অ্যান্টিকিথেরা যন্ত্রকৌশল
From Wikipedia, the free encyclopedia
অ্যান্টিকিথেরা যন্ত্রকৌশল (/ˌæntɪkɪˈθɪərə/ AN-tih-kih-THEER-ə) হল একটি প্রাচীন গ্রীক হস্তচালিত অরেরি, যেটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের অবস্থান এবং চন্দ্র-সূর্য গ্রহণ সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত অ্যানালগ কম্পিউটারের[1][2][3] প্রাচীনতম উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত।[4][5][6] প্রাচীন অলিম্পিক গেমসের অলিম্পিয়াড চক্রের সাথে এর মিল থাকায় ধারণা করা হয় এটি অ্যাথলেটিক গেমের চার বছরের চক্রকে ট্র্যাক করতেও ব্যবহার করা হতে পারে।[7][8][9]
অ্যান্টিকিথেরা যন্ত্রকৌশল | |
---|---|
Μηχανισμός Αντικυθήρων | |
লিখন | প্রাচীন গ্রিক |
আবিষ্কৃত | ১৯০১ অ্যান্টিকিথেরা, গ্রিস |
নির্মিত | খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী |
সময়কাল / সংস্কৃতি | হেলেনিস্টিক |
বর্তমান অবস্থান | জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, এথেন্স |
প্রত্নবস্তুটি ১৯০১ সালে গ্রিক দ্বীপ অ্যান্টিকিথেরার উপকূলে একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে পাওয়া যায়।[10][11] ১৯০২ সালের ১৭ মে, প্রত্নতাত্ত্বিক ভ্যালেরিওস স্টাইস এটিতে একটি গিয়ার চিহ্নিত করেছিলেন।[12] ৩৪ সেমি × ১৮ সেমি × ৯ সেমি (১৩.৪ ইঞ্চি × ৭.১ ইঞ্চি × ৩.৫ ইঞ্চি) (অনিশ্চিত),[13][14] আকারের কাঠের ফ্রেমযুক্ত কেসের অবশিষ্টাংশে থাকা যন্ত্রটি, একটি বস্তুখণ্ড হিসাবে পাওয়া গেছে। এরপর তিনটি প্রধান খণ্ডে বিভক্ত করা হলেও পরবর্তিতে সংরক্ষণের জন্য সেগুলি ৪২টি পৃথক খণ্ডে বিভক্ত করা হয়। টুকরোগুলির মধ্যে চারটিতে গিয়ার রয়েছে, অন্য অনেকগুলিতে শিলালিপি পাওয়া যায়।[13][14] বৃহত্তম গিয়ারটি প্রায় ১৩ সেন্টিমিটার (৫.১ ইঞ্চি) ব্যাসেকৃতির এবং এতে মূলত ২২৩টি দাঁত ছিল।[15]
২০০৮ সালে, কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক এডমন্ডস এবং টনি ফ্রিথের নেতৃত্বে একটি দল আধুনিক কম্পিউটার এক্স-রে টমোগ্রাফি এবং উচ্চ-রেজোলিউশন সারফেস স্ক্যানিং ব্যবহার করে ক্রাস্ট-এনকেসড প্রক্রিয়াার টুকরোগুলির ভিতরের চিত্র নেন। একইভাবে বাইরের আবরণকে আবৃত করে থাকা সবচেয়ে অস্পষ্ট শিলালিপিগুলিও পাঠ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ফলে জানা যায় যে এটিতে ৩৭টি জালযুক্ত ব্রোঞ্জ গিয়ার ছিল যেগুলি এটিকে রাশিচক্রের মাধ্যমে চাঁদ এবং সূর্যের গতিবিধি অনুসরণ করতে, গ্রহনের পূর্বাভাস দিতে এবং চাঁদের অনিয়মিত কক্ষপথের মডেল করতে সক্ষম করেছে, যেখানে চাঁদের বেগ তার অপভূর তুলনায় পেরিজিতে বেশি। এই গতি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে রোডসের জ্যোতির্বিদ হিপারকাস দ্বারা অধ্যয়ন করা হয়েছিল এবং অনুমান করা হয় যে যন্ত্রের নির্মাণে তার পরামর্শ নেয়া হতে পারে।[16] অনুমান করা হচ্ছে যে, যন্ত্রকৌশলটির একটি অংশ অনুপস্থিত এবং এটি পাঁচটি ধ্রুপদী গ্রহের অবস্থান গণনা করতে পারতো।
যন্ত্রটি গ্রিক বিজ্ঞানীদের দ্বারা নকশা ও নির্মাণ করা হয়েছে বলে মনে করা হয় এবং এটি বিভিন্নভাবে ৮৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে;[17] অথবা ১৫০ থেকে ১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে[4] বা ২০৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের[18][19] মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যাই হোক না কেন, এটি অবশ্যই জাহাজডুবির আগে তৈরি করা হয়েছে, যেটি প্রায় ৭০-৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের বলে একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায়।[20][21] ২০২২ সালে গবেষকরা প্রস্তাব করেছিলেন যে মেশিনের প্রাথমিক ক্রমাঙ্কন তারিখ (এর নির্মাণের প্রকৃত তারিখ নয়) হতে পারে ২৩ ডিসেম্বর ১৭৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা আরও সম্ভাব্য ক্রমাঙ্কন তারিখ হিসাবে ২০৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ প্রস্তাব করেন।[22][23] চতুর্দশ শতাব্দীতে ওয়ালিংফোর্ডের রিচার্ড এবং জিওভান্নি দে' ডোন্ডির জ্যোতির্বিজ্ঞানের ঘড়ির আগ পর্যন্ত একই ধরনের জটিল যন্ত্র আর আবির্ভূত হয়নি।[24]
অ্যান্টিকাইথেরা যন্ত্রকৌশলটির সমস্ত পরিচিত খণ্ড এখন জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, এথেন্সে রাখা আছে এবং এটি কিরকম দেখতে ও কীভাবে কাহ করতো[25] তা প্রদর্শন করার জন্য বেশকয়েকটি শৈল্পিক পুনর্গঠন এবং প্রতিলিপি সহ রাখা হয়েছে।[26][27]