চূড়া ঘড়ি
From Wikipedia, the free encyclopedia
চূড়া ঘড়ি, শীর্ষ ঘড়ি, শিখর ঘড়ি বা বুরূজ ঘড়ি বলতে কোনও ভবনের দেয়ালের উচ্চতম অংশে, সাধারণত একটি নিরাবলম্ব বা ভবন-সংলগ্ন ঘড়িঘর বা ঘড়িবুরূজের উপরে স্থাপন করার উদ্দেশ্যে নকশাকৃত ঘড়িকে বোঝায়। এগুলি সাধারণত গির্জা, বিশ্ববিদ্যালয় ভবন ও নগরভবনগুলিতে দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় জনগণ যেন সহজে বহুদূর থেকে ঘড়িটি দেখে সময় পড়ে নিতে পারে, সেজন্য তাদের সুবিধার্থে এই চূড়া ঘড়িটির মুখ অনেক বড় আকারে নির্মাণ করা হয় এবং প্রতি ঘটিকায় ঘণ্টা বাজানোর ব্যবস্থা থাকে।
পাশ্চাত্যে চূড়া ঘড়ি ছিল ঘড়ির সবচেয়ে আদি প্রকারগুলির একটি। ১২শ শতকে ইউরোপের শহর ও মঠগুলিতে সুউচ্চ বুরূজের উপর এইরূপ ঘড়িসহ ঘণ্টাঘর নির্মাণ করা হত, যার মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে প্রার্থনার আহ্বান জানানো হত। ২০শ শতাব্দী পর্যন্তও সরকারি ভবন বা স্থাপনার চূড়া ঘড়িগুলি দৈনন্দিন জীবনে সময়ের হিসাবরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত। ২০শ শতকে এসে সঠিক সময় প্রদানকারী হাতঘড়ির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসলে ঐসব চূড়া ঘড়ির গুরুত্ব হ্রাস পায়। বর্তমানে চূড়া ঘড়িগুলির সময় প্রদানকারী কার্যটির তেমন আর কোনও প্রয়োজন নেই, এগুলিকে মূলত ঐতিহ্যগত, শোভাবর্ধক ও শৈল্পিক কারণেই নির্মাণ করা হয়।
ঘড়ির বিশাল কাঁটাগুলিকে ঘোরাতে ও ঘড়ির বিরাট ঘণ্টাটিকে বাজাতে চূড়া ঘড়ির অভ্যন্তরীণ কলকব্জাগুলিকে সাধারণ ঘড়ির তুলনায় বেশি শক্তিশালী হতে হয়। ঐতিহ্যবাহী চূড়া ঘড়িগুলি বৃহদাকার দোলক ঘড়ি, যেগুলিকে ঝুলন্ত ভার দিয়ে চালানো হয়। এর বিপরীতে আধুনিক চূড়া ঘড়িগুলি বিদ্যুৎচালিত হয়ে থাকে।