আইনতত্ত্ব
আইন তত্ত্ব এবং অধ্যায়ন / From Wikipedia, the free encyclopedia
আইনশাস্ত্র আইনের তত্ত্ব এবং দর্শন নিয়ে আলোচনা করে। এর মূল লক্ষ্য হলো আইন কী এবং আইন কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা। এক্ষেত্রে সামাজিক সম্পর্কগুলোকে কীভাবে আইন বুঝে, এবং আইনের মধ্যে নিহিত মূল্যবোধগুলো কী - এই ধরনের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। আইনশাস্ত্রের আলোচনাগুলো মূলত দার্শনিক হলেও এতে সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, রাজনীতি এবং অর্থনীতি বিষয়ক দৃষ্টিকোণও যুক্ত হয়ে থাকে।
আধুনিক আইনশাস্ত্রের যাত্রা শুরু হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে প্রাকৃতিক আইন, বেসামরিক আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রাথমিক নীতিগুলোর ভিত্তিতে। আইনের দর্শনকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতিতে যে বিশ্বাস, এবং আইন-সম্পর্কিত দার্শনিক চিন্তাধারা যেগুলো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে চায়।[1]
আইনের সমসাময়িক দর্শন আইন ও আইনি ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর পাশাপাশি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইনের বিষয়টিও নিয়ে কাজ করে, এবং যে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আইন বিদ্যমান সেটার সাথেও এর সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রাচীন প্রাকৃতিক আইন মতবাদ বিশ্বাস করে যে আইনপ্রণেতাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখতে কিছু যুক্তিভিত্তিক ও উদ্দেশ্যমূলক সীমা রয়েছে। আইনের ভিত্তি যুক্তির মাধ্যমে পাওয়া যায়, এবং মানুষের তৈরি আইনগুলোর শক্তি এই প্রাকৃতিক আইন থেকেই আসে। বিশ্লেষণধর্মী আইনশাস্ত্র প্রাকৃতিক আইনের মতো, 'আইন কী' এবং 'আইন কী হওয়া উচিত' - এই দুটি প্রশ্নের মিশ্রণকে প্রত্যাখ্যান করে। আইনতত্ত্বের এই শাখা মনে করে, আইনকে বর্ণনা করার সময় নিরপেক্ষতা ও সঠিক ভাষার ব্যবহার করা জরুরী। আইন সংক্রান্ত ধারণার মধ্যে 'আইনি বাস্তববাদ' এই নীতির সাথে যুক্ত, যা তর্ক করে যে বাস্তব জগতে আইনের প্রয়োগই আইনকে সংজ্ঞায়িত করে। আইনপ্রণেতা, আইনজীবী এবং বিচারকরা যেভাবে আইনকে প্রয়োগ করেন, আইন ততটুকুই শক্তিশালী। পরীক্ষামূলক আইনশাস্ত্রের (experimental jurisprudence) থেকে আলাদাভাবে, প্রাকৃতিক আইন এবং বিশ্লেষণমূলক আইনশাস্ত্র দুটোই আসলে দার্শনিক বিশ্লেষণ-প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। নীতি-নির্ধারণী আইনতত্ত্ব হল আইন সংক্রান্ত 'মূল্যায়নমূলক' তত্ত্ব। আইনের উদ্দেশ্য কী সেটি বা আইনে কোন নৈতিক বা রাজনৈতিক তত্ত্বের ভিত্তি তৈরি হবে, এই প্রশ্নগুলো নিয়ে এটি কাজ করে। এটি শুধু “আইন কী?” এই প্রশ্নের উত্তরই খোঁজে না, বরং এই উত্তর নির্ধারণেও মনোযোগী হয় যে আইনের যথাযথ কাজ কী হওয়া উচিত, কোন ধরণের কাজে আইনি শাস্তি প্রযোজ্য হওয়া উচিত, এবং কী ধরনের শাস্তির অনুমতি দেওয়া উচিত।[2][3][4]