অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস
অস্ট্রেলিয়ান ইতিহাস / From Wikipedia, the free encyclopedia
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস হল অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ভূমি ও মানুষের গল্প। ৫০,০০০ থেকে ৬৫,০০০ বছর আগে অস্ট্রেলীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠী সামুদ্রিক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সমুদ্রপথে অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে আসে। ধীরে ধীরে তারা উত্তরে রেইনফরেস্ট থেকে শুরু করে মধ্য অষ্ট্রেলিয়ার মরুভূমি পর্যন্ত এই মহাদেশের সমস্ত অংশে প্রবেশ করে। এছাড়াও তারা তাসমানিয়া এবং বাস প্রণালীর উপ-অ্যান্টার্কটিক দ্বীপপুঞ্জ গুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান শিল্প, সঙ্গীত এবং আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যগুলি মানব ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে টিকে থাকা ঐতিহ্যগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রথম টোরেস স্ট্রেইট দ্বীপবাসী জনগোষ্ঠী আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের থেকে জাতিগতভাবে এবং সাংস্কৃতিকভাবে আলাদা ছিল। প্রায় ২,৫০০ বছর আগে এখনকার পাপুয়া নিউ গিনি থেকে তারা এখানে এসে টরেস প্রণালী এবং কেপ ইয়র্ক উপদ্বীপের দ্বীপগুলিতে বসতি স্থাপন করেছিল।
১৬০৬ সালে প্রথম ইউরোপীয় হিসাবে, ডাচ নাবিক জন্সজুন অস্ট্রেলিয়ায় অবতরণ করেন। সেই বছরের শেষের দিকে, স্প্যানিশ অভিযাত্রী লুইস ভাজ দে টোরেস টোরেস প্রণালী এবং তার আশেপাশের দ্বীপে পৌছান।[1] ২৯ জন অন্যান্য ডাচ নেভিগেটর ১৭ শতকে পশ্চিম ও দক্ষিণ উপকূল অন্বেষণ করেন এবং মহাদেশের নাম দেন ‘নিউ হল্যান্ড’। অন্যান্য ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা ১৭৭০ সাল পর্যন্ত অনুসরণ করেন, লেফটেন্যান্ট জেমস কুক গ্রেট ব্রিটেনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলকে পছন্দ করেছিলেন। তিনি বোটানি উপসাগর (এখন সিডনিতে অবিস্থিত) উপনিবেশ স্থাপনের অভিপ্রায় নিয়ে লন্ডনে ফিরে যান।
১৭৮৮ সালের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ জাহাজের প্রথম নৌবহর অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে প্রথম উপনিবেশ পেনাল কলোনি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে বোটানি উপসাগরে পৌছায়। পরবর্তী শতাব্দীতে, ব্রিটিশরা মহাদেশের অন্যান্য স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করে। ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা এর আরো গভীরে প্রবেশ করে। রোগ বালাই এবং উপনিবেশবাদীদের সাথে সংঘর্ষের কারণে আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের সংখ্যা হ্রাস পায়।
স্বর্ণ সন্ধান এবং কৃষি শিল্প অষ্ট্রেলিয়ায় সমৃদ্ধি আনে। ১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে ছয়টি ব্রিটিশ উপনিবেশ জুড়ে স্বায়ত্তশাসিত সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার পথে এগোতে থাকে। উপনিবেশগুলি ১৯০১ সালে একটি ফেডারেশনে একত্রিত হওয়ার জন্য গণভোটের মাধ্যমে ভোট দেয় এবং আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার জন্ম হয়। অস্ট্রেলিয়া দুই বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইম্পেরিয়াল জাপানের হুমকির মুখেও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী মিত্র ছিল। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এশিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অভিবাসন কর্মসূচির আওতায় অষ্ট্রেলিয়া প্রতিটি মহাদেশ থেকে ৬.৫ মিলিয়নেরও বেশি অভিবাসী গ্রহণ করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের পর থেকে শুরু করে ২০২০ সালের মধ্যে ২৫.৫ মিলিয়নেরও বেশি বেড়েছে। যাদের ৩০ শতাংশের জন্ম অষ্ট্রেলিয়ার বাইরে।