প্রতিসাম্য (জীববিজ্ঞান)
জীবের জ্যামিতিক প্রতিসাম্য / From Wikipedia, the free encyclopedia
জীববিজ্ঞানে প্রতিসাম্য (ইংরেজিতে Symmetry in biology) বলতে উদ্ভিদ, প্রাণী, ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া সহ সমস্ত জীবদেহে পর্যবেক্ষিত প্রতিসাম্যকে বোঝায়। বাহ্যিক প্রতিসাম্য কোনো প্রাণীর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। উদাহরণস্বরূপ- একজন মানুষের মুখ নিন, দেখা যাবে তার কেন্দ্রস্থলে একটি প্রতিসম তল রয়েছে বা, একটি গোলাপ ফুল, যেখানে সুস্পষ্ট বহুপ্রতিসম তল রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যগুলিও প্রতিসাম্য প্রদর্শন করতে পারে, যেমন- মানবদেহের নালিগুলো (গ্যাস, পুষ্টি ও বর্জ্য পদার্থ পরিবহনের জন্য), যারা নলাকার এবং যাদের বিভিন্ন প্রতিসম তল থাকে।
জৈবিক প্রতিসাম্য কোনো জীবদেহের মধ্যে অনুরূপ দৈহিক অঙ্গ বা আকারের সুষম বণ্টন হিসেবে ভাবা যেতে পারে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, গণিতের প্রতিসাম্যের মত নয়, বরং জীববিজ্ঞানের প্রতিসাম্য সবসময়ই আনুমানিক। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ভিদের পাতাগুলি - প্রতিসম হিসেবে বিবেচিত হলেও খুব কমই অর্ধেক ভাঁজ করা হলে ঠিক ঠিক মিলে যায়। প্রতিসাম্য প্রকৃতির এক প্রকার বিন্যাস যার মধ্যে বিন্যাস উপাদানটির হয় প্রতিফলন না হয় ঘূর্ণন দ্বারা প্রায়-পুনরাবৃত্তি ঘটে।
স্পঞ্জ এবং প্লেকোজোয়ানরা দুটি প্রাণী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে, যারা কোনো প্রতিসাম্য প্রদর্শন করে না (অর্থাৎ অপ্রতিসম)। বেশিরভাগ বহুকোষী জীবের দৈহিক নকশা কোন না কোন প্রতিসাম্য প্রদর্শন করে এবং এর দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়। দৈহিক নকশাগুলোতে মোটের উপর কেবল কয়েক ধরনের প্রতিসাম্য রয়েছে। এগুলি হচ্ছে- অরীয় (Radial), দ্বিপার্শ্বীয় (Bilateral), দ্বিঅরীয় (Biradial) এবং গোলীয় (Spherical) প্রতিসাম্য।[1] 'জীব' হিসেবে ভাইরাসের শ্রেণিবিন্যাস বিতর্কিত হলেও ভাইরাসগুলিতে আইকোসেড্রাল প্রতিসাম্য রয়েছে।
প্রতিসাম্যের গুরুত্ব ঠিক ভাবে বোঝা যায় যে তথ্য থেকে তা হচ্ছে- প্রথাগতভাবে প্রাণীদের গোষ্ঠীগুলি শ্রেণিবদ্ধ করার সময় এই বৈশিষ্ট্য দ্বারাই সংজ্ঞায়িত করা হয়ে আসছে। রেডিয়াটা, একটি অরীয় প্রতিসম প্রাণী গোষ্ঠী, জর্জেস কুভিয়ারের প্রাণী জগতের শ্রেণিবিভাগের চারটি শাখার মধ্যে একটি।[2][3][4] এদিকে, বাইল্যাটারিয়া হল একটি শ্রেণী গোষ্ঠী, যা এখনও ভ্রূণাবস্থায় দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম প্রাণীদের প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যবহৃত হয়।