নিউট্রন
নিউট্রন কি / From Wikipedia, the free encyclopedia
নিউট্রন হল একটি অতিপারমাণবিক কণা, এর কোনও বৈদ্যুতিক আধান নেই এবং এর ভর প্রোটন কণার ভরের চেয়ে সামান্য বেশি। প্রোটন এবং নিউট্রন মিলে পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠন করে। যেহেতু নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন এবং নিউট্রন একইরকম আচরণ করে, এবং প্রত্যেকের ভর প্রায় এক পারমাণবিক ভর একক, এই দুই কণাকেই নিউক্লিওন বলা হয়।[3] তাদের বৈশিষ্ট্য এবং মিথস্ক্রিয়াগুলি পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানে বর্ণিত হয়।
শ্রেণীবিন্যাস | ব্যারিয়ন |
---|---|
গঠন | ১ উচ্চ কোয়ার্ক, ২ নিম্ন কোয়ার্ক |
পরিসংখ্যান | ফার্মিয়নিক |
মিথষ্ক্রিয়া | মহাকর্ষ, দুর্বল, সবল, তড়িচ্চুম্বকীয় |
প্রতিকণা | অ্যান্টিনিউট্রন |
তত্ত্ব | আর্নেস্ট রাদারফোর্ড[1] (১৯২০) |
আবিষ্কার | জেমস চ্যাডউইক[2] (১৯৩২) |
ভর | 1.675×10^-24g |
ইলেকট্রিক চার্জ | 0 (নিরপেক্ষ) |
নিউক্লিয়াসের রাসায়নিক এবং পারমাণবিক বৈশিষ্ট্যগুলি প্রোটনের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়, যাকে বলা হয় পারমাণবিক সংখ্যা, এবং নিউক্লিয়াসে নিউট্রনের সংখ্যাকে, নিউট্রন সংখ্যা বলা হয়। আণবিক ভর সংখ্যা হল এই দুটি নিউক্লিয়নের মোট সংখ্যা। উদাহরণ স্বরূপ, কার্বনের এর পারমাণবিক সংখ্যা হল ৬, এবং যেটি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, সেই কার্বন-১২ সমস্থানিকটিতে (আইসোটোপ) ৬ টি নিউট্রন রয়েছে, যদিও এর বিরল কার্বন-১৩ সমস্থানিকে ৭ টি নিউট্রন রয়েছে। প্রকৃতিতে কিছু উপাদানের কেবলমাত্র একটি স্থিতিশীল সমস্থানিক থাকে, যেমন ফ্লোরিন। অন্যান্য অনেক উপাদানের অনেক স্থিতিশীল সমস্থানিক আছে, উদাহরণস্বরূপ টিনের দশটি স্থিতিশীল সমস্থানিক আছে। নিউক্লিয়াসের মধ্যে, প্রোটন এবং নিউট্রনগুলি নিউক্লীয় বল দ্বারা একত্রে আবদ্ধ থাকে। নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীলতার জন্য নিউট্রন প্রয়োজন, এর একটিমাত্র ব্যতিক্রম হল একক প্রোটন হাইড্রোজেন পরমাণু। নিউট্রনগুলি কেন্দ্রীণ বিদারণ এবং সংযোজনের সময় প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়। তারার মধ্যে রাসায়নিক উপাদানের কেন্দ্রীন সংশ্লেষের জন্য তারা প্রধান অবদান, এবং সেটি ঘটে কেন্দ্রীণ বিদারণ, কেন্দ্রীণ সংযোজন, এবং নিউট্রন ক্যাপচার (একটি পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া) পদ্ধতির মাধ্যমে।
নিউট্রন পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। ১৯৩২ সালে জেমস চ্যাডউইক নিউট্রন আবিষ্কার করার দশকে,[4] নিউট্রনগুলি বিভিন্ন ধরনের নিউক্লীয় সংক্রমণ (রাসায়নিক উপাদানের রূপান্তর) শুরু করার জন্য ব্যবহৃত হত। ১৯৩৮ সালে কেন্দ্রীণ বিদারণ আবিষ্কার হবার পর,[5] দ্রুত উপলব্ধি করা গিয়েছিল যে, যদি বিদারণ পদ্ধতিতে নিউট্রন উৎপাদিত হয়, এই নিউট্রনগুলির প্রতিটি নিউক্লীয় চেইন প্রতিক্রিয়ায় আরও বিদারণ ঘটাতে পারবে।[6] এই ঘটনা এবং অনুসন্ধানগুলির ফলে বিজ্ঞান প্রথম স্বনির্ভর পারমাণবিক চুল্লি (শিকাগো পাইল-১, ১৯৪২, প্রথম কৃত্রিম পারমাণবিক চুল্লি) এবং প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের (ত্রিনিতি, ১৯৪৫) দিকে অগ্রসর হয়।
মুক্ত নিউট্রন, পরমাণুকে সরাসরি আয়নিত না করে, আয়নিত বিকিরণের কারণ ঘটায়। মাত্রার উপর নির্ভর করে এগুলি থেকে জৈবিক বিপদ হতে পারে।[6] মহাজাগতিক রশ্মির ঝরনা এবং পৃথিবীর ভূত্বকের স্বতঃস্ফূর্ত বিভাজনীয় উপাদানগুলির প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা দ্বারা সৃষ্ট প্রাকৃতিক মুক্ত নিউট্রনের "নিউট্রন ব্যাকগ্রাউন্ড" প্রবাহ পৃথিবীতে বিদ্যমান।[7] বিশেষ নিউট্রন উৎস, যেমন নিউট্রন জেনারেটর, গবেষণা চুল্লী এবং স্পেলেশন উৎস থেকে মুক্ত নিউট্রন তৈরি হয়, বিকিরণ এবং নিউট্রন স্ক্র্যাটারিং পরীক্ষায় ব্যবহারের জন্য।