অবলোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞান
From Wikipedia, the free encyclopedia
অবলোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞান (ইংরেজি: Infrared astronomy) হল জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা। অবলোহিত (আইআর) বিকিরণে দৃশ্যমান মহাজাগতিক বস্তুগুলি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ এই শাখার উপজীব্য। অবলোহিত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ০.৭৫ থেকে ৩০০ মাইক্রোমিটারের মধ্যে ওঠানামা করে। অবলোহিত বিকিরণ দৃশ্য বিকিরণের মধ্যে পড়ে, যা ওঠানামা করে ৩৮০ থেকে ৭৫০ ন্যানোমিটার ও সাবমিলিমিটার তরঙ্গের মধ্যে।
১৮০০ সালে উইলিয়াম হার্শেল অবলোহিত আলো আবিষ্কার করার পর ১৮৩০-এর দশকে অবলোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূত্রপাত ঘটে। প্রথম দিকে এই ক্ষেত্রে অগ্রগতি সীমাবদ্ধ ছিল। ২০শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সূর্য ও চাঁদ ছাড়া অবলোহিত আলোয় গঠিত অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুগুলিকে নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি আবিষ্কারের পরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে, দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসরের বাইরে থেকেও তথ্য প্রাপ্তিসাধ্য। সেই সময়ই আধুনিক অবলোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূচনা ঘটে।
অবলোহিত ও আলোকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রায়শই একই দূরবিনের মাধ্যমে অনুশীলন করা হয়। কারণ, দৃশ্যমান ও অবলোহিত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসীমার মধ্যে সচরাচর একই দর্পণ ও লেন্স কার্যকরী হয়। দুই ক্ষেত্রেই সলিড স্টেট ডিটেকটর ব্যবহৃত হয়। যদিও ক্ষেত্র অনুযায়ী সলিড স্টেট ডিটেকটরের ধরন আলাদা হয়। অনেক তরঙ্গদৈর্ঘ্যে অবলোহিত আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প কর্তৃক বিশোষিত হয়। তাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যথাসম্ভব অধিক উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের উচ্চতর স্থানে অধিকাংশ অবলোহিত দূরবিনগুলি স্থাপিত। মহাকাশেও কয়েকটি অবলোহিত মানমন্দির রয়েছে। যেমন, স্পিৎজার স্পেস টেলিস্কোপ ও হার্শেল স্পেস অবজার্ভেটরি।