জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল
স্কটিশ পদার্থবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল এফআরএসই এফআরএস (১৩ জুন ১৮৩১ - ৫ নভেম্বর ১৮৭৯) ছিলেন একজন স্কটিশ গণিতবিদ[1][2] এবং বিজ্ঞানী। তিনি তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গের সর্বোত্তম তত্ত্বটি বর্ণণা করেছিলেন, যার সাহায্যে তড়িৎ, চুম্বকত্ব এবং আলো কে একই শক্তির বিভিন্ন রূপ হিসেবে বর্ণনা করা সম্ভব হয়েছিল। ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎ চৌম্বকীয় বলের সমীকরণকে পদার্থবিজ্ঞানে "দ্বিতীয় বৃহত্তম একীকরণ"[3] বলা হয়, যেখানে প্রথম বৃহত্তম একীকরণ করেছিলেন আইজাক নিউটন।
জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল | |
---|---|
জন্ম | (১৮৩১-০৬-১৩)১৩ জুন ১৮৩১ এডিনবরা, স্কটল্যান্ড |
মৃত্যু | ৫ নভেম্বর ১৮৭৯(1879-11-05) (বয়স ৪৮) কেমব্রিজ, ইংল্যান্ড |
মাতৃশিক্ষায়তন | |
পরিচিতির কারণ |
|
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত |
প্রতিষ্ঠানসমূহ |
|
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টা | উইলিয়াম হপকিন্স |
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী |
|
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | স্যার আইজ্যাক নিউটন, মাইকেল ফ্যারাডে,থমাস ইয়ং |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | কার্যত সকল আধুনিক পদার্থবিদ্যা |
স্বাক্ষর | |
১৮৬৫ সালে "এ ডাইনামিক্যাল থিওরি অফ দ্য ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড" প্রকাশের মাধ্যমে, ম্যাক্সওয়েল দেখিয়েছিলেন যে তড়িৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্রগুলো তরঙ্গ হিসেবে আলোর গতিতে মহাকাশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে। তিনি প্রস্তাব করেছিলেন যে, একই মাধ্যমে বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকীয় তরঙ্গের পরিভ্রমণের ফলেই আলোক তরঙ্গের উৎপত্তি হয়।[4] আলো এবং বৈদ্যুতিক তরঙ্গের একীকরণ তার রেডিও তরঙ্গের অস্তিত্বের ভবিষ্যদ্বাণী করে। ম্যাক্সওয়েলকে আধুনিক বৈদ্যুতিক প্রকৌশল ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও গণ্য করা হয়।[5]
ম্যাক্সওয়েল ম্যাক্সওয়েল-বোল্টজম্যান ডিস্ট্রিবিউশনের বিকাশে সাহায্য করেছিলেন, যা গ্যাসের গতি তত্ত্বের দিকগুলো বর্ণনা করার একটি পরিসংখ্যানগত উপায় ছিল। এছাড়াও তিনি ১৮৬১ সালে প্রথম স্থায়ী রঙিন ছবি উপস্থাপন ও সেতুর রড এবং যৌথ কাঠামোর (ভাররক্ষার্থ কাঠামো) দৃঢ়তা বিশ্লেষণে ভিত্তিমূলক কাজ করেছিলেন।
তার আবিষ্কারগুলো আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের যুগে, বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যার মতো ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপনের সূচনা করতে সাহায্য করেছিল। অনেক পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েলকে ১৯ শতকের এমন বিজ্ঞানী হিসাবে বিবেচনা করেন যিনি ২০ শতকের পদার্থবিজ্ঞানের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেন। অনেকে বিজ্ঞানে তার অবদানকে আইজাক নিউটন এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মতো একই মাত্রার বলে মনে করেন।[6] ১০০০ বছর ধরে চলা একটি জরিপে ১০০ জন বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি সমীক্ষায় নিউটন এবং আইনস্টাইনের পরে ম্যাক্সওয়েলকে সর্বকালের তৃতীয় সর্বশ্রেষ্ঠ পদার্থবিজ্ঞানী নির্বাচিত করা হয়েছিল।[7] ম্যাক্সওয়েলের শতবর্ষতম জন্মদিনে, আইনস্টাইন ম্যাক্সওয়েলের কাজকে তার অভিজ্ঞতায় "নিউটনের সময় থেকে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে গভীর এবং সবচেয়ে ফলপ্রসূ" বলে বর্ণনা করেছেন।[8] ১৯২২ সালে আইনস্টাইন যখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন, তখন তার অতিথিসেবক তাকে বলেছিলেন যে তিনি দুর্দান্ত কাজ করেছেন কারণ তিনি নিউটনের ঘাড়ে দাঁড়িয়ে বিশ্ব দেখেছেন; আইনস্টাইন উত্তর দিয়েছিলেন: "না আমি নিউটন নয়, ম্যাক্সওয়েলের ঘাড়ে দাঁড়িয়ে বিশ্ব দেখেছি।"[9]