ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকট ২০২১
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকট ২০২১ হলো ২০২১ সালের মে মাসে সংঘটিত একটি সংঘাত। ২১ মে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ফলে এর সমাপ্তি ঘটে। এই সংঘাতকে বিক্ষোভ, পুলিশের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ, হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ কর্তৃক ইসরায়েলে রকেট হামলা এবং গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বিমান হামলা দ্বারা সূচিত করা হয়। ৬ মে শেখ জাররাহতে ছয়টি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের বিষয়ে ইসরায়েলের সুপ্রিমকোর্টের প্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের কারণে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমে বিক্ষোভ শুরু করে। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে, ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত এই এলাকাটি ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোর একটি অংশ যা বর্তমানে ইসরায়েলের দখলে রয়েছে।[16][17] বিক্ষোভ দ্রুত ইহুদি ও ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘাতে পরিণত হয়। ৭ মে ইসরায়েলি পুলিশ ইহুদি ধর্মের পবিত্রতম স্থান টেম্পল মাউন্টে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলা চালায়।[18] পুলিশ পাথর নিক্ষেপকারী ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট এবং স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে।[18][19]
ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকট ২০২১ | |||
---|---|---|---|
ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত-এর অংশ | |||
তারিখ | ৬–২১ মে ২০২১ (২ সপ্তাহ ও ১ দিন) | ||
অবস্থান | |||
কারণ |
| ||
অবস্থা | যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়; উভয় পক্ষই জয় দাবি করে[1]
| ||
নাগরিক সংঘাতের দলসমূহ | |||
| |||
নেতৃত্ব দানকারীগণ | |||
| |||
ক্ষয়ক্ষতি | |||
| |||
৭২,০০০+ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত[15] |
ইসলামের পবিত্র রাত লাইলাতুল কদর ও জেরুসালেম দিবসের ছুটির দিনে ডানপন্থী ইহুদি জাতীয়তাবাদীদের পরিকল্পিত মিছিলের আগে (মিছিল পরে বাতিল করা হয়) এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।[19] এই ঘটনায় ৩০০ জনেরও বেশি লোক আহত হন, যাদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক।[20] ফলে ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাভিচাই ম্যান্ডেলব্লিট উত্তেজনা কমাতে চাওয়ায় সুপ্রিমকোর্টের রায় ৩০ দিন বিলম্বিত হয়।[2]
১০ মে হামাস ইসরায়েলকে টেম্পল মাউন্ট কমপ্লেক্স ও শেখ জাররাহ থেকে নিরাপত্তা বাহিনী প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেয়। একই দিনে হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ গাজা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ শুরু করে, যেগুলো একাধিক বাসভবন ও একটি স্কুলে আঘাত হানে।[21][22] পরবর্তীতে ইসরায়েল গাজার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায়। ফলে ১৬ মে নাগাদ প্রায় ৯৫০টি হামলায় চারটি উঁচু টাওয়ারসহ ১৮টি ভবন, ৪০টি বিদ্যালয় ও চারটি হাসপাতাল সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়।[23][24] আল-শাতি শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালানো হয়।[25] এছাড়াও ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৯টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়।[26]
এই সহিংসতার ফলে গাজায় ৬৬ জন শিশুসহ কমপক্ষে ২৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।[27] এবং ফিলিস্তিনি রকেট হামলায় ইসরায়েলে একজন শিশুসহ মোট ১২ জন নিহত হন। ১১ মে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায় ফিলিস্তিনি হতাহতের মধ্যে অন্তত ১৫ জন হামাসের সদস্য এবং গাজা ভূখণ্ডে ভুল রকেট উৎক্ষেপণের ফলে কিছু ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।[28] ২০২১ সালের ২০ মে ফিলিস্তিন জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমপক্ষে ১,৯০০ ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হন।[22] অন্যদিকে, ১২ মে ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী কমপক্ষে ২০০ জন ইজরায়েলি আহত হন।[29] ২০২১ সালের ১৯ মে অনুযায়ী, এই সংঘাতে কমপক্ষে ৭২,০০০ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়।[30] ১৩ মে হামাস প্রথম যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করেন।[31] ১৮ মে মিশর, জর্ডান ও ফ্রান্স যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব দাখিলের ঘোষণা দেয়।[32] ২০ মে অনুযায়ী, ২১ মে রাত ২টা (জিএমটি ২০ মে রাত ১১টা) থেকে ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।[33]