নারী ক্ষমতায়ন
অধিকার প্রদান, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা প্রদান এবং নারীকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য শক্তি / From Wikipedia, the free encyclopedia
নারী ক্ষমতায়ন (ইংরেজি: Women's empowerment) হল নারী ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়া।[1][2] ক্ষমতায়নকে বিভিন্ন উপায়ে সংজ্ঞায়িত করতে পারা যায়, কিন্তু, নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে ক্ষমতায়নের অর্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার বাইরের মানুষের (মহিলাগণ) একে গ্রহণ করা এবং তাঁদের অনুমতি দেওয়া। "এই রাজনৈতিক গঠন এবং আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটি আয় উপার্জনের দক্ষতার উপর জোর দেওয়া হয়, যা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণকে সক্ষম করেন।"[3] ক্ষমতায়ন হল একটি প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির নিজের জীবন, সমাজ এবং নিজের সম্প্রদায়ে ক্ষমতা সৃষ্টি করে। মানুষ ক্ষমতাবান হয় যেখানে তাঁদের শিক্ষা, পেশা এবং জীবনযাত্রার নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা এবং সেই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে তাঁরা তাঁদের উপলব্ধ সুযোগসমূহ লাভ করতে সক্ষম হয়। নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার বোধ করার ক্ষমতায়নের একটি ধারণা সৃষ্টি হয়। ক্ষমতায়নে শিক্ষার মাধ্যমে নারীর সম্মান বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সাক্ষরতা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। নারী ক্ষমতায়ন নারীদের সমাজে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন নির্ধারণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেয়।[4] নারী ক্ষমতায়ন নারীর নিজস্ব মূল্যবোধকে বিকাশিত করতে সাহায্য করে।
বিকল্পভাবে, এই নারীদের জন্য লিঙ্গ ভূমিকা সংজ্ঞায়িত করার প্রক্রিয়া যা তাঁদের পরিচিত বিকল্পসমূহের মধ্যে বেছে নেওয়ার ক্ষমতা লাভ করার অনুমতি দেয়, তাঁদের এই ধরনের ক্ষমতার থেকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।[1] নারী ক্ষমতায়নের সংজ্ঞায়িত করতে অনেক নীতি আছে, যেমন: ক্ষমতায়নের জন্য তাঁদের নিশ্চয়ই প্রতিদানের অবস্থানের থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। উদাহরণস্বরূপ একজন ষ্ট্রিপার টাকা পাওয়ার জন্য তাঁর সাজসজ্জাসমূহ ফেলে দেয় না এবং এটি সম্মানিত সংস্থার অভ্যর্থনাবিদ। ক্ষমতায়ন আত্ম সম্মান থেকে উদ্ভূত হয়। তদুপরি, একজনকে সরিয়ে বাহ্যিক পক্ষের দ্বারা তাঁদের দেওয়া থেকে তাঁদের ক্ষমতায়ন অর্জন করতে হয়। আলাদা গবেষণায় পাওয়া গেছে যে ক্ষমতায়নের সংজ্ঞাগুলি তাঁদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে এমন ব্যক্তিকে তাঁদের উপর হেচাঁ প্রয়োগ করতে সক্ষম করে তোলে। অবশেষে, ক্ষমতায়ন বা সবলীকরণ ইত্যাদি যুগের তুলনায় আলাদার তুলনা; আবার, ক্ষমতায়ন একটি প্রক্রিয়া, কোনো বস্তু নয়।[2]
নারী ক্ষমতায়ন উন্নয়ন এবং অর্থনীতিতে আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রেক্ষাপটে অন্যান্য তুচ্ছ লিঙ্গ সম্পর্কিত পদ্ধতির দিকেও ইঙ্গিত করতে পারে।
নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারীদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার ভোগ করার ক্ষমতা এবং সম্পদ, আয় এবং তাঁদের নিজস্ব সময়ের থেকে উপকার লাভ করার সাথে সমস্যা পরিচালনা এবং তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থান তথা সুস্থতার উন্নতি করার ক্ষমতাকে বোঝায়।
বিনিময়যোগ্য হিসাবে প্ৰায়শ ব্যবহার করা হলেও, লিঙ্গ সবলীকরণ ও অধিক বিস্তৃত ধারণাটি যেকোনো লিঙ্গের মানুষকে বোঝায়, ভূমিকা হিসাবে জৈবিক ও লিঙ্গের মাঝে পার্থক্য যুক্ত করে।
নারী ক্ষমতায়নের ধারণা গ্রহণ করলে এমন কার্য্যসূচি এবং নীতি বাস্তবায়নের ফলে গোটা দেশ, ব্যবসা, সম্প্রদায় এবং গোষ্ঠী উপকৃত হয়ে যায়।[5] নারী ক্ষমতায়ন একটি সমাজের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয়, কারণ এটি উন্নয়নের জন্য উপলব্ধ মানবসম্পদের গুণমান এবং পরিমাণ উভয়ত বাড়িয়ে তোলে।[6] ক্ষমতায়ন হিউম্যান রাইটস্ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টকে সম্বোধন করার সময় অন্যতম প্রধান পদ্ধতিগত উদ্বেগ।
দেশের বহনক্ষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাদের সমাজের জন্য নারী ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সমতা অর্জন করা প্রাথমিক প্রয়োজন। অনেক বিশ্বনেতা এবং পণ্ডিতদের যুক্তি ছিল যে লিঙ্গ সমতা এবং নারী ক্ষমতায়ন না হওয়া পর্যন্ত বহনক্ষম উন্নয়ন অসম্ভব।[4] বহনক্ষম উন্নয়ন পরিবেশ সংরক্ষণ, সামাজিক তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন গ্রহণ করে,[7] এবং নারী ক্ষমতায়ন না হওয়া মহিলারা পুরুষের ব্যতিরেকে উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সমান গুরুত্ব বোধ করে না। এটি বহুলভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, নারী তথা পুরুষ উভয়ের সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেবল পুরুষদের অংশগ্রহণের স্বীকৃতিতে বহনক্ষম উন্নয়নের পক্ষে উপকারী হবে না। নারী এবং উন্নতির প্রসঙ্গে, ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই নারীদের বেশি পছন্দ করতে হবে।[8] লিঙ্গ সমতা এবং ক্ষমতায়ন না থাকলে দেশে ন্যায়বিচার হতে পারে না এবং সামাজিক পরিবর্তন ঘটে না। আবার, পণ্ডিতগণ সম্মত যে, নারী ক্ষমতায়ন উন্নতির জন্য একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে এবং এটি উন্নতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান। উন্নয়নে নারীদের সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত না করলে নারীরা দেশের উন্নয়নে সুবিধা করতে বা অবদান রাখতে পারবে না।