দ্বিতীয় লিওপোল্ড (বেলজীয় সম্রাট)
From Wikipedia, the free encyclopedia
দ্বিতীয় লিওপোল্ড [1] (৯ এপ্রিল ১৮৩৫ – ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৯) ১৮৬৫ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বেলজীয় রাজা এবং ১৮৮৫ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত কঙ্গো ফ্রি স্টেট এর অধিপতি এবং একচ্ছত্র শাসনকর্তা ছিলেন।
দ্বিতীয় লিওপোল্ড | |||||
---|---|---|---|---|---|
বেলজীয় সম্রাট | |||||
রাজত্ব | ১৭ ডিসেম্বর ১৮৬৫ – ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৯ | ||||
পূর্বসূরি | প্রথম লিওপোল্ড | ||||
উত্তরসূরি | প্রথম আলবার্ট | ||||
প্রধানমন্ত্রী | তালিকা দেখুন
| ||||
কঙ্গো ফ্রি স্টেট এর সার্বভৌম শাসনকর্তা | |||||
রাজত্ব | ১ জুলাই ১৮৮৫ – ১৫ নভেম্বর ১৯০৮ | ||||
গভর্নর জেনারেল | তালিকা দেখুন
| ||||
জন্ম | (১৮৩৫-০৪-০৯)৯ এপ্রিল ১৮৩৫ ব্রাসেলস, বেলজিয়াম | ||||
মৃত্যু | ১৭ ডিসেম্বর ১৯০৯(1909-12-17) (বয়স ৭৪) লায়েকেন, ব্রাসেলস, বেলজিয়াম | ||||
সমাধি | চার্চ অফ আওয়ার লেডি অফ লায়েকেন | ||||
দাম্পত্য সঙ্গী | মারি হেনরিয়েট অফ অস্ট্রিয়া (বি. ১৮৫৩; মৃ. ১৯০২) ক্যারোলিন ল্যাক্রোই(বিতর্কিত) (বি. ১৯০৯) | ||||
বংশধর (অন্যদের মধ্যে) |
| ||||
| |||||
রাজবংশ | Saxe-Coburg and Gotha | ||||
পিতা | প্রথম লিওপোল্ড | ||||
মাতা | লুই অফ অর্লেয়ঁ | ||||
ধর্ম | রোমান ক্যাথলিক |
তিনি প্রথম লিওপোল্ডের দ্বিতীয় ও জ্যেষ্ঠ জীবিত পুত্র। তিনি ব্রাসেলসে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৬৫ সালে তিনি বেলজিয়ামের সিংহাসনে তার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ৪৪ বছর রাজত্ব করেন, যা কোনও বেলজীয় সম্রাটের দীর্ঘতম রাজত্ব। তিনি কোন জীবিত বৈধ পুত্র না রেখেই মৃত্যুবরণ করেন। বেলজিয়ামের বর্তমান রাজা, তার ভাতিজা ও উত্তরাধিকারী প্রথম আলবার্ট এর বংশধর।
লিওপোল্ড কঙ্গো ফ্রি স্টেট এর প্রতিষ্ঠাতা এবং একচ্ছত্র অধিকর্তা ছিলেন, এটি ছিল তার নিজের উদ্যোগে পরিচালিত একটি ব্যক্তিগত প্রকল্প। তিনি হেনরি মর্টন স্ট্যানলির সাহায্যে কঙ্গো (বর্তমান গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র) অধিকার করেন। ১৮৮৪–১৮৮৫ সালের বার্লিন সম্মেলনে, ইউরোপের ঔপনিবেশিক দেশগুলো, কঙ্গো ফ্রি স্টেট এর স্থানীয় অধিবাসীদের জীবনযাত্রার উন্নতির প্রতিশ্রুতির সাপেক্ষে, তার অধিকারে প্রেরণের দাবি অনুমোদন করে।[2] লিওপোল্ড এই শর্তগুলো উপেক্ষা করেন এবং তার ব্যক্তিগত লাভের জন্য ভাড়াটে বাহিনী ব্যবহার করে কঙ্গো পরিচালনা করেন। তিনি প্রাথমিকভাবে আইভরি সংগ্রহ করে এবং ১৮৯০-এর দশকে প্রাকৃতিক রাবারের দাম বৃদ্ধির পর, স্থানীয় জনসাধারণকে জোরপূর্বক রাবার চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বাধ্য করে এই অঞ্চল থেকে ব্যাপক ধনসম্পদ আহরণ করেছিলেন।
কঙ্গো ফ্রি স্টেট এ লিওপোল্ডের প্রশাসনের সহজাত বৈশিষ্ট্যই ছিল অত্যাচার , নির্যাতন, হত্যা ও কুখ্যাত পদ্ধতিগত বর্বরতা। ১৮৯০ সালে, জর্জ ওয়াশিংটন উইলিয়ামস, কঙ্গো ফ্রি স্টেট এ দ্বিতীয় লিওপোল্ড এর প্রশাসন বর্ণনা করার জন্য ক্রাইমস এগেইন্সট হিউম্যানিটি বা "মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ" বাক্যাংশটি প্রথম ব্যবহার করেন।[3] তৎকালীন কঙ্গোতে, রাবারের কোটা পূরণ করতে না পারলে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের হাত কেটে ফেলা হতো এবং এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কঙ্গোলিয় মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এ সম্পর্কিত ঔপনিবেশিক বর্ণনাসমূহে সাধারণত লিওপোল্ডের কারণে যে গণমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল তার বদলে কঙ্গোতে তার আধুনিকীকরণ কর্মকাণ্ডের উপর অধিক জোর দিতে দেখা যায়।
এই তথ্যসমূহ সেই সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন কর্তৃক ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ১৯০৪ সালের কেসমেন্ট রিপোর্ট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আধুনিক অনুমান অনুযায়ী, মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লক্ষ থেকে থেকে দেড় কোটি, অধিকাংশের মতেই সংখ্যাটি ১ কোটির কাছাকাছি।[4][5][6] কিছু ইতিহাসবিদ এই পরিসংখ্যানের বিরুদ্ধে যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন নির্ভরযোগ্য আদমশুমারির অভাব, গুটিবসন্ত এবং আফ্রিকান ট্রাইপানোসোমিয়াসিসের কারণে ব্যাপক মৃত্যুহার এবং রবার শোষণকান্ড পরিচালনার দায়িত্বে মাত্র ১৭৫ জন প্রশাসনিক প্রতিনিধি নিয়োজিত থাকার তথ্য। ১৯০৮ সালে, মৃত্যুর বিবরণ এবং কঙ্গো রিফর্ম অ্যাসোসিয়েশন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চাপের কারণে বেলজীয় সরকার, লিওপোল্ড এর কাছ থেকে কঙ্গোর প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং এর মাধ্যমে নতুন অঞ্চল হিসেবে বেলজিয়ান কঙ্গোর প্রকাশ ঘটে।