জৈবিক ভূমিক্ষয়
From Wikipedia, the free encyclopedia
জৈবিক ভূমিক্ষয় দ্বারা মূলত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জীবন্ত প্রাণীর দ্বারা কঠিন মহাসাগর নিম্নস্তর এর ভাঙ্গন কে বর্ণনা করা হয় এবং প্রায়ই খুব কম ক্ষেত্রেই তা স্থলজ নিম্নস্তর বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত মলাস্কা, পলিচিট কৃমি, ফরনিড, স্পঞ্জ, ক্রাস্টেশিয়ান, একাইনোডার্মাটা, এবং মাছ ইত্যাদি প্রাণী মূলত দায়ী থাকে সামুদ্রিক জৈব ক্ষয়ের জন্য । এটি উপকূলরেখায়, প্রবাল প্রাচীর কিংবা জাহাজ সমূহেও ঘটতে পারে। এর প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জৈব খনন, তুরপুন, ঘর্ষণ এবং বর্জন । সাধারণত শুষ্ক জমিতে জৈব ক্ষয় ঘটে থাকে অগ্রণী উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ সদৃশ জীব যেমন লাইচেন,অধিকাংশ রাসায়নিক (যেমন চুনাপাথরের অম্লীয় ক্ষরণ দ্বারা) কিংবা যান্ত্রিক (উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ফাটলে বেড়ে ওঠা শিকড়) ইত্যাদি কারণের মাধ্যমে।
এই সংজ্ঞা বর্ণনা করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জৈব ক্ষয় বিশেষকরে ভূতাত্ত্বিক ধারণার পরিবর্তে এটি বরং জৈব সম্বন্ধীয় পলিমার এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যা এই অনুচ্ছেদের বিবৃতিতে তুলে ধরা হল কোষের ক্রিয়াকলাপের ফলে পৃষ্ঠতলের "ক্ষয়"।
উল্লেখ্য 1: কোষ দ্বারা জৈব ক্ষয়ের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল "ক্ষয়" যেটি একটি তলে আটকে থাকে এবং এতে মূলত স্তূপের মোলার ভর অপরিবর্তিত থাকে।
উল্লেখ্য 2: রাসায়নিক ক্ষয়ের হার কোষ মধ্যবর্তী ক্ষয়কে তখনই উপস্থাপন করতে পারে যখন রাসায়নিক শেকল কর্তনের হার বিদারক রায়ায়নিক বিকারকের অনুপ্রবেশ এর চেয়ে বেশি হয়, যেমন এক্ষেত্রে তা পানিবিয়োজী ক্ষয়প্রবন পলিমার এর পানির বিকিরণ ।
উল্লেখ্য 3: স্তূপকৃত মোলার ভরের স্থির ক্ষয়ও ভিট্রো জীবক্রিয়ায় এনজাইমাটিক ক্ষয়ের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
উল্লেখ্য 4: মূলত কিছু ক্ষেত্রে জৈব ক্ষয় কোষ-মধ্যস্থতা এবং রাসায়নিক ক্ষয়ের ফলে ঘটে থাকে।[1]
ক্রান্তীয় দ্বীপসমূহের সূক্ষ্ম এবং সাদা প্রবাল বালির যে বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তা মূলত প্রবাল প্রাচীরের জৈবিক ক্ষয়ের ফলেই সৃষ্টি হয়। প্রবালসমূহ এতে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ জৈব ক্ষয়কারক যেমন শৈবাল, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া (microborers) এবং স্পঞ্জ (Clionaidae), বাইভালভিয়া ( Lithophaga ), সিপুনকুলা, পলিচিট, অ্যাক্রোথোরাসিয়ান বার্নাকল এবং ফোরনিড প্রভৃতি দ্বারা ধুলোয় পরিণত হয়। যার ফলে 10 থেকে 100 মাইক্রোমিটার পরিধির অত্যন্ত মিহি তলানি সৃষ্টি হয়। বাহ্যিক জৈব ক্ষয়কারক সমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সামুদ্রিক আর্চিন (যেমন ডায়াডেমা ) এবং চিটন । সমবেতভাবে এই প্রাণীগুলো ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয় সাধন করে। সামুদ্রিক আর্চিন জনিত ক্যালসিয়াম কার্বোনেট এর ক্ষয় এতই বেশি যে কিছু কিছু প্রবালপ্রাচীরে বার্ষিক হার 20 কেজি/এম 2 ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা যায়।
শৈবাল খাওয়ার সময় মাছও প্রবাল নষ্ট করে। প্যারোটমাছ তার উন্নতভাবে বিকশিত চোয়ালের পেশী, দন্ত বর্ম এবং একটি গলবিলীয় কল ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে জৈব ক্ষয় প্রস্তুত করে, যা এর উদরস্থিত খাদ্যবস্তুকে বালি-আকারের কণায় পিষে ফেলতে সাহায্য করে। প্যারোটমাছ কর্তৃক প্রবাল প্রাচীর অ্যারাগোনাইট এর ক্ষয় ক্লোরুরাস গীবাসের ক্ষেত্রে ১০১৭.৭ ± ১৮৬.৩ কেজি/বছর, (০.৪১ ± ০.০৭ মি 3/বছর ) আর ক্লোরুরাস সর্ডিডাস এর ক্ষেত্রে তা ২৩.৬±৩.৪ কেজি/বছর (৯.৭ ১০ −৩ ± ১.৩ ১০ −৩ মি 2/বছর) (বেলউড, ১৯৯৫)। প্রবাল ধ্বংসকারী আরেকটি প্রাণী হল কণ্টক মুকুটযুক্ত সামুদ্রিক তারা মাছ। এদের মূলত ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর এ দেখা যায়। এরা এদের ২৩ টি বাহুর দ্বারা প্রবাল প্রাচীর আটকে ধরে চলাফেরা করে এবং জীবন্ত প্রবাল ভক্ষণ করে। আর যখন এরা হাজার হাজার সংখ্যক একত্রিত হয়ে দলে দলে প্রবালের ওপর দিয়ে যায় তখন এরা প্রবালের ব্যাপক ক্ষয়সাধন করে এবং অনেক সময় জীবিত প্রবালগুলো খেয়ে নিঃশেষ করে ফেলে। এতে করে প্রবাল প্রাচীরগুলোর পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যেতে বছরের পর বছর লেগে যায়।[2]
শেল এবং কঠিনভূমি জীবাশ্ম রেকর্ডেও জৈব ক্ষয় একটি সুপরিচিত নাম। (ব্রোমলি, ১৯৭০ ) আর এই ক্রিয়াকলাপের চিহ্নটি প্রাক্কাম্ব্রিয়ান যুগ পর্যন্ত বেশ ভালভাবেই বর্ধিত করা যায় (টেইলর অ্যান্ড উইলসন, ২০০৩)। ম্যাক্রো জৈব ক্ষয় খালি চোখে দৃশ্যমান গর্ত উৎপাদন করে তা দুটি পৃথক বিবর্তনীয় বিকিরণ দেখায়। একটি ছিল মধ্য অর্ডোভিশিয়ান (অর্ডোভিশিয় জৈব ক্ষয় বিপ্লব; উইলসন ও পামার, ২০০৬ দেখুন) এবং অন্যটি জুরাসিক এর (দেখুন টেলর ও উইলসন, ২০০৩; ব্রমলে, ২০০৪; উইলসন, ২০০৭))। মাইক্রো জৈব ক্ষয়ের রয়েছে একটি দীর্ঘ জীবাশ্ম রেকর্ড এবং নিজস্ব বিকিরণ (গ্লাউব এবং ভোগেল, ২০০৪; গ্লাউব এট আল, 2007 দেখুন)।