কামালবাদ
তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আদর্শ / From Wikipedia, the free encyclopedia
কামালবাদ ( তুর্কি: Kemalizm)[1] বা আতাতুর্কবাদ (তুর্কি: Atatürkçülük, Atatürkçü düşünce) বা ছয়টি তীর (তুর্কি: Altı Ok) হল তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের রাজনৈতিক ভাবাদর্শ ও তুরস্কের রাষ্ট্রীয় মতবাদ। [2] ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার পরেই মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক কর্তৃক এই আতাতুর্কবাদের বাস্তবায়ন ঘটে এবং তিনি নতুন তুর্কি রাষ্ট্রকে তাঁর উসমানী পূর্বসূরি থেকে পৃথক করার জন্য পরিকল্পিত ব্যাপক রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংস্কারের মাধ্যমে কামালবাদকে সংজ্ঞায়িত করেন এবং এর মাধ্যমেই একটি পশ্চিমাশৈলীর ধাঁচে আধুনিক জীবনধারাকে আলিঙ্গন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।[3] এ লক্ষ্যে পশ্চিমা ধাঁচে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠা, বিজ্ঞানের রাষ্ট্রীয় সমর্থন, শিক্ষা পশ্চিমাকরণ, লৈঙ্গিক সমতা, অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানসহ বহু বিষয়ে পরিবর্তন ঘটানো হয়। আতাতুর্ক রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন এই নীতিগুলির বেশিরভাগই তুরস্কে চালু এবং প্রয়োগ করা হয়েছিল।
তুর্কি সাম্রাজ্যের আসন্ন পতন এড়াতে ভিন্ন সংস্কারের অধীনে উসমানীয় সাম্রাজ্যের শেষদিকে আতাতুর্কবাদের মূল ধারণাসমূহের প্রচলন ঘটে; প্রধানত ১৯শ শতকের তানযিমাত সংস্কারের শুরুতে।[4] মধ্য শতাব্দীর তরুণ উসমানীয়রা তাঁদের সাম্রাজ্যের ক্রমবর্ধমান জাতিগত জাতীয়তাবাদকে দমন করতে ইসলামি প্রভাব বজায় রেখে প্রথমবারের মত সীমিত গণতন্ত্র চালু করার জন্য উসমানীয় জাতীয়তাবাদ বা উসমানীয়বাদের আদর্শ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তরুণ তুর্কিরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার সময় তুর্কি জাতীয়তাবাদের পক্ষে উসমানীয় জাতীয়তাবাদ ত্যাগ করে এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর কামাল তরুণ উসমানীয় এবং তরুণ তুর্কি উভয়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে,[5] সেই সাথে তাঁদের সাফল্য ও ব্যর্থতা দেখে ১৯২৩ সালে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র ঘোষণার নেতৃত্ব দেন এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও তুর্কি জাতীয়তাবাদকে তার আদর্শে মূলনীতি বানান।[6]