গণেশের পত্নীগণ
পুরাণে বর্ণিত গণেশের দাম্পত্য সঙ্গী / From Wikipedia, the free encyclopedia
হিন্দু দেবতা গণেশের বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন-সংক্রান্ত বিষয়টি বিভিন্ন পুরাণে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বর্ণিত হয়েছে। পাশ্চাত্য গবেষকেরা এই বিষয়টি যথেষ্ট আগ্রহ-সহকারে পর্যালোচনাও করেছেন।[1] এক-একজন পত্নীর সঙ্গে গণেশের এক-এক ধরনের সম্পর্ক সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এক শ্রেণির পৌরাণিক উপাখ্যানে গণেশকে অবিবাহিত ব্রহ্মচারী রূপে চিত্রিত করা হয়েছে। আবার মূলধারার অপর এক শ্রেণির উপাখ্যানে বুদ্ধি (বোধশক্তি), সিদ্ধি (অলৌকিক শক্তি) ও ঋদ্ধির (সমৃদ্ধি) ধারণাগুলিকে গণেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে এই গুণগুলিকে দেবীর আকারে মূর্তিরূপ দান করে গণেশের পত্নীরূপেও কল্পনা করা হয়েছে।[2] এক ধারার লোকাচারে আবার গণেশ বিদ্যার দেবী সরস্বতী ও সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে একযোগেও পূজিত হন। বাংলার প্রচলিত লোকবিশ্বাসে দুর্গাপূজার অঙ্গ হিসেবে পূজিত কলাবউকেও গণেশের পত্নী জ্ঞান করা হয়।[3] সাধারণভাবে গণেশের পত্নীদের দেবতার ‘শক্তি’ অর্থাৎ সৃজনী শক্তির মূর্তিরূপ মনে করা হয়।
সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত লোকবিশ্বাসগুলির মধ্যে স্থানীয় পার্থক্য, পৌরাণিক উপাখ্যানের শ্রেণিগুলির রচনাকাল এবং সংশ্লিষ্ট উপাখ্যানগুলি কোন্ ধর্মীয় পরম্পরার অন্তর্গত তার দিকে দৃষ্টি আরোপ করলে এই শ্রেণিগুলির মধ্যে পার্থক্যের বিষয়টি সহজে বোধগম্য হয়। আবার ভক্তেরা গণেশের কোন্ ধ্যানমূর্তিটি অবলম্বন করছেন তার ভিত্তিতেও এই পার্থক্যটি প্রকট হয়ে উঠেছে। এইভাবেই একদিকে যেমন গণেশের শিশুমূর্তির (বাল-গণপতি, সংস্কৃত: बाल गणपति; bālagāņapati) পূজা প্রচলিত হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই প্রসার লাভ করেছে তান্ত্রিক দেবতা রূপে গণেশের পূজা।[4][5]