গের্ড মুলার
জার্মান ফুটবলার (১৯৪৫–২০২১) / From Wikipedia, the free encyclopedia
গেরহার্ড মুলার (জার্মান: Gerd Müller, জার্মান উচ্চারণ: [ˈɡɛɐ̯t ˈmʏlɐ]; ৩ নভেম্বর ১৯৪৫ – ১৫ আগস্ট ২০২১; গের্ড মুলার নামে সুপরিচিত) একজন জার্মান পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার ছিলেন। ভক্তদের কাছে ডার বোম্বার (জাতির বোমারু)[2] ডাকনামে পরিচিত মুলার তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় বায়ার্ন মিউনিখ এবং পশ্চিম জার্মানি জাতীয় দলের হয়ে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন। তিনি মূলত কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন। বিশেষ করে ছয় গজ বাক্সের নিকটে এসে নির্ভুল গোল করার জন্য বিখ্যাত এই আক্রমণভাগের খেলোয়াড় বহু ফুটবল খেলোয়াড় এবং বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোলদাতা হিসেবে বিবেচিত হন।[2] ২০২২ সালে, তার স্মরণে ফ্রান্স ফুটবল মৌসুমের শীর্ষ গোলদাতার পুরস্কারটি গের্ড মুলার শিরোপা নামে নামকরণ করেছে।[3]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গেরহার্ড মুলার | |||||||||||||||||||
জন্ম | (১৯৪৫-১১-০৩)৩ নভেম্বর ১৯৪৫ | |||||||||||||||||||
জন্ম স্থান |
নর্ডলিঙ্গেন, মিত্র-অধিকৃত জার্মানি, পশ্চিম জার্মানি | |||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৫ আগস্ট ২০২১(2021-08-15) (বয়স ৭৫) | |||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৭৬ মিটার (৫ ফুট ৯+১⁄২ ইঞ্চি)[1] | |||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | আক্রমণভাগের খেলোয়াড় | |||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||
১৯৫৮–১৯৬৩ | ১৮৬১ নর্ডলিঙ্গেন | |||||||||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | |||||||||||||||||
১৯৬৩–১৯৬৪ | ১৮৬১ নর্ডলিঙ্গেন | ৩১ | (৫১) | |||||||||||||||||
১৯৬৪–১৯৭৯ | বায়ার্ন মিউনিখ | ৪৫২ | (৩৯৮) | |||||||||||||||||
১৯৭৯–১৯৮১ | ফোর্ট লডারডেল স্ট্রাইকার্স | ৭১ | (৩৮) | |||||||||||||||||
মোট | ৫৫৫ | (৪৮৭) | ||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||
১৯৬৬ | পশ্চিম জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ | ১ | (১) | |||||||||||||||||
১৯৬৬–১৯৭৪ | পশ্চিম জার্মানি | ৬২ | (৬৮) | |||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| ||||||||||||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
১৯৫৮–৫৯ মৌসুমে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে, জার্মান ফুটবল ক্লাব ১৮৬১ নর্ডলিঙ্গেনের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে মুলার ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এই দলের হয়ে খেলার মাধ্যমেই তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছিলেন। ১৯৬৩–৬৪ মৌসুমে, জার্মান ক্লাব ১৮৬১ নর্ডলিঙ্গেনের মূল দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলেন, যেখানে তিনি মাত্র ১ মৌসুম অতিবাহিত করেছিলেন; ১৮৬১ নর্ডলিঙ্গেনের হয়ে তিনি ৩১ ম্যাচে ৫১টি গোল করেছিলেন। অতঃপর ১৯৬৪–৬৫ মৌসুমে তিনি বায়ার্ন মিউনিখে যোগদান করেছিলেন, বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে তিনি ৪টি বুন্দেসলিগা শিরোপা এবং ৩টি ইউরোপিয়ান কাপ শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন। বায়ার্ন মিউনিখের ১৫ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ৬০৫ ম্যাচে ৫৬৩টি গোল করেছিলেন। সর্বশেষ ১৯৭৯–৮০ মৌসুমে, তিনি বায়ার্ন মিউনিখ হতে মার্কিন ক্লাব ফোর্ট লডারডেল স্ট্রাইকার্সে যোগদান করেছিলেন; ফোর্ট লডারডেল স্ট্রাইকার্সের হয়ে ৩ মৌসুম খেলার পর তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৬৬ সালে, মুলার পশ্চিম জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে পশ্চিম জার্মানির বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। পশ্চিম জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে মাত্র ১ ম্যাচে অংশগ্রহণ করার পর, তিনি একই বছরে পশ্চিম জার্মানির হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন; পশ্চিম জার্মানির জার্সি গায়ে তিনি সর্বমোট ৬২ ম্যাচে ৬৮টি গোল করেছিলেন। তিনি পশ্চিম জার্মানির হয়ে সর্বমোট ২টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৭০ এবং ১৯৭৪) এবং উয়েফা ইউরো ১৯৭২-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন, যার মধ্যে ১৯৭২ এবং ১৯৭৪ সালে হেলমুট শনের অধীনে যথাক্রমে উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন। পশ্চিম জার্মানির হয়ে তিনি প্রতি ম্যাচে গড়ে একটির চেয়ে অধিক গোল করেছেন এবং ২০২১ সালের ১১ই জুলাই অনুযায়ী, শীর্ষ ৪৮ খেলোয়াড়ের তুলনায় কম ম্যাচ খেলা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বকালের শীর্ষ গোলদাতাদের তালিকায় ২১তম স্থানে রয়েছেন; শীর্ষ গোলদাতাদের মধ্যে তার ম্যাচ প্রতি তৃতীয় সর্বোচ্চ গোল অনুপাত রয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে, মুলার বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন, যার মধ্যে ১৯৭০ সালে বালোঁ দ’অর[4] এবং ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালে বর্ষসেরা জার্মান ফুটবলারের পুরস্কার অন্যতম। এছাড়াও ১৯৭০ সালে মুলার বর্ষসেরা ইউরোপীয় ফুটবল খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১৯৭০ ফিফা বিশ্বকাপে দশটি গোল করে তিনি শীর্ষ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট জয়লাভ করেছেন। মুলার ফিফা বিশ্বকাপে ১৪ গোল করে ৩২ বছর ধরে সর্বকালের সর্বাধিক গোল করার রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন।[5] ১৯৯৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফুটবল হিস্টোরি অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (আইএফএফএইচএস) কর্তৃক অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান প্লেয়ার অব দ্য সেঞ্চুরি নির্বাচনে মুলার নবম এবং আইএফএফএইচএস-এর ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্য সেঞ্চুরি নির্বাচনে তিনি ১৩তম স্থান অধিকার করেছিলেন।[6] ২০০৪ সালে পেলে কর্তৃক নির্ধারিত বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জীবিত কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের তালিকা, ফিফা ১০০ তালিকায় মুলার স্থান পেয়েছেন।[2] দলগতভাবে, মুলার সর্বমোট ১৬টি শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন, যার মধ্যে ১৪টি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে এবং ২টি পশ্চিম জার্মানির হয়ে জয়লাভ করেছিলেন।