ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ
বিদ্যমান কোনও ঔষধকে নতুন কোনও রোগের চিকিৎসার লক্ষ্যে কাজে লাগানো / From Wikipedia, the free encyclopedia
ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ (ইংরেজি: Drug repurposing) বা ঔষধের লক্ষ্য পুনঃস্থিরকরণ (Drug repositioning) বলতে বাজারে ইতিমধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ঔষধ অনুসন্ধান করে সেগুলির কোনওটিকে নতুন ও ভিন্ন কোনও রোগের নিরাময় বা চিকিৎসার লক্ষ্যে কাজে লাগানোকে বোঝায়।[1][2]
ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ একাধিক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে। যেমন ভায়াগ্রা বা সিলডেনাফিল শিশ্নোত্থান বৈকল্য এবং ফুসফুসীয় উচ্চ রক্তচাপ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয় এবং থ্যালিডোমাইডকে কুষ্ঠরোগ ও রক্তের দেহরসীয় কোষের ক্যান্সার (Multiple myeloma) রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।[2][3] চাগাস রোগের জন্য পোসাকোনাজল ও রাভুকোনাজল ঔষধগুলির রোগীভিত্তিক পরীক্ষণ (Clinical trial) সম্পাদিত হয়েছে। ছত্রাকরোধী ঔষধ ক্লোট্রিমাজল ও কিটোকোনাজলকে ট্রিপানোজোম-নিরোধক চিকিৎসায় প্রয়োগ করা যায় কি না, তা নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে।[4]
অবহেলিত রোগের জন্য ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ একটি "সার্বজনীন কৌশল", কেননা এতে রোগীভিত্তিক পরীক্ষণের জন্য আবশ্যকীয় অনেকগুলি দশা বা ধাপ এড়ানো যায়, ফলে ঔষধের বাজারে পৌঁছে দেবার সময় ও অর্থব্যয় উভয়ই হ্রাস পায়। দ্বিতীয়ত ঔষধশিল্পে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সরবরাহ শৃঙ্খলের সাহায্যে ঔষধটির সূত্রায়ন ও বিতরণ সহজতর হয়। তৃতীয়ত অন্যান্য জ্ঞাত ঔষধের সাথে সম্মিলিত প্রয়োগের মাধ্যমে অধিকতর কার্যকরী চিকিৎসা প্রদানের সম্ভাবনা থাকে। চতুর্থত, পুনরুদ্দিষ্টকরণের সুবাদে পুরাতন ঔষধসমূহের নতুন কর্মপদ্ধতি আবিষ্কার হতে পারে এবং নতুন শ্রেণীর ঔষধ উদ্ভাবন করা হতে পারে।[5] পঞ্চমত, প্রারম্ভিক গবেষণার ধাপগুলিতে যে বাধা বিপত্তি থাকে, সেগুলি অনুপস্থিত থাকে বলে ঔষধনির্মাণ প্রকল্পটি দ্রুত রোগভিত্তিক গবেষণার ধাপে অগ্রসর হতে পারে।[6]
তবে ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণের কিছু খারাপ দিকও আছে। প্রথমত, নতুন রোগের জন্য ঔষধের মাত্রা সাধারণত আদি রোগের জন্য ব্যবহৃত মাত্রা অপেক্ষা ভিন্ন হয়ে থাকে এবং এমতাবস্থায় আবিষ্কারক দলকে রোগীভিত্তিক পরীক্ষণের প্রথম দশা থেকে কাজ শুরু করতে হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে নতুন ঔষধ আবিষ্কারের বিপরীতে পুরাতন ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ প্রক্রিয়ার কোনও আলাদা সুবিধা থাকে না।[6] দ্বিতীয়ত, নতুন রোগে আক্রান্ত এলাকাগুলিতে বিদ্যমান ঔষধসমূহের নতুন করে সূত্রায়ন ও বিতরণের ক্ষেত্রে ঔষধবিজ্ঞানী ও বিষক্রিয়াবিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণের পরিমাণ বিরল।[6] তৃতীয়ত, ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণ সংক্রান্ত আইনি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের অভাব, ইন্টারনেট বা অন্যকোনও প্রকাশনা মাধ্যমে ঔষধ পুনরুদ্দিষ্টকরণের তথ্য প্রকাশ এবং পুনরুদ্দিষ্টকৃত ঔষধের নতুনত্বের ব্যাপ্তি, ইত্যাদি কারণে পুনরুদ্দিষ্টকৃত ঔষধের কৃতিস্বত্ব (পেটেন্ট) সংক্রান্ত প্রশ্নগুলি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।[6]