গাঁজা (মাদক)
সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ / From Wikipedia, the free encyclopedia
গাঁজা, সাধারণত মারিউয়ানা,[7]গুঞ্জি, গাঞ্জা,[8] সিদ্ধি ইত্যাদি নামে পরিচিত;a[›] মূলত গাঁজা উদ্ভিদের এক ধরনের প্রস্তুতি যা সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ এবং ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়।[9][10][11] ফার্মাকোলজিক্যালি, গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ উপাদান হল টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি); এটি উদ্ভিদের ৪৮৩টি পরিচিত যৌগের ১টি,[12] এছাড়াও ৮৪টি অন্যান্য ক্যানাবিনোয়েড্স রয়েছে,[13] যেমন ক্যানাবিডিওল (সিবিডি), ক্যানাবিনল (সিবিএন), টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিভারিন (টিএইচসিভি),[14][15] এবং ক্যানাবিগেরো (সিবিজি)। গাঁজা সাধারণত ধূমপান, বাষ্পীকরণ, খাবারের মধ্যে মিশ্রণ, এবং নির্যাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।[16]
গাঁজা | |
---|---|
উৎস উদ্ভিদ | সাতিভা গাঁজা, সাতিভা গাঁজা গঠন ইন্ডিকা, ক্যানাবিজ রুডের্লোইস |
উদ্ভিদের অংশ | ফুল |
ভৌগলিক উৎপত্তি | মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া[1] |
সক্রিয় উপাদান | টেটরাহাইড্রোক্যানাবিনল, ক্যানাবিডিওল, ক্যানাবিনল, টেটরাহাইড্রোক্যানাবিভারিন |
প্রধান উৎপাদনকারী | আফগানিস্তান,[2]
কানাডা,[3] চীন, কলম্বিয়া,[4] ভারত,[2] জ্যামাইকা,[2] লেবালন,[5] মেক্সিকো,[6] মরক্কো,[2] নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে,[6] স্পেন,[2] থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র[2] |
আইনি অবস্থা |
|
গাঁজা প্রায়ই এর সাইকোঅ্যাক্টিভ এবং শারীরবৃত্তীয় প্রভাবের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন একটি "উচ্চ" বা "ভেলকা" অনুভূতি হিসাবে, সাধারণ উপলব্ধি পরিবর্তন, রমরমা (উচ্চমানের মেজাজ) এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি করে।[16][17] ধূমপানের মাধ্যমে সেবনে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রভাবগুলির সূচনা হয়, অন্যদিকে রান্না করে খাওয়া হলে প্রায় ৩০ থেকে ৬০ মিনিট এর প্রভাব উপলব্ধ করা যায়।[16][18] উভয় ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পাঁচ-ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।[18] সম্ভাব্য স্বল্পমেয়াদী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি হ্রাস, মুখগহ্বরে শুষ্কতা, অনভিজ্ঞের মতোন আচরণ করা, চোখ লাল হওয়া, এবং প্যারানয়া (মস্তিষ্কবিকৃতিবিশেষ) বা উদ্বেগ অনুভূতি হওয়া।[16][19][20] সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, মানসিক ক্ষমতা হ্রাস- যারা তের থেকে ঊনিশ বছর বয়সে সেবন শুরু করেছে, এবং শিশুদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় যাদের মা গর্ভাবস্থায় গাঁজা সেবন করেন।[16] গবেষণায় গাঁজা ব্যবহার এবং মানসিক রোগের ঝুঁকি বিষয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক পাওয়া গেছে;,[21] যদিও কর্যিকারণ এবং প্রভাব সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে।[22]
আধুনিককালে গাঁজা বিনোদনমূলক বা চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রাথমিককালে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবেও খ্রিষ্টপূর্ব ৩ হাজার বছর পূর্বে এর ব্যবহার হত।[23] ২০১৩ সালের হিসেবে, ১২৮ এবং ২৩২ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে গাঁজার ব্যবহার অনুমান করা যায় (বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ১৫ এবং ৬৫ বছরের মধ্যে ২.৭% থেকে ৪.৯%)।[24] ২০১৫ সালের হিসেবে, ৪৬% মার্কিনী গ্যাঁজা ব্যবহার করে, যা ২০১৬ সালে ৫১% বৃদ্ধি পেয়েছে।[25] প্রায় ১২% বিগত বছরের মধ্যে এর ব্যবহার করেছেন, এবং ৭.৩% বিগত মাসে এর ব্যবহার করেন।[26] বিশ্বের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উভয় ক্ষেত্রেই এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত অবৈধ ড্রাগ।[16][24]
প্রাথমিভাবে ৩য় সহস্রাব্দের বিসি থেকে গাঁজার ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়।[23] বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে থেকে, গাঁজা আইনি সীমাবদ্ধতার বিষয় হয়ে ওঠে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই গাঁজার মালিকানা, ব্যবহার, এবং বিক্রয় অবৈধ।[27][28] চিকিৎসাবিজ্ঞানে মারিজুয়ানা বা গাঁজা মূলত চিকিৎসক-প্রস্তাবিত ভেষজ থেরাপি হিসাবে গাঁজা উদ্ভিদের ব্যবহার বোঝায়, যা ইতোমধ্যে কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, স্পেন, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি রাজ্যে স্থান করে নিয়েছে।[29] ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গাঁজার ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।[30] এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনিকরণের জন্য সহায়তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিনোদনমূলক বা চিকিৎসা সেবার জন্য গাঁজার বৈধকরণ করা হয়েছে।[31]