ক্যারোটিনয়েড
From Wikipedia, the free encyclopedia
ক্যারোটিনয়েড এক ধরনের অর্গানিক পিগমেন্ট। প্রধানত, উদ্ভিদ এবং এ্যলজি থেকে এই জৈব রঞ্জক বস্তু উৎপন্ন হয় তবে কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া, আর্কিয়া এবং ফাংগাস থেকেও এটা উৎপন্ন হতে পারে। মিষ্টি কুমড়া, দানা-শস্য, গাজর জাতীয় সবজি, টমেটো, হলুদ পাখি, স্যামন মাছ, লবস্টার, চিংড়ি, ড্যাফোডিল ইত্যাদির যে বৈচিত্রপূর্ণ এবং মনমুগ্ধকর রং আমরা দেখি তা এই ক্যারোটিন জাতীয় রাসায়নিক এর কারণেই হয়ে থাকে। প্রকৃতিতে এখন পর্যন্ত এক হাজার এক শত বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটিনয়েড চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত এই সকল ক্যারোটিনয়েড সমূহ কে প্রধানত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয় যথা: জ্যানথোফিল এবং ক্যারোটিন। ক্যারোটিন অনুতে শুধুমাত্র হাইড্রোজেন এবং কার্বন থাকে অন্যদিকে জ্যানথোফিল অনুতে হাইড্রোজেন এবং কার্বন ছাড়া অক্সিজেনও থাকে 2।
তারা (ক্যারোটিনয়েড) সকলেই টেট্রাটার্পেনের জাতক অর্থাৎ তারা সকলেই আট একক আইসোপ্রিন মনোমার সংযুক্ত হয়ে উৎপন্ন হয় এবং উৎপন্ন অনুতে ৪০ টি কার্বন পরমাণু থাকে। ক্যারোটিনয়েড জাতীয় যৌগগুলো সাধারণত বেগুনি থেকে সবুজ রঙের আলো শোষণ করে, যাদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৫৫০ ন্যানোমিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। আর এ কারণেই এই যৌগগুলো গাড়ো হলুদ, কমলা অথবা লাল হয়ে থাকে। বসন্তকালে উদ্ভিদের পাতায় যে বৈচিত্র পূর্ণ রং দেখা যায় মোটামুটি ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ গাছের বেলায় তার প্রধান উপাদান হলো এই ক্যারোটিনয়েড, কিন্তু অনেক উদ্ভিদ-রং, বিশেষ করে লাল এবং বেগুনী, পলিফিনোল ধরনের হয়ে থাকে।
এ্যলগী এবং উদ্ভিদে ক্যারোটিনয়েড দুইটা প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে: তারা ফটো সিনথিসিস এর জন্য আলোক শক্তি শোষণ করে এবং অতিরিক্ত বা তীব্র সূর্যের আলোয় নন-ফটোকেমিক্যাল কোয়েনচিং4 পদ্ধতিতে ক্লোরোফিল কে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করে। যে সকল ক্যারোটিনে অপ্রতিস্থাপিত বিটা আয়োনোন রিং থাকে যার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বিটা-ক্যারোটিন, আলফা-ক্যারোটিন, বিটা-ক্রিপ্টোজ্যানথিন এবং গামা-ক্যারোটিন তাদের ভিটামিন-এর ন্যায় কার্যকারিতা আছে, তার অর্থ হল তারা রেটিনলে পরিবর্তিত বা অবস্থান্তরিত হতে পারে। মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণীর চোখের ম্যাকুলাতে রঞ্জনবস্তু হিসাবে লুটিন বিদ্যমান, মেসোজ্যানথিন এবং জিয়া- জ্যানথিন বিদ্যমান এবং ২০১৬ থেকে দর্শন ইন্দ্রিয়ের কার্যকারিতায় এই সকল বস্তুর ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলমান আছে।[3,5]