চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের অনানুষ্ঠানিক কৌশলগত সংলাপ / From Wikipedia, the free encyclopedia
কেভিন রাড অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে দেশটি এই সংলাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলে চতুর্পাক্ষিক সংলাপটি ভেঙে যায়।[4]এটি ছিল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার নীতিতে দোটানার একটি প্রতিফলন। এছাড়া ২০০৭ সালের শেষের দিকে বেইজিং-বান্ধব প্রধানমন্ত্রী আরও ইয়াসুও ফুকুদা জাপানে আবেকে প্রতিস্থাপন করেন এবং ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের গণচীন সফর করার সময় ভারত- গণচীনের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। [5] ২০১০ সালে জুলিয়া গিলার্ড অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলে অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উন্নততর সামরিক সহযোগিতা আবার শুরু হয় এবং এর সূত্র ধরে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরভাগের ডারউইন নগরীর কাছে এবং তিমুর সাগর ও লোম্বোক প্রণালীর অনতিদূরে মার্কিন মেরিন সেনাদের একটি ঘাঁটি স্থাপিত হয়। [6][7] একই সময় ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মালাবার মহড়া নামে যৌথ নৌ মহড়া আয়োজন অব্যাহত রাখে।
প্রতিষ্ঠিত | ২০০৭-২০০৮ ২০১৭ – বর্তমান (২০১৭-এর নভেম্বরের আলোচনার পরে পুনঃপ্রকাশিত) |
---|---|
ধরন | আন্তঃসরকারি নিরাপত্তা আলোচনা |
সদস্যপদ | অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
- চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপ (ইংরেজি: Quadrilateral Security Dialogue, কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়ালগ বা সংক্ষেপে QSD কিউএসডি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক কৌশলগত নিরাপত্তামূলক আলোচনা যা সদস্য দেশগুলির মধ্যে অর্ধ-নিয়মিত শীর্ষ সম্মেলন, তথ্য আদান প্রদান এবং সামরিক মহড়া সম্পন্ন করার মাধ্যমে বজায় রাখা হয়।[1] এই সংলাপটি অনেকসময় লোকমুখে "কোয়াড" (Quad) নামেও পরিচিত। ২০০৭ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মার্কিন উপ-রাষ্ট্রপতি ডিক চেনি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সমর্থন নিয়ে এই সংলাপটি শুরু করেছিলেন।[2] সংলাপটির সাথে সাথে সমান্তরালভাবে মালাবার মহড়া নামের একটি অভূতপূর্ব মাপের যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। এই কূটনৈতিক ও সামরিক আয়োজনটিকে বহু পর্যবেক্ষক চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির একটি প্রতিক্রিয়া হিসেবে গণ্য করেছিলেন। চীনা সরকার এই সংলাপের প্রত্যুত্তরে সংলাপের চারটি দেশের প্রতি আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জ্ঞাপন করে এবং এটিকে "নেটো"-র (উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট) এশীয় সংস্করণ হিসেবে অভিহিত করে।[3]
ম্যানিলা নগরীতে ২০১৭ সালের আসিয়ান সম্মেলনের সময় সংলাপের চার প্রাক্তন সদস্যরাষ্ট্র আবার সেটিকে পুনরুজ্জীবিত করার ব্যাপারে একমত হন। এসময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশ চারটির নেতৃত্বে ছিলেন। তারা ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে প্রতিরোধ করার ব্যাপারে কথা বলেন। চতুর্পাক্ষিক সংলাপ ও চীনের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনার কারণে কোনও কোনও মন্তব্যকারক এটিকে একটি আঞ্চলিক "দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধ" বা নতুন স্নায়ুযুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।[8][9][10][11][12]
২০২১ সালের মার্চ মাসে চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল "দ্য স্পিরিট অভ দ্য কোয়াড" (অর্থাৎ "কোয়াডের চালিকাশক্তি")। এটিতে সদস্যরাষ্ট্রগুলি "মুক্ত ও উন্মুক্ত ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল" এবং পূর্ব চীন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে একটি "নিয়মভিত্তিক সামুদ্রিক শৃঙ্খলার" একটি "রূপকল্পের অংশীদার" হিসেবে নিজেদের বর্ণনা করে। তাদের মতে চীনের সামুদ্রিক দাবীগুলি প্রতিহত করার জন্য শেষোক্তটি প্রয়োজন। তারা কোভিড-১৯ মহামারীর প্রত্যুত্তর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়[13] এবং এ উদ্দেশ্যে প্রথমবারের মত একটি "কোয়াড প্লাস" সম্মেলনের আয়োজন করে যাতে নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।[14][15]