ইরফান খান
ভারতীয় অভিনেতা / From Wikipedia, the free encyclopedia
ইরফান খান (৭ জানুয়ারি ১৯৬৭ - ২৯ এপ্রিল ২০২০) ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তিনি তার অতুলনীয় ও অকল্পনীয় সহজাত অভিনয় ক্ষমতার জন্য পরিচিত। বলিউড, ব্রিটিশ ভারতীয়, হলিউড এবং একটি বাংলাদেশি ও তেলুগু চলচ্চিত্রে তিনি কাজ করছেন।[3][4] ৩৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি ৫০টির অধিক দেশীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। চলচ্চিত্র সমালোচক, সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী বলে গণ্য করে থাকেন। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত করে।
ইরফান খান | |
---|---|
জন্ম | সাহেবজাদা ইরফান আলী খান[1] (১৯৬৭-০১-০৭)৭ জানুয়ারি ১৯৬৭[2] |
মৃত্যু | ২৯ এপ্রিল ২০২০(2020-04-29) (বয়স ৫৩) |
মৃত্যুর কারণ | মলাশয়ের ক্যান্সারজনিত জটিলতা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | রাষ্ট্রীয় নাট্য বিদ্যালয় |
পেশা | চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক |
কর্মজীবন | ১৯৮৫–২০২০ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুতপা সিকদার (বি. ১৯৯৫; মৃ. ২০২০) |
সন্তান | ২ |
সম্মাননা | পদ্মশ্রী সম্মাননা (২০১১) |
বলিউডে তার অভিষেক ঘটে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার মনোনীত সালাম বম্বে! (১৯৮৮) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি নাট্যধর্মী হাসিল (২০০৩) ও মকবুল (২০০৪) চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন এবং প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ খল অভিনয়শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। নাট্যধর্মী লাইফ ইন আ... মেট্রো (২০০৭) চলচ্চিত্রটির সফলতা তার কর্মজীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং এই কাজের জন্য তিনি প্রশংসিত হন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন। ক্রীড়া নাট্যধর্মী পান সিং তোমার (২০১১) চলচ্চিত্রে ক্রীড়াবিদ পান সিং তোমারের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি সমাদৃত হন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন। শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে বাফটা পুরস্কার মনোনীত দ্য লাঞ্চবক্স (২০১৩) চলচ্চিত্রে তার অভিনয় বৈশ্বিক সমালোচক ও দর্শকদের প্রশংসা অর্জন করে। এরপর তিনি আরও কয়েকটি বাণিজ্যিকভাবে সফল ও সমাদৃত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, সেগুলো হল হায়দার (২০১৪), পিকু (২০১৫), তালবার (২০১৫), ও ব্ল্যাকমেইল (২০১৮)। তার অভিনীত সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি চলচ্চিত্র হলো হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী হিন্দি মিডিয়াম (২০১৭), এটি ভারত ও চীনে স্লিপার হিট তকমা লাভ করে। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন।
দেশীয় চলচ্চিত্রে বাইরে তিনি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে দ্য ওয়ারিয়র (২০০১), দ্য নেমসেক (২০০৬), দ্য দার্জিলিং লিমিটেড, একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র স্লামডগ মিলিয়নিয়ার (২০০৮), নিউ ইয়র্ক, আই লাভ ইউ (২০০৯), দি অ্যামেজিং স্পাইডার-ম্যান (২০১২), লাইফ অব পাই (২০১২), জুরাসিক ওয়ার্ল্ড (২০১৫), ও ইনফার্নো (২০১৬)। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তার অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে $৩.৬৪ বিলিয়ন আয় করে। ২০১৮ সালে তিনি নিউরো এন্ডোক্রিন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেন। সুস্থ্য হয়ে ফিরে এসে তিনি আংরেজি মিডিয়াম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু পুনরায় মলাশয়ের ক্যান্সারের জটিলতায় তিনি ২০২০ সালের ২৯শে এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[5]