অস্ট্রেলিয়া
ওশেনিয়া মহাদেশে অবস্থিত একটি দেশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অস্ট্রেলিয়া বা কমনওয়েলথ অফ অস্ট্রেলিয়া হলো ওশেনিয়া মহাদেশের একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। ওশেনিয়া মহাদেশের মূল ভূখণ্ড ও তাসমানিয়াসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গঠিত হয়েছে।[12] দেশটির মোট আয়তন ৭৬,১৭,৯৩০ বর্গ কি.মি. ( ২৯,৪৪,৩০০ ব.মা)।[13] আয়তনের দিক থেকে এটি ওশেনিয়ার সর্ব বৃহৎ রাষ্ট্র ও পৃথিবীর ৬ষ্ঠ বৃহত্তম রাষ্ট্র। দেশটির উত্তরে তিমুর সাগর, আরাফুরা সাগর, ও টরেস প্রণালী; পূর্বে প্রবাল সাগর ও তাসমান সাগর; দক্ষিণে ব্যাস প্রণালী এবং পশ্চিমে ভারত মহাসাগর। বৃহৎ আকৃতির কারণে অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু বেশ বিচিত্র এবং এর মধ্যবর্তী অঞ্চলে রয়েছে বৃহৎ মরুভূমি, উত্তর-পূর্বে বনাঞ্চল ও দক্ষিন-পশ্চিমে পর্বতমালা রয়েছে।
কমনওয়েলথ অব অস্ট্রেলিয়া | |
---|---|
কমনওয়েলথ অব অস্ট্রেলিয়া (অ্যান্টার্কটিকায় অস্ট্রেলিয়ার দাবীকৃত অঞ্চলসহ) | |
রাজধানী | ক্যানবেরা ৩৫°১৮′২৯″ দক্ষিণ ১৪৯°০৭′২৮″ পূর্ব |
বৃহত্তম নগরী | সিডনি |
সরকারি ভাষা | নেই |
জাতীয় ভাষা | ইংরেজি[টীকা 2] |
ধর্ম (২০১৬)[2] | |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | অস্ট্রেলিয়ান অথবা অসি [3][4] |
সরকার | যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র |
• রাজা | তৃতীয় চার্লস |
• গভর্নর জেনারেল | ডেভিড হারলি |
অ্যান্থনি আলবানিজ | |
আইন-সভা | সংসদ |
• উচ্চকক্ষ | সিনেট |
• নিম্নকক্ষ | হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস |
স্বাধীনতা যুক্তরাজ্য থেকে | |
• ফেডারেশন, সংবিধান | ১ জানুয়ারি ১৯০১ |
• ওয়েস্টমিনস্টারের সংবিধি | ৯ অক্টোবর ১৯৪২ (৩ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ থেকে কার্যকর) |
• অস্ট্রেলিয়া আইন | ৩ মার্চ ১৯৮৬ |
আয়তন | |
• মোট | ৭৬,৯২,০২৪ কিমি২ (২৯,৬৯,৯০৭ মা২) (৬ষ্ঠ) |
• পানি (%) | ১.৭৯ (২০১৫ অনুযায়ী)[5] |
জনসংখ্যা | |
• ২০২২ আনুমানিক | ২,৫৯,২৫,৬০০[6] (৫৩তম) |
• ২০১৬ আদমশুমারি | ২,৩৪,০১,৮৯২[7] |
• ঘনত্ব | ৩.৪/কিমি২ (৮.৮/বর্গমাইল) (১৯২তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০২১ আনুমানিক |
• মোট | $১,৪২,৭০০ কোটি[8] (১৯তম) |
• মাথাপিছু | $৫৫,৪৯২[8] (22nd) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০২১ আনুমানিক |
• মোট | $১,৬১,১০০ কোটি[8] (১৩তম) |
• মাথাপিছু | $৬২,৬১৯[8] (৯ম) |
জিনি (২০১৮) | ৩২.৫[9] মাধ্যম · ১৬তম |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯) | ০.৯৪৪[10] অতি উচ্চ · ৮ম |
মুদ্রা | অস্ট্রেলিয়ান ডলার ($) (AUD) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+৮; +৯.৫; +১০ (বিভিন্ন[টীকা 4]) |
ইউটিসি+৮; +৯.৫; +১০; +১০.৫; +১১ (বিভিন্ন[টীকা 4]) | |
তারিখ বিন্যাস | dd/mm/yyyy yyyy-mm-dd[11] |
গাড়ী চালনার দিক | বাম |
কলিং কোড | +৬১ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AU |
ইন্টারনেট টিএলডি | .au |
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বসতিস্থাপক ছিল এখানকার আদিবাসী জাতিগুলি। তারা প্রায় ৬৫,০০০ বছর আগে এই মহাদেশে বসতি স্থাপন করেছিল।[14] ১৭শ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত বহির্বিশ্বের কাছে দ্বীপটি অজানা ছিল। ১৭৮৮ সালের ২৬ জানুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট জ্যাকসনে প্রথম স্থায়ী উপনিবেশ নিউ সাউথ ওয়েল্স সৃষ্টি করা হয়; এটি ছিল ব্রিটিশ কয়েদিদের উপনিবেশ। এটিই পরবর্তীকালে বড় হয়ে সিডনী শহরে পরিণত হয়। প্রথম উপনিবেশ স্থাপনের গুরুত্ব হিসেবে ২৬ জানুয়ারিকে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পরবর্তী বেশ কয়েক যুগ ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ইউরোপীয় জনসংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৮৫০-এর দশকে গোল্ড রাশের আগেই ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীরা মহাদেশের অধিকাংশ স্থান আবিষ্কার করে ফেলেছিল এবং গ্রেট ব্রিটেন আরও পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। ১৯শ শতক জুড়ে অস্ট্রেলিয়া এক গুচ্ছ ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে কাজ করত। ১৯০১ সালের ১লা জানুয়ারি এই ছয়টি উপনিবেশ একত্রিত করে কমনওয়েলথ অব অস্ট্রেলিয়া গঠন করা হয়েছিল। সেই থেকেই অস্ট্রেলিয়ায় অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্র এবং বাজার অর্থনীতি অব্যাহত রয়েছে।
রাজনৈতিক দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। এটি ছয়টি রাজ্য এবং দশটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ, যার অধিকাংশই পূর্ব উপকূলবর্তী শহরাঞ্চলে বসবাস করেন।[15] মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০% অভিবাসী;[16] এই অনুপাত বৃহৎ পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।[17] দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ক্যানবেরা এবং সিডনী হলো দেশটির দুই বৃহত্তম শহর। অন্যান্য বৃহৎ শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, পার্থ, অ্যাডিলেড।
অস্ট্রেলিয়া একটি উন্নত দেশ এবং উচ্চ আয়ের অর্থনীতি। এটি পৃথিবীর ১২তম বৃহত্তম অর্থনীতি, মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে দশম এবং মানব উন্নয়ন সূচকের মান অনুযায়ী অষ্টম।[17] প্রাকৃতিক সম্পদ এবং উন্নত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দেশটির অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়ার আয়ের প্রধান খাতসমূহ হলো পরিষেবা, খনিজ রপ্তানি, ব্যাংকিং, উত্পাদন, কৃষি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও অন্যান্য।[18][19][20]
অস্ট্রেলিয়া একটি আঞ্চলিক শক্তি, এবং সামরিক ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বের দ্বাদশ অবস্থানে রয়েছে।[21]