পিংক ফ্লয়েড
ব্রিটিশ রক ব্যান্ড / From Wikipedia, the free encyclopedia
পিংক ফ্লয়েড ১৯৬৫ সালে গঠিত লন্ডন ভিত্তিক ব্রিটিশ রক ব্যান্ড। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড হিসেবে তাদের দার্শনিক গানের কথা, সম্প্রসারিত সুরারোপ (কম্পোজিশন), ধ্বনিত নিরীক্ষণ এবং বিস্তৃত সরাসরি পরিবেশনার জন্য দলটি ব্রিটিশ সাইকেডেলিক ব্যান্ড হিসেবে শীর্ষস্থানীয় হয়ে উঠে। তারা প্রোগ্রেসিভ রক ঘরানার নেতৃস্থানীয় ব্যান্ড, যাদের কেউ কেউ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রোগ্রেসিভ রক ব্যান্ড হিসেবে উল্লেখ করে।
পিংক ফ্লয়েড | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
উদ্ভব | লন্ডন, ইংল্যান্ড |
ধরন |
|
কার্যকাল |
|
লেবেল | |
দলছুট | নিক মেইসন'স সোসারফুল অব সিক্রেট্স |
সদস্য | |
প্রাক্তন সদস্য | |
ওয়েবসাইট | pinkfloyd |
১৯৬৫ সালে স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষার্থী সিড ব্যারেট (গিটার ও মূল কন্ঠ), নিক মেইসন (ড্রাম), রজার ওয়াটার্স (বেস ও কন্ঠ) এবং রিচার্ড রাইট (কিবোর্ড ও কন্ঠ)- এই চারজন তরুণের সমন্বয়ে পিংক ফ্লয়েড গঠিত হয়। ব্যারেটের নেতৃত্বাধীনে দলটি দুটি চার্ট তালিকাভুক্ত একক এবং দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্স অব ডউন (১৯৬৭) নামে একটি সফল আত্মপ্রকাশ অ্যালবাম প্রকাশ করে। ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে, পঞ্চম সদস্য হিসেবে গিটারবাদক ডেভিড গিলমোর দলে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় ব্যারেট দল ত্যাগ করেন। ওয়াটার্স, ব্যান্ডের প্রধান গীতিকার এবং ধারণাগত নেতা হয়ে ওঠেন, পাশাপাশি তাদের সমালোচক নন্দিত এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭৩), উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫), অ্যানিম্যাল্স (১৯৭৭), দ্য ওয়াল (১৯৭৯) এবং দ্য ফাইনাল কাট (১৯৮৩) অ্যালবামের ধারণা উদ্ভাবন করেন। ১৯৮২ সালের পিংক ফ্লয়েড – দ্য ওয়াল অ্যালবামের উপর ভিত্তি করে নির্মিত সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্রটি দুটি বাফটা পুরস্কার জিতেছে। এছাড়াও ব্যান্ডটি সাতটি চলচ্চিত্রের স্কোর পরিচালনা করেছে।
ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তায় থাকার দরুন, ১৯৭৯ সালে রাইট পিংক ফ্লয়েড ত্যাগ করেন; ১৯৮৫ সালে একই পথ অনুসরণ করেন ওয়াটার্স। গিলমোর এবং মেইসন পিংক ফ্লয়েড হিসাবে নিজেদের অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে সক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রাইট পুনরায় ব্যান্ডে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর তারা তিনজন তৈরি করেন আরও দুটি অ্যালবাম— অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্স অব রিজন (১৯৮৭) ও দ্য ডিভিশন বেল (১৯৯৪)— এবং পরবর্তীতে দীর্ঘকাল নিস্ক্রিয় থাকার আগ পর্যন্ত দলটির সঙ্গীত সফর অব্যাহত রাখেন। প্রায় দুই দশক সময় পরে, ২০০৫ সালে লাইভ এইট নামে বৈশ্বিক সচেতনতা অনুষ্ঠানে পিংক ফ্লয়েড হিসেবে পরিবেশন করতে ব্যারেট ব্যতীত দলের বাকি সদস্যরা সর্বশেষবার একত্রিত হয়েছিলেন। ব্যারেট মারা যান ২০০৬ সালে, এবং রাইট ২০০৮ সালে। পিংক ফ্লয়েডের সর্বশেষ স্টুডিও অ্যালবাম দি এন্ডলেস রিভার (২০১৪), ওয়াটার্সকে ছাড়াই রেকর্ড করা হয়, এবং যা মূলত তাদের অপ্রকাশিত সঙ্গীত উপাদানের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০২২ সালে, গিলমোর এবং মেইসন পিংক ফ্লয়েডকে সংস্কার করে রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধের প্রতিবাদে "হেই, হেই, রাইজ আপ!" গানটি প্রকাশ করেন।
২০১৩ সাল নাগাদ, বিশ্বব্যাপী ২৫০ মিলিয়নেরও বেশি পিংক ফ্লয়েডের রেকর্ড বিক্রি হয়েছিল, যা তাদের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ-বিক্রি হওয়া সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে। দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন এবং দ্য ওয়াল গ্র্যামি হল অব ফেমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, এবং এই অ্যালবামগুলিসহ তাদের উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার সর্বকালের সেরা বিক্রিত অ্যালবামগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হ্য়। তাদের চারটি অ্যালবাম ইউএস বিলবোর্ড ২০০-এর শীর্ষে এবং পাঁচটি অ্যালবাম ইউকে অ্যালবাম চার্টের শীর্ষে রয়েছে। পিংক ফ্লয়েডের হিট একক গানগুলির মধ্যে রয়েছে "সি এমিলি প্লে" (১৯৬৭), "মানি" (১৯৭৩), "অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল (অংশ ২)" (১৯৭৯), "নট নাও জন" (১৯৮৩), "অন দ্য টার্নিং অ্যাওয়ে" (১৯৮৭) এবং "হাই হোপ্স" (১৯৯৪)। ১৯৯৬ সালে ব্যান্ডটি মার্কিন রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেমের এবং ২০০৫ সালে ইউকে মিউজিক হল অব ফেমের অর্ন্তভুক্ত হয়। পিংক ফ্লয়েডকে ব্রিটিশ সাইকিডেলিয়ার শীর্ষ দলগুলির একটি বিবেচনা করা হয় এবং প্রোগ্রেসিভ রক ও চারিপার্শ্বিক সঙ্গীতের মতো ধারাগুলির বিকাশে অনুপ্রেরণা সৃষ্টির কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে, সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ আধুনিক সঙ্গীতে অবদানের জন্য পিংক ফ্লয়েডকে পোলার মিউজিক প্রাইজ প্রদান করেন।