারণে।