আইসোটোপ
একই পারমাণবিক সংখ্যা কিন্তু ভিন্ন ভর সংখ্যা বিশিষ্ট নিউক্লাইড / From Wikipedia, the free encyclopedia
যেসব পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা (p) সমান; কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা (n) অসমান হওয়ায় ভর সংখ্যা (n + p) অসমান হয়, এদেরকে আইসোটোপ বলে।সমস্থানিক বা আইসোটোপ হলো একই মৌলিক পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা একই তবে নিউক্লিয়াসে নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন। সমস্থানিকসমূহের পারমাণবিক সংখ্যা একই কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন। প্রোটনের সংখ্যা একই থাকায় সমস্থানিকসমূহের রাসায়নিক ও ভৌত ধর্মে অনেক সাদৃশ্য বিদ্যমান। যেমন- কার্বন-১২, কার্বন-১৩, কার্বন-১৪ তিনটি সমস্থানিক যারা একই পদার্থ কার্বন হতে উৎপন্ন, এদের ভর সংখ্যা যথাক্রমে ১২, ১৩ ও ১৪। কার্বনের পারমাণবিক সংখ্যা ৬, তাই এসকল সমস্থানিকে নিউট্রনের সংখ্যা হল যথাক্রমে ১২-৬=৬, ১৩-৬=৭ এবং ১৪-৬=৮। সংক্ষেপে, সমস্থানিকসমূহ ভিন্ন নিউট্রন সংখ্যা বিশিষ্ট একই পদার্থের পরমাণু। এদের প্রোটন ও ইলেকট্রন সংখ্যা একই।
প্রোটন ও নিউট্রনের সুনির্দিষ্ট বিন্যাস সংবলিত নিউক্লিয়াসকে বলা হয় নিউক্লাইড। নিউক্লাইডের ধারণা রাসায়নিক বৈশিষ্টের চেয়ে নিউক্লিয়ার বৈশিষ্টকে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে, পক্ষান্তরে সমস্থানিক করে তার উল্টোটি। নিউট্রনের সংখ্যা পরমাণুর নিউক্লিয়ার বৈশিষ্টকে অনেক বেশি প্রভাবিত করলেও তা রাসায়নিক বৈশিষ্টকে অতটা প্রভাবিত করে না। যেহেতু সমস্থানিক ঐতিহাসিকভাবে সুপরিচিত, তাই যে ক্ষেত্রে যেখানে নিউক্লাইড ব্যবহার করা অধিকতর যুক্তিসঙ্গত কোন কোন সময় সেসব জায়গায় সমস্থানিক ব্যবহৃত হয়, যেমন- নিউক্লিয়ার প্রযুক্তিতে।
কোন সমস্থানিকের সংকেত প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট মৌলের নামের পরে একটি হাইফেন চিহ্নের পর ভর সংখ্যা উল্লেখ করতে হয় (যেমন- হিলিয়াম-৩, কার্বন-১২, আয়োডিন-১৩১, ইউরেনিয়াম-২৩৮)। কোন মৌলকে প্রকাশের ক্ষেত্রে ঐ মৌলের সংকেতের বামে উপরে ভর সংখ্যা, বাম পাশে নিচে পারমাণবিক সংখ্যা উল্লেখ করা হয়।
কিছু সমস্থানিক তেজস্ক্রিয়, এদেরকে বলে তেজস্ক্রিয় সমস্থানিক বা রেডিও নিউক্লাইড। আবার কিছু সমস্থানিক তেজস্ক্রিয় ক্ষয় প্রদর্শন করে না, এদেরকে বলে স্থায়ী সমস্থানিক। যেমন- 14
6C
একটি কার্বনের তেজস্ক্রিয় সমস্থানিক আবার 12
6C
এবং 13
6C
কার্বনের স্থায়ী সমস্থানিক। প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন সমস্থানিকের সংখ্যা ৩৩৯,[1] এদের মধ্যে ২৮ টি হল প্রাইমর্ডিয়াল বা আদিম এবং ২৫৯ টি স্থায়ী সমস্থানিক।[1] প্রাইমোর্ডিয়াল সমস্থানিক হল সেসব সমস্থানিক যেগুলো পৃথিবী সৃষ্টির পূর্ব হতে বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত একই রূপে অক্ষত রয়েছে। ধারণা করা হয় যে কিছু কিছু স্থায়ী সমস্থানিকও তেজস্ক্রিয় যাদের অর্ধায়ু বা হাফ-লাইফ অত্যন্ত দীর্ঘ। প্রাকৃতিক ও কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট মোট সমস্থানিকের সংখ্যা হল ৩১০০ টি।[2]